বিক্ষোভ মুর্শিদাবাদের আধোয়া গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।
জমির বদলে বিনামূল্যে বিদ্যুত পরিষেবা দেওয়ার কথা দিয়েছিল সরকার। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তা পেয়েও এসেছেন গ্রামবাসীরা। এখন সরকারি সিদ্ধান্ত বদলেছে! নতুন ট্রান্সফর্মার বসছে গ্রামে। যার অর্থ, আর নাকি বিনামূল্যে মিলবে না বিদ্যুৎ! অন্তত তেমনটাই অভিমত গ্রামবাসীদের। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভে ফেটে পড়ল মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন গোটা আধোয়া গ্রাম।
স্থানীয় সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহে গ্রামে রাজ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিগমের নতুন ট্রান্সফর্মার বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। তা নিয়ে আপত্তি তুলে সোমবার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ এবং ২ নম্বর গেট আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মীদেরও ভিতরে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দাবি, কর্মী-ইঞ্জিনিয়রেরা ভিতরে ঢুকতে না পারায় বিদ্যুৎ পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে। বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্তারা।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের হাইটেনশন লাইন বসানোর সময় গ্রামের অনেক জমি অধিগ্রহণ করেছিল সরকার। গ্রামের উপর দিয়ে একাধিক উচ্চ তড়িৎ প্রবাহসম্পন্ন তার গিয়েছে। সেই সময় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গ্রামবাসীদের মৌখিক চুক্তি হয় যে, তাঁদের আজীবন বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া হবে। স্বচ্ছ পানীয় জল এবং এলাকায় শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। অভিযোগ, এখন সেই চুক্তি ভঙ্গ করে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করতে চাইছে সরকার। সেই কারণেই গ্রামে নতুন ট্রান্সফর্মার বসানো হচ্ছে। বিক্ষোভকারী রেহেনা খাতুন বলেন, ‘‘ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হওয়ায় গ্রামের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আজীবন বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, স্কুল, পানীয় জল দেওয়া হবে— এই প্রতিশ্রুতিতেই জমি দিয়েছিলেন স্থানীয় মানুষ। আমরা এত ত্যাগ স্বীকার করেছি, এখন সরকার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে, আমরা মানব না।’’
অন্য দিকে, গ্রামবাসীদের দাবি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছে ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। কর্তৃপক্ষের তরফে রাজদীপ সিংহ বলেন, ‘‘বিষয়টি আলোচনা স্তরে রয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy