Advertisement
E-Paper

সাঁকো পারাপার যেন ব্যালান্সের খেলা

আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হন রহমতপুর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান ময়না মণ্ডল। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার কথা উঠে এল আলোচনায়। সঞ্চালনায় কল্লোল প্রামাণিক। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।পঞ্চায়েতের উপানন্দ কলোনিতে প্রায় একশো পরিবার বাস করে। গত সাতের দশক থেকে ওই গ্রামে যাওয়ার কোনও রাস্তা নেই। বাঁশের উপর দিয়ে কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের।

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৫৩
বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে যেতে হয় উপানন্দ কলোনিতে।

বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে যেতে হয় উপানন্দ কলোনিতে।

বারবাকপুর থেকে থানারপাড়ার ইটের রাস্তায় প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন। অথচ দীর্ঘদিন ওই রাস্তা খারাপ হয়ে রয়েছে। রাস্তা পাকা করলে এলাকার বহু মানুষ উপকৃত হবে।

সাইফুল ইসলাম মণ্ডল, বারবাকপুর

সম্প্রতি বিধায়কের চেষ্টায় ওই রাস্তার স্কিম বানিয়ে জেলা প্রশাসনকে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে রাস্তার কাজ শুরু হবে।

পঞ্চায়েতের উপানন্দ কলোনিতে প্রায় একশো পরিবার বাস করে। গত সাতের দশক থেকে ওই গ্রামে যাওয়ার কোনও রাস্তা নেই। বাঁশের উপর দিয়ে কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের।

সুভাষ প্রামানিক, রহমতপুর

তৎকালীন সিপিএম সরকারের গড়িমসিতে ওখানে কোনও কাজ হয়নি। আমরা ক্ষমতায় আসার পর ওই গ্রামে বিদ্যুৎ গিয়েছে। গ্রামে যাওয়ার রাস্তা ও একটি কালভার্ট তৈরির জন্য প্রায় পনেরো লক্ষ টাকা মঞ্জুর হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সেই কাজ হবে।

পঞ্চায়েতের বেশিরভাগ গ্রাম আর্সেনিক প্রবন এলাকা। ক্ষতিকর জেনেও সবাইকে বাড়ির টিউবয়েলের জল খেতে হয়। আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা কবে হবে?

সরস্বতী মণ্ডল, আনন্দনগর

শুধুমাত্র মহিষবাথানে ট্যাপে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। বাকি কোথাও পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। মানুষের সমস্যার কথা ভেবে বারবাকপুর, গোয়াস বাজার ও মহিষবাথানে মোট তিনটি সজলধারা প্রকল্প তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেগুলি অনুমোদন পেয়েছে। খুব শীঘ্র সেই কাজ শুরু হবে।

সংস্কারের অভাবে ভৈরব নদী ও সরকারি প্রায় হাজার বিঘা বিল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অনেক জায়গায় মানুষ সেই জমি দখল করে চাষ করছে। বিলগুলো আর নদী সংস্কার হলে পঞ্চায়েতেরও আয় হত। সেই সঙ্গে এলাকার মানুষেরও কর্ম সংস্থান হত।

মকসেদ মণ্ডল, উত্তরপাড়া

এই পঞ্চায়েতের অধীনে প্রচুর বিল ও জলা থাকলেও তা দেখভালের অভাবে পড়ে রয়েছে। বহু জায়গায় জমি দখল করে চাষের কাজ চলছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি ব্লক ও জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।

এলাকার গোয়াস বাজার কিংবা মহিষবাথান যাওয়ার রাস্তায় একটিও শৌচালয় নেই। যাতায়াতের পথে মহিলাদের সমস্যায় পড়তে হয়।

মিঠু সরকার, গোয়াস

একমাত্র মহিষবাথান বাজারে একটি শৌচালয় থাকলেও এলাকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় শৌচালয় বানানো প্রয়োজন। খুব তাড়াতাড়ি সেগুলি তৈরি করবে পঞ্চায়েত।

সরকারি বিল দখল করে চলছে চাষ।

চাষের কাজে জলসেচের সমস্যায় ভোগেন চাষিরা। সরকারি খরচে মাঠগুলোতে কয়েকটি গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করলে ভাল হয়।

এনামুল বিশ্বাস, গোয়াস দক্ষিণপাড়া

বহুকাল আগে মাঠে গভীর নলকূপ তৈরি হয়েছিল। এখন নতুন ভাবে ওই নলকূপ তৈরি করা পঞ্চায়েতের পক্ষে সম্ভব নয়। মাঠের ফসলে সেচের জন্য সরকারি ভাবে কোনও শ্যালোমেশিন চাষিদের দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে কৃষি দফতর ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে দেখব।

বারবাকপুর গ্রামের প্রায় ১৯০০ মানুষ খাদ্য সুরক্ষার সবুজ ফর্ম জমা দিয়ে কোনও কার্ড পাননি। পড়ে তাঁরা ৩ নম্বর ফর্ম পূরণ করে ডিলারের কাছে জমা দিয়েছেন। তার পরেও তাঁরা কোনও কার্ড পাননি।

সেলিম রেজা বিশ্বাস, বারবাকপুর

খাদ্যসুরক্ষার নতুন ডিজিটাল কার্ডের এমন অনেক সমস্যা রয়েছে। ওদের কার্ড কেন পেল না, তা খাদ্য দফতরকে জানিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অনেক গরিব মানুষই ঘর পাননি। অথচ যাদের পাকা ঘর রয়েছে, তালিকায় তাদের নাম রয়েছে!

আশুতোষ বিশ্বাস, গোয়াস

বিপিএল তালিকা তৈরির সময় সমীক্ষায় প্রচুর ভুল হয়েছিল। তাই বহু দুঃস্থ মানুষের নাম তালিকায় নেই। তাই তাদের ঘর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পরে নতুন করে তালিকা তৈরি হবে।

পঞ্চায়েত এলাকার বহু গরিব মানুষ খাদ্য সুরক্ষার কার্ডে দু’টাকা কেজি দরে চাল পাচ্ছে না। অথচ কিছু ধনী মানুষ কম দামে চাল কিনছে।

আসারফ মণ্ডল, উত্তরপাড়া

এমন সমস্যা এলাকার বিভিন্ন জায়গায়। ২০১১-র সমীক্ষা অনুযায়ী বিপিএল তালিকা তৈরি হয়েছিল। সেই তালিকায় অনেক যোগ্য মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন।

বয়স আশি পেরিয়ে গেলেও বহু মহিলা বিধবা ভাতা ও বার্ধক্য ভাতা পান না। এই নিয়ে পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি।

বাপি মণ্ডল, গোয়াস

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিপিএল তালিকাভুক্ত ৪০ থেকে ৮৯ বছরের বিধবা মহিলারা বিধবাভাতা ও ৬০ বছরের বেশি বয়সীরা বার্ধক্য ভাতা পাবেন। কিন্তু যাঁদের নাম বিপিএল তালিকায় নেই, তাঁদের বয়স হলেও কোনও ভাতা দেওয়া সম্ভব নয়।

পঞ্চায়েতের বহু রাস্তাই বর্ষাকালে যাতায়াতের অযোগ্য। সন্ধ্যার পর আলো না থাকায় রাস্তায় বেরোতে ভয় পান মহিলারা। রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করলে ভাল হয়।

কোয়েল মণ্ডল, আনন্দনগর

রাস্তার কাজের জন্য একশো দিনের কাজে দেড় কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেই কাজ হলে রাস্তার সমস্যা মিটবে। তবে আলোর ব্যবস্থা করার টাকা তহবিলে নেই।

নদিয়া নির্মল জেলা হলেও বহু গরিবের বাড়িতেই শৌচালয় নেই?

ইয়াকুব মণ্ডল, গোয়াস

সেই সময় প্রতি বাড়িতে সরকারি সাহায্যে শৌচালয় বানানো হয়। সেগুলি দেখভালের অভাবে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যেতে পারে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হবে।

গোয়াস বাজার এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু জল জমে। এখানে দু’টি স্কুল, ব্যাঙ্ক, পঞ্চায়েত ভবন, বাজার। জল পেরিয়ে যেতে হয়।

সুজিত সাহা, গোয়াসবাজার

আগামী আর্থিক বছরে জল নিকাশির জন্য নালা তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এলাকার অনেক গরিব মানুষই একশো দিনের কাজ পায়নি।

হাসান মণ্ডল, মহিষবাথান

মাস চারেক আগে পঞ্চায়েত ক্ষমতায় আসার পর ইতিমধ্যেই প্রায় আড়াই কোটি টাকার কাজ করিয়েছি। এই আর্থিক বছরে আরও দেড়কোটি টাকার কাজের প্রস্তাব জেলায় পাঠানো আছে।

Panchayat Problem Question
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy