E-Paper

মতুয়া নেতার পরিবারে কেন এত প্রার্থী, প্রশ্ন

তৃণমূলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা কমিটির চেয়ারম্যান, দলের অন্যতম মতুয়া-মুখ প্রমথরঞ্জন বসুর পরিবারে এত প্রার্থিপদ নিয়ে দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ০৮:১৩
An image of TMC flag

—প্রতীকী চিত্র।

তিনি নিজে তো প্রার্থী হয়েছেনই। সেই সঙ্গে প্রার্থী হয়েছেন তাঁর স্ত্রী এবং ভাই।

তৃণমূলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা কমিটির চেয়ারম্যান, দলের অন্যতম মতুয়া-মুখ প্রমথরঞ্জন বসুর পরিবারে এত প্রার্থিপদ নিয়ে দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। দলের অনেক নেতাকর্মীই পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে যাঁরা এ বার টিকিট পাননি তাঁরা বেশি সরব।

কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের পর থেকে হাঁসখালি ব্লকে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই কমেছে। গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে এই ব্লকে। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েতের টিকিট বণ্টন নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল চরম আকার নেয়। অনেকেই ব্লক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন। অনেকে টিকিট না পেয়ে ভিতরে ভিতরে ক্ষুব্ধ। দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হওয়ায় এই ব্লক থেকে দু’জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

প্রমথরঞ্জন বসুর বাড়ি ময়ূরহাট এলাকায়। সত্যজিৎ খুনের পর তিনি ২০১৯ সালের উপ-নির্বাচনে কৃষ্ণগঞ্জ কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি বর্তমানে হাঁসখালি পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ। এ বারও তিনি পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হয়েছেন। তার স্ত্রী অণিমাদেবী বসু ২০০৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। তার মধ্যে দু’বার প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন। ২০১৮ সালে তিনি প্রার্থী হননি, পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ী হন প্রমথরঞ্জন। এ বার দল অণিমাকে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে প্রার্থী করেছে। তার পাশাপাশি, বগুলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হয়েছেন প্রমথর ভাই সত্যরঞ্জন বসু। তিনি দীর্ঘ দিন বগুলার বাসিন্দা। তিনি দু’বার,তাঁর স্ত্রী কল্পনা বসুও দু’বার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। প্রমথর আর এক ভাই সুশীল বসু ময়ূরহাট ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন অণিমার বিরুদ্ধে।

এ বার টিকিট নিয়ে কড়াকড়ির বাজারেও একই পরিবারের তিন জন প্রার্থী হওয়ায় তৃণমূলের অন্দরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দলের টিকিট না পেয়ে পঞ্চায়েত সমিতিতে নির্দল প্রার্থী হওয়ায় ব্লক কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীরেন্দ্রনাথ দেবনাথকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল। তাঁর আক্ষেপ, “শুরুর দিন থেকে দলটা করে এসেছি। আজ আমরা ব্রাত্য। এক জন পদের প্রভাব খাটিয়ে পরিবারের সকলের জন্য টিকিটের ব্যবস্থা করবেন আর আমরা সাসপেন্ড হব!”

প্রমথরঞ্জন অবশ্য দাবি করছেন, “আমি দলের কাছে কারও টিকিটের জন্য সুপারিশ করিনি। আমার স্ত্রী ও ভাই নিজেদের যোগ্যতায় টিকিট পেয়েছেন। যোগ্য বলেই কর্মীরা তাঁদের নাম প্রস্তাব করেছেন আর দল টিকিট দিয়েছে।” এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “কর্মীরা ওঁদের চেয়েছেন। তবে তাঁরা প্রার্থী না-ও হতে পারতেন। হয়তো কর্মীদের মতামতকে মর্যাদা দিতেই ওঁরাপ্রার্থী হয়েছেন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy