Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পুলিশ কেমন পুলিশ, রইল প্রশ্ন

আগের দিন আচমকা পুলিশের সক্রিয়তা দেখে একটু হলেও ভরসা পেয়েছিল ডোমকল। কিন্তু ভুল ভাঙল রবিবার সকালেই। ডোমকল পুরভোটে পুলিশের ভূমিকা জানান দিল, পুলিশ আছে সেই পুলিশেই!

অবসর: তাস খেলেই কাটল সময়। ডোমকল প্রশাসনিক ভবনে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

অবসর: তাস খেলেই কাটল সময়। ডোমকল প্রশাসনিক ভবনে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

সুজাউদ্দিন ও শুভাশিস সৈয়দ
ডোমকল শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৭ ০২:২৪
Share: Save:

আগের দিন আচমকা পুলিশের সক্রিয়তা দেখে একটু হলেও ভরসা পেয়েছিল ডোমকল।

কিন্তু ভুল ভাঙল রবিবার সকালেই। ডোমকল পুরভোটে পুলিশের ভূমিকা জানান দিল, পুলিশ আছে সেই পুলিশেই! সম্প্রতি নদিয়া ও হাওড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশকে কড়া হওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সে পরামর্শ পুলিশ যে মান্য করছে না তা স্পষ্ট হয়ে গেল এ দিন।

ডোমকলের বিরোধী ও ভোটারদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, চোখের সামনে গণ্ডগোল, বুথ দখল, ছাপ্পা ভোট দেখেও চুপ থাকল পুলিশ। বিপদের সময় বহু বার ডেকেও পুলিশের সাড়া মেলেনি। অবাক ডোমকলের প্রশ্ন, এ পুলিশ কেমন পুলিশ?

ডোমকলের ২১ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টি ওয়ার্ডেই গণ্ডগোল হয়েছে। অভিযোগ, বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরতে দেখা গিয়েছে দুষ্কৃতীদের। বুথ থেকে বিরোধী এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। হুমকি দেওয়া হয়েছে ভোটারদের। অথচ পুলিশকে বলতে গেলে শুনতে হয়েছে— ‘ভোটে তো এমন টুকটাক ঘটনা ঘটেই থাকে। আপনি কেন ঝামেলায় জড়াচ্ছেন?’

যা শুনে বিরোধীদের অভিযোগ, মসৃণ ভাবে তৃণমূলের হয়ে ভোট করানোই ছিল পুলিশের মুখ্য উদ্দেশ্য। সেই কাজটা তারা সফল ভাবে করেছে। অথচ শনিবার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেছিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন তার পরেও যদি ডোমকলে অশান্তি হয় তাহলে কিন্তু মুশকিল হয়ে যাবে। এই ভোটটা আমাদের কাছেও বড় পরীক্ষা।’’

যুদ্ধগান: বুথে তখন বোমা-গুলি, মারধর। ডোমকল প্রশাসনিক ভবনে হেডফোন ভাগাভাগি করে গান শুনছেন রিজার্ভ ফোর্সের দুই কনস্টেবল। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

সেই পরীক্ষায় কি তাহলে পুলিশ পাশ করতে পারল? মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বরং জেলা পুলিশের এক কর্তা পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন, ডোমকলের প্রায় সব ভোটেই খুনখারাপি হয়েছে। এই পুরভোটে কিন্তু প্রাণহানি হয়নি। এটা কিন্তু পুলিশের বড় সাফল্য।

এ দিন ডোমকলে পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল। টহলও ছিল চোখে পড়ার মতো। বিরোধীদের অভিযোগ, আসলে এ সবই ছিল লোকদেখানো। আসলে তৃণমূলের নীরব সন্ত্রাসে প্রথম থেকেই মদত দিয়ে গিয়েছে পুলিশ। বেশ কয়েকটি বুথে পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে তৃণমূলের লোকজনকে ছাপ্পা ভোট দিতে সাহায্য করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জমানা বদলায়, উর্দি বদলায় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police Question Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE