ব্যস্ত সওকত। নিজস্ব চিত্র
সকাল থেকে রাত। রাত থেকে সকাল, কী ভাবে হচ্ছে, বুঝতে পারছেন না সওকত। সাইকেলে করে দোকানে আসার আগে রাস্তায় কেউ ডাকলে তাকে উত্তর দিচ্ছেন, “আজ নয় পরে। এখন খুব ব্যস্ত। সামনে মহালয়া।” দুপুরের খাবার খেতে বিকেল হয়ে যাচ্ছে। বাড়ি ফিরছেন রাত করে। গিন্নির মুখ বেজার। বলি, “এতো পরিশ্রম করলে কি শরীর ঠিক থাকবে।” এতো পরিশ্রম করেও মুখে হাসি কর্তার “এই তো সিজিন গো। মহালয়ার পর সব আবার রুটিন মতো হবে।” বেলডাঙা হাটপাড়ার দোকানে বসে সওকাত বলছেন, “গত কয়েক দিনে প্রায় ৩৩টা রেডিয়ো বিক্রি হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে আট থেকে দশটা রেডিয়ো আসছে সারাই করানোর জন্য।” তিনি বলছেন, করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের বাজারে রেডিয়োর চাহিদা বেড়েছে। বিক্রি ও সারাই দুটোতেই সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। মানুষ বাড়ি গৃহবন্দি অবস্থা কাটাতে রেডিয়োকে বেছে নিয়েছেন।
বছর চুয়ান্নের সওকাত বলেন, ‘‘রেডিয়োর কাজ শিখে গত ৩০ বছর আগে দোকান করেছি। আগে খুব ভাল চলত। কিন্তু টিভি, কেবল, রিমোট, ফোর জির দৌলতে রেডিয়ো তার চাহিদা ধরে রাখতে পারেনি। কিন্তু এখন এই করোনা আবহে মানুষের মধ্যে রেডিয়োর জন্য আকাঙ্ক্ষা বেড়েছে। রেডিয়ো বিক্রি আগে থেকে বেড়েছে। আর মহালয়ার আগে সেটা আরও অনেক খানি বেড়েছে।’’ সবটা নিয়ে রেডিয়োর বাজার খুব ভাল। তিনি বলেন, ‘‘তবে একটা কথা বুঝতে পারছি রেডিয়ো সারানোর লোক নেই। না হলে পুরুলিয়া, নদিয়া থেকে অনেকে আসেন রেডিয়ো সারাতে।’’ মহালয়ার দিন সওকতও দোকানের ভাল রেডিয়ো হাতে বাড়ি যান। ভোররাত থেকে পরিবারের সঙ্গে মহালয়া শোনেন। এলাকায় আরও অনেকেই আছেন যাঁরা ভাল রেডিয়ো সারান। রানিনগরের রফিকুল ইসলাম মণ্ডল তাদের মধ্যে।
তিনি বলেন, “মহালয়ার আগে থেকে রেডিয়ো বিক্রি বেড়েছে। অনেক মানুষ আসছেন যারা কেউ নদিয়ার করিমপুর থেকে। জিয়াগঞ্জ ও ভগবানগোলা থেকে।” রবিউলও বলেন, “গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকটা রেডিয়ো বিক্রি হয়েছে। প্রতিদিন চারটে রেডিয়ো সারাই হচ্ছে। মহালয়ার আগের দিনে অনেক রেডিয়ো বিক্রি হল। সঙ্গে রেডিয়ো সারানোর বরাদ মিলবে।” রফিকুলও বলেন, “আমি ও আমার পরিবার প্রতিবছর নিয়ম করে মহালয়া শুনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy