E-Paper

রাতদিন মাটি কেটে চলছে পাচার, ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা

উল্টে এর ফলে মাটি কারবারিদের সাহস আরও বেড়ে গিয়েছে। বিগত বেশ কিছু দিন ধরে তাদের দিনেমানেও মাটি কাটকে দেখা যাচ্ছে।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:২৭
কেটে নেওয়া হয়েছে খাসজমির মাটি। ধুবুলিয়ার মায়াকোলে।

কেটে নেওয়া হয়েছে খাসজমির মাটি। ধুবুলিয়ার মায়াকোলে। নিজস্ব চিত্র ।

মাটি কেটে পাচার হচ্ছে দেদার। রাত একটু গভীর হলেই ধুবুলিয়ার মায়াকোল এলাকায় মাটি-কাটা যন্ত্রের ঘড়ঘড় শব্দ শুনতে পান গ্রামের মানুষ। তা চলে সেই ভোর পর্যন্ত।

এলাকার মানুষ সব জেনেও প্রতিবাদ করার সাহস পান না। কারণ যারা মাটি কেটে পাচার করায় যুক্ত তারা সকলেই ‘প্রভাবশালী’, গ্রামবাসীদের কথায় ‘কুখ্যাত’ লোক। সম্প্রতি গ্রামের বেশ কিছু মানুষ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠি লিখে বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ।

উল্টে এর ফলে মাটি কারবারিদের সাহস আরও বেড়ে গিয়েছে। বিগত বেশ কিছু দিন ধরে তাদের দিনেমানেও মাটি কাটকে দেখা যাচ্ছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গ্রামবাসী স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের ফোন করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত ধুবুলিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। কিন্তু তার আগেই ট্রাক্টর-যন্ত্রপাতি নিয়ে মাটি কারবারিরা সরে পড়ে বলে গ্রামবাসীর দাবি।

ধুবুলিয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মায়াকোল এলাকা। ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে যে রাস্তা বাহাদুরপুর মোড় থেকে পণ্ডিতপুরের দিকে গিয়েছে, তার দুই দিকে প্রকাশ্যে বিঘার পর বিঘা জুড়ে মাটি কেটে পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা সুজয় ঘোষ, সুরো ঘোষদের অভিযোগ, “বিঘার পর বিঘা জমির মাটি পাচার হয়ে যাচ্ছে। সেই জমিতে যারা চাষ করতেন, তাঁদের ভয় দেখিয়ে হটিয়ে দিয়েছে। দিনের পর দিন এ ভাবে মাটি পাচার চললেও প্রশাসনকে পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি। নানা জায়গায় লিখিত ভাবে জানিয়েও লাভ হয়নি।”

গ্রামবাসীদের দাবি, এলাকারই প্রহ্লাদ, জীবন, সম্রাট, তাপসেরা মাটি কেটে পাচার করার কাজে জড়িত। ধুবুলিয়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান, তৃণমূলের বিশ্বজিৎ ঘোষও অভিযোগ করেন, “পুরো জমিটাই সরকারি খাসজমি। বেশ কিছু মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে সেখানে চাষ করে আসছিলেন। তাঁদের অনেকেই অত্যন্ত দরিদ্র। তাঁদের ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে জমি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “গ্রামবাসীদের সঙ্গে আমরাও চাই, মাটি পাচার বন্ধ হোক। প্রশাসন যাতে সক্রিয় হয় তার জন্য আমরাও নানা জায়গায় বিষয়টি জানিয়েছি।”

এ প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগর ২ ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক গৌতম বিশ্বাস বলেন, “বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। তবে সে দিন রাত হয়ে যাওয়ায় কাজ সম্পূর্ণ করা যায়নি। যারা মাটি কাটায় জড়িত তাদের সকলের বিরুদ্ধেই আইনি পদক্ষেপ করা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dhubulia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy