শীতের সব্জি মিলছে গরমেও। এর ফলে অসময়ে চাষিরা যেমন দু’পয়সা লাভের মুখ দেখছেন, তেমনই ক্রেতারাও সারা বছরই টাটকা সব্জি পাচ্ছেন। ইজরায়েলে ব্যবহৃত পদ্ধতি অনুযায়ী, লোহার পাইপের খুঁটির উপরে ও চারদিকে ২০০ মাইক্রনের পলিথিন দিয়ে ‘পলি-হাউস’ গড়ে চাষ, এই প্রকল্পের অন্যতম বিশেষত্ব।
নদিয়ার উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঘোড়াই বলেন, “৫০০ মিটার পলি হাউস তৈরিতে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রকল্পের অর্ধেক টাকা জাতীয় উদ্যান পালন মিশন থেকে কৃষকেরা ভর্তুকি হিসেবে পান।’’
নদিয়া জেলায় এই মুহূর্তে ৬০টি পলি-হাউসের মাধ্যমে অসময়ের সব্জি চাষ হচ্ছে। ৮০ শতাংশ পলি-হাউসই রয়েছে নাকাশিপাড়ায়।
কৃষিবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পলি-হাউস পদ্ধতিতে চারদিকে প্লাস্টিকের ছাউনি থাকায় সূর্যের তাপ সরাসরি ক্ষেতে ঢুকতে পারে না। ফলে, শীতের সব্জি গরমেও চাষ করতে অসুবিধা হয় না। এই পদ্ধতিতে জলের অপচয় ঠেকানো হয়। সার দেওয়া হয় নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে। প্লাস্টিকের চাদর থাকায় দুর্যোগের প্রকোপও অনেকটা ঠেকানো সম্ভব হয়। সব মিলিয়ে এই পদ্ধতিতে ফসলের অন্তত ২০ শতাংশ ফলন বেশি হয় বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
নাকাশিপাড়ার কৃষিজীবী আনন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বর্ষার সময়ে ধনে পাতা, পালংয়ের দাম চার-পাচ গুন বেশি হয়। তেমনি পলি হাউসে ক্যাপসিক্যাম চাষ করলে দু-তিনগুন দাম পাওয়া যায়।’’
ফুল চাষেও ভাল ফল দিচ্ছে ‘পলি হাউস’ পদ্ধতি। এমনটাই দাবি নাকশিপাড়ার প্রবীর বিশ্বাসের।
মুর্শিদাবাদের উদ্যানপালন বিভাগের জেলা আধিকারিক গৌতম রায় বলছেন, “পলি হাউসে চাষ বাড়ানোর জন্য আমরা প্রচার চালাচ্ছি।” দৌলতবাদের চাষি আব্দুল হাই বলছেন, “পলি হাউসের মাধ্যমে চাষ করার চেষ্টা করছি।’’