Advertisement
E-Paper

গির্জায় যাওয়ার বিরুদ্ধে পোস্টার   

দেওয়ালে লাগানো সেই পোস্টারগুলিতে ২৫ ডিসেম্বর গির্জায় না গিয়ে হিন্দুদের ‘তুলসী পূজন দীবস’ পালন করার নির্দেশ দিয়েছে বজরং দল।

সুস্মিত হালদার 

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:৫৪
এমন পোস্টার সাঁটাকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র।

এমন পোস্টার সাঁটাকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র।

বড় দিনের উৎসব ঘিরে বজরং দলের ‘ফতোয়া-পোস্টার’ ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

কৃষ্ণনগর শহরের বিভিন্ন জায়গায় দেওয়ালে লাগানো সেই পোস্টারগুলিতে ২৫ ডিসেম্বর গির্জায় না গিয়ে হিন্দুদের ‘তুলসী পূজন দীবস’ পালন করার নির্দেশ দিয়েছে বজরং দল। বিধানসভা ভোটের আগে এমন পোস্টার ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। কারণ বিজেপির সঙ্গে বজরং দলের যোগ সর্বজনবিদিত। যদিও বিজেপি দাবি করেছে, বজরং দলের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। গোটাটাই তৃণমূলের চক্রান্ত। আর এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।

নদিয়ার কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, তাহেরপুর-সহ একাধিক শহরে বহু খ্রিস্টান মানুষের বসবাস। বড়দিন এখানে অন্যতম বড় উৎসব, যেখানে সব ধর্মের মানুষ উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে যোগ দেন। গির্জাগুলিতে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ভিড় জমে। একাধিক চার্চও রয়েছে শহরগুলিতে। গির্জা চত্বর সম্প্রীতির মিলন ক্ষেত্রে পরিণত হয়।

সাম্প্রতিক অতীতে কখনও এই ধরনের পোস্টার বা ফতোয়ার কথা এখানকার মানুষ মনে করতে পারছেন না। বিশেষ করে কৃষ্ণনগরের মতো প্রাচীন, সংস্কৃতিশীল, ঐতিহ্যশালী শহরে এমন খাপ পঞ্চায়েত-সুলভ ফতোয়ায় অনেকেই চমকে উঠেছেন। উদ্বিগ্ন হয়েছেন উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের এমন সংকীর্ণমনস্ক নির্লজ্জ আস্ফালনে।

কৃষ্ণনাগরিকদের অনেকেই জানিয়েছেন, এত দিন ভিন রাজ্যের কিছু জায়গায় এমন স্বঘোষিত নীতি পুলিশদের দাপট চোখে পড়ত। তাঁরা যেমন ‘লাভ জেহাদ’ নিয়ে হুঙ্কার দিতেন তেমনই ভ্যালেন্টাইনস-ডে পালনের বিরুদ্ধে নিজেদের উগ্র মত সকলের উপর চাপানোর চেষ্টা করতেন। এ বার নদিয়ায় সেই ধাঁচের সঙ্কীর্ণবাদের প্রবেশে তাঁরা অশনিসঙ্কেত দেখছেন।

আবার অনেকেই মনে করছেন, এর পিছনে ধর্মীয় কারণের থেকে বেশি আছে রাজনৈতিক কারণ। সামনেই বিধানসভা ভোট। সেটা এ বার ধর্মীয় মেরুকরণের জায়গা থেকে হবে, সেটাও প্রায় নিশ্চিত। তাই ভোটের আগে ধর্মীয় আবেগকে উস্কে দিয়ে রাজনৈতির ফায়দা তোলার চেষ্টা হচ্ছে।

পোস্টার লাগানোর কথা স্বীকার করে নিয়ে বজরং দলের কৃষ্ণনগর শহর কমিটির প্রমুখ অজয় ঘোষ বলছেন, ‘‘আমরা অন্য ধর্মকে সম্মান করি। কোনও ধর্মকে অবমাননা করার কথা পোস্টারে বলা হয়নি। আমরা শুধু ওই দিন হিন্দুদের গির্জায় না-গিয়ে তুলসী পূজন উৎসব পালন করতে বলেছি। নিজের ধর্মের মানুষকে আমরা এই আবেদন করতেই পারি।’’

বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদারের দাবি, “বজরং দলের সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা আসলে তৃণমূলেরই চক্রান্ত। কারণ, তারাই মানুষের মধ্যে বিভাজনের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে।” জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাশিস রায় বলছেন, “বিজেপির নেতারা এসে এই ধরনের বিষ ছড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছেন। রাজ্য জুড়ে বিদ্বেষ-বিভাজনের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছেন। তবে আমাদের দল এ ধরনের চেষ্টা প্রতিহত করবে।”

আর সিপিএমের নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক সুমিত দে-র কথায়, “এ সব ফ্যাসিস্ট-ধর্মী বিজেপির চ্যালাচামুণ্ডাদের কাজ। প্রমাণ হচ্ছে আগামীতে কী ভয়ঙ্কর দিন আসতে চলেছে।”

Christmas Cake
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy