Advertisement
E-Paper

ধর্ষণের নালিশ পেয়েও চুপ থানা, বলছেন বিধবা

পুলিশের কাছে তিনি ধর্ষণের নালিশ জানাতে গিয়েছিলেন। পুলিশ তা নেয়নি বলে অভিযোগ। ফলে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ডাক্তারি পরীক্ষাও হয়নি। উল্টে ধর্ষকের লোকজনই তাঁকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৭ ০২:১৬

পুলিশের কাছে তিনি ধর্ষণের নালিশ জানাতে গিয়েছিলেন। পুলিশ তা নেয়নি বলে অভিযোগ। ফলে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ডাক্তারি পরীক্ষাও হয়নি। উল্টে ধর্ষকের লোকজনই তাঁকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার নদিয়া জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত ভাবে এই অভিযোগ জানান তেহট্টের শোলুয়া গ্রামের ৫৭ বছর বয়সী এক বিধবা। যদিও রাতে পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘এ রকম কোনও অভিযোগ হাতে পাইনি। পেলে খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

বছর দেড়েক আগে ওই মহিলার স্বামী মারা গিয়েছেন। একমাত্র ছেলে মারা গিয়েছে প্রায় ন’বছর আগে। পাকাবাড়ি হলেও তাঁদের ঘরে দরজা-জানলা নেই। বিধবার অভিযোগ, গত ১০ মার্চ রাত আড়াইটে নাগাদ গালে এক জনের হাত ঠেকতেই জেগে উঠে তিনি দেখেন, পড়শি কাশেম শেখ সামনে দাঁড়িয়ে। বিধবার অভিযোগ, ‘‘আমি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতেই গলায় রামদা ধরে কাশেম আমাকে ধর্ষণ করে।’’

ভোরের আলো ফুটতেই পড়শি, স্থানীয় পাথরঘাটা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অশোককুমার বিশ্বাসের কাছে গিয়ে বিধবা সব জানান। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘উপপ্রধানের পরামর্শে তেহট্ট থানায় যাই। পুলিশ ঘটনাটা লিখেও নেয়। সন্ধ্যায় গ্রামেও আসে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’ তিনি জানান, পরের দিন থানায় গেলে ফের পুলিশ ‘দেখছি’ বলে আশ্বাস দেয়।

মহিলার অভিযোগ, ‘‘এর পরেই বুধবার কাশেমের আত্মীয়েরা তাঁকে জোর তাঁদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সাদা কাগজে টিপ সই করিয়ে নেয়। সে দিনই দুই ভাইয়ের সঙ্গে ফের থানায় গিয়ে লিখিত ভাবে পুরো ঘটনা জানাই। কিন্তু পুলিশ অভিযোগপত্রের ‘রিসিভ কপি’ দেয়নি।’’

তেহট্ট থানা অবশ্য এখন দাবি করছে, ওই মহিলা আদৌ অভিযোগ জানাতে আসেননি। কেউ অভিযোগ জানাতে এলে তৎক্ষণাৎ তা নেওয়া হয়। তা হলে কেন পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠছে? বিধবার দাবি, কাশেমের এক ছেলে বিএসএফ এবং আর এক ছেলে সেনায় চাকরি করেন। সেই কারণেই পুলিশ তাঁর অভিযোগকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।

বিধবাকে যিনি থানায় অভিযোগ করতে পাঠিয়েছিলেন, সেই উপপ্রধান অবশ্য বলছেন, বিষয়টি মিটমাট হয়ে গিয়েছে জানিয়ে তাঁর কাছে একটি কাগজ দেওয়া হয়েছে। তাতে বিধবার টিপসইও রয়েছে। তিনি বলেন, “দুই পরিবার মিটিয়ে নিয়েছে বলে শুনেছি। তার পরে কী হয়েছে, জানি না।”

স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকায় কাশেম শেখের ভাবমূর্তি বিশেষ ভাল নয়। গ্রামের একাংশের দাবি, তাঁদের পরিবারের বিরুদ্ধে আগেও কুকীর্তির অভিযোগ উঠেছে। বহু চেষ্টা করেও এ দিন কাশেমের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর দাদা সাজুদ্দিন শেখ দাবি করেন, ‘‘পুরনো পারিবারিক শত্রুতার জেরে ওই মহিলা মিথ্যা অভিযোগ করছেন। কাশেম কিছু করেনি।’’ সাদা কাগজে জোর করে টিপছাপ দেওয়ার অভিযোগও কি মিথ্যে? সাজুদ্দিনের দাবি, ‘‘উনি নিজেই আমাদের বাড়িতে এসে সব মিটিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। উনি নিজেই টিপছাপ দিয়েছেন। ওঁকে কেউ জোর করেনি।’’

Police station
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy