Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তার উপরেই দাঁড়ায় লরি, নিত্য ভোগান্তি শান্তিপুরে

রাস্তার উপরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে বাস-লরি। সেই সঙ্গে ভিড় করে থাকে বিভিন্ন রুটের ট্রেকার। এই যানজটের মধ্যেই লরিতে চালের বস্তা নামানো-ওঠানো চলছে। ভ্যান, লছিমনের ফাঁক গলে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে টোটো।

নৃসিংহপুর বাজারের চেনা দৃশ্য। সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।

নৃসিংহপুর বাজারের চেনা দৃশ্য। সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ০১:২৩
Share: Save:

রাস্তার উপরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে বাস-লরি। সেই সঙ্গে ভিড় করে থাকে বিভিন্ন রুটের ট্রেকার। এই যানজটের মধ্যেই লরিতে চালের বস্তা নামানো-ওঠানো চলছে। ভ্যান, লছিমনের ফাঁক গলে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে টোটো। চালের বস্তা বোঝাই ঘোড়ার গাড়িগুলি যেমন করেই হোক, সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাইছে। অথচ মাছি গলার জায়গা নেই রাস্তায়। আর এ সবের ফাঁক দিয়ে কোনওরকমে গলে যাওয়ার চেষ্টা করছে ছাত্রছাত্রীরা। এটাই শান্তিপুরের নৃসিংহপুর বাজারের নিত্য দিনের চিত্র।

এই যানজটের কারণে প্রতিদিন যাত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। যানজটে ঠেলায় পড়ুয়ারা অনেক সময় নির্ধারিত সময়ে স্কুলে পৌঁছতে পারে না। যানজটে আটকে পড়লে অন্তত মিনিট কুড়ি আটকে থাকতে হয় অ্যাম্বুল্যান্সকেও। দীর্ঘদিনের এই সমস্যা যেন গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। অন্তত প্রশাসনের লোকজনের। তাঁরা দেখেও না দেখার ভান করেন। সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কেউ কোনও চেষ্টা করেন না।

নৃসিংহপুর হাই স্কুলের ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। যানজটে তাদেরই সব থেকে বেশি ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। দশম শ্রেণির ছাত্রী রিম্পা বিশ্বাসের বাড়ি সাহেবডাঙায়। তার কথায়, ‘‘স্কুলে যাওয়াটা যেন আতঙ্ক হয়ে গিয়েছে। প্রতিদিনই যানজটে আটকে থাকতে হয়। অনেক দিনই স্কুলে পৌঁছতে দেরি হয়। মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌমিত্র বিদ্যান্ত বলেন, ‘‘স্কুলে আসার পথে শিক্ষকরাও যানজটে আটকে যান। সেই কারণে নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে আসার ক্ষেত্রে সে ভাবে কড়াকড়ি করা যায় না। অথচ প্রশাসনের তরফে সমস্যা মেটানোর কোনও উদ্যোগই চোখে পড়ে না।’’ নৃসিংহপুরের উল্টো দিকে বর্ধমানের কালনা। মাঝখানে ভাগীরথী। প্রতিদিন প্রায় শ’চারেক ছাত্রছাত্রী কালনার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে পড়তে যায়। আবার কালনা থেকেও অনেকে নদী পেরিয়ে এ পারে আসেন। জেলা পরিষদের হিসেব অনুযায়ী, দিনে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ এই ঘাট দিয়ে যাতায়াত করেন। সকলেই কমবেশি যানজটের যন্ত্রণায় ভোগেন। নৃসিংপুর বাজারে প্রতিদিন অন্তত ৫০টি চালের লরি আসে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সেই চাল পৌঁছে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা তথা জেলা পরিষদের সদস্য তৃণমূলের নিমাইচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘চালের বড় বাজার হওয়ার কারণে এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক আসেন। ফলে এলাকায় যানজট কমানোর স্থায়ী ব্যবস্থা করা জরুরি। নদীর ঘাটের পাশেই স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাণীকুমার রায় বলেন, ‘‘জমি পেয়ে গেলেই দ্রুত স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড তৈরি করা হবে।’’ কিন্তু শুধু বাসস্ট্যান্ড করলেই কি সমস্যার সমাধান হবে? বাকি যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ কী ভাবে হবে? বাজারে প্রতিদিন ৫০টি করে লরি ঢোকে। তার উপরে এই এলাকায় নানা রুটের ট্রেকার দাঁড়িয়ে থাকে। তার উপরে লছিমন আর টোটোর ভিড় তো রয়েইছে। এলাকার মানুষের দাবি, ইতস্তত ভাবে লরি দাঁড়িয়ে থাকার কারণেই যানজট কাটে না। লরি দাঁড়ানোর নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করার ব্যাপারে প্রশাসনের অবশ্য কোনও হেলদোল নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Market Road Blockage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE