মিছিলে যোগ। নিজস্ব চিত্র
মাঠে ধান গোছানোর সময়ে হঠাৎ হালকা বৃষ্টি আসে। বৃষ্টির ছাঁট থেকে বাঁচতে পাশের একটি আমগাছের নীচে আশ্রয় নিয়েছিলেন পাঁচ কৃষিমজুর। হঠাৎ বাজ পড়ে। বজ্রাঘাতে তাঁদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়। বাকিরাও আহত হন। পরে দু’টি পা-ই বাদ যায় মানিক দুর্লভের।
পা হারিয়ে আজ তিনি প্রতিবন্ধী। তাই এখন তাঁর সব সময়ের সঙ্গী ট্রাই সাইকেল। কিন্ত এই প্রতিবন্ধকতা তাঁকে নাগরিক দায়িত্ব পালন করা থেকে সরিয়ে রাখতে পারেনি। কাশ্মীরে জাওয়ানদের উপর জঙ্গি আক্রমণের প্রতিবাদ মিছিলে তাই ট্রাই সাইকেল নিয়েই যোগ দিলেন প্রতিবন্ধী মানুষটি।
এ দিন মিছিলের সামনেই ছিলেন চাকদহের পরালির বাসিন্দা মানিক। মিছিলে যেতে যেতে তিনি বলেন, “যে সব জওয়ানেরা আমাদের দেশকে রক্ষা করার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের আমরা কখনও ভুলব না। যারা ওই সব বীরের উপরে আক্রমণ করেছে, তাদের ক্ষমা করা যায় না।”
রবিবার রাতে চাকদহের চুয়াডাঙা এলাকার স্থানীয় মানুষের উদ্যোগে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই মিছিলে মানিকের মতো আরও বহু প্রতিবন্ধী মানুষ ট্রাই সাইকেল নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন।
ওঁদের কারও ট্রাই সাইকেলে লেখা ছিল— ‘বদলা চাই’। আবার কারও ট্রাই সাইকেলে লেখা— ‘বীর সৈনিকদের রক্ত, হবে নাকো ব্যর্থ।’
চাকদহ-বনগাঁ রাজ্য সড়ক দিয়ে এই মিছিল গিয়েছে। মিছিলে প্রতিবন্ধীরা ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশ নেন। পুলিশকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দা পার্থ রায় বলেন, “এলাকার মানুষের উদ্যোগে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। বিবেকের তাড়নায় প্রতিবন্ধীরাও তাতে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের যোগদান যে এই মিছিলের গুরুত্ব বৃদ্ধি করেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।”
এ দিন, চাকদহের চুয়াডাঙায় পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। শিমুরালি উপেন্দ্র বিদ্যাভবন বিদ্যালয় থেকে প্রাক্তন সৈনিক সংগ্রাম গুহঠাকুরতাকে সঙ্গে নিয়ে মিছিল করে এলাকার মানুষ। চাকদহ সেন্ট্রাল ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে মোমবাতি জ্বালিয়ে বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। কামালপুরে একটি প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রাক্তন সৈনিকেরা এই মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। রানাঘাট কোটপাড়া ভাতৃ সঙ্ঘের পক্ষ থেকেও মোমবাতি মিছিল করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy