Advertisement
E-Paper

Sandmines: দরপত্র ছাড়াই ঘাটের ইজারা

নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি, তৃণমূলের রিক্তা কুণ্ডু অবশ্য দাবি করেন, “সমস্তটাই আইন মেনে স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হচ্ছে।”

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২২ ০৬:২৮
নাম উঠেছিল কালো তালিকায়

নাম উঠেছিল কালো তালিকায় নিজস্ব চিত্র

ঘাটের ইজারার টাকা না দেওয়ায় কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল যাঁকে, পরের বছর কোনও দরপত্র বা টেন্ডার ছাড়া তাঁকেই ফের ঘাটের ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নদিয়া জেলা পরিষদ। মুর্শিদাবাদের একটি সমবায় সমিতি নদিয়ার জেলাশাসকের দফতরে এই নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। আইন মাফিক টেন্ডার ডেকে ঘাট ইজারা দেওয়ার দাবিও জানিয়েছে তারা।

জলঙ্গি নদীর উপরে কানাইনগর-পাটিকাবাড়ি ঘাট। তার এক দিকে মুর্শিদাবাদের নওদা আর অন্য দিকে নদিয়ার তেহট্ট। ১৯৯৪ সাল থেকে এই ঘাট ইজারা দেওয়ার জন্য এক বার মুর্শিদাবাদ টেন্ডার ডাকে, পরের বার নদিয়া। গত বার টেন্ডার ডেকেছিল মুর্শিদাবাদ। ইজারা পেয়েছিল নওদা থানা ফেরি সার্ভিস কো-অপারেটিভ সোসাইটি। গত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঘাটটি ওই সংস্থার দায়িত্বে ছিল। তার পর টেন্ডার ডেকে ঘাটের ইজারা দেওয়ার কথা নদিয়া জেলা পরিষদের। কিন্তু এত দিনেও সেই কাজটা তারা করে উঠতে পারেনি।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, নওদার ওই সংস্থার দায়িত্ব নেওয়ার আগের বছর করোনার কারণ দেখিয়ে নদিয়ার তরফে কোনও রকম টেন্ডার ছাড়াই ঘাটের ইজারা দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দা রজব মণ্ডলকে। অভিযোগ, তিনি সারা বছর ঘাট চালালেও চুক্তি অনুযায়ী ধার্য টাকার কিছুই দেননি। বারবার চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও তিনি বকেয়া টাকা শোধ না করায় জেলা পরিষদের অর্থের স্থায়ী সমিতি তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করে। যদিও রজব মণ্ডলের দাবি, “আমার কাছে জেলা পরিযদের কোন টাকা পাওনা নেই। আমি সমস্ত টাকা শোধ করে দিয়েছি।”

এ বার নওদার ওই সমবায় সমিতির পাশাপাশি আরও কয়েক জন টেন্ডারে যোগ দেওয়ার জন্য নদিয়া জেলা পরিষদে আবেদন করে। কিন্তু ‘ওপেন টেন্ডার’ তো হচ্ছেই না, উল্টে সেই রজব মণ্ডলকেই ইজারা দেওয়ার জন্য অর্থের স্থায়ী সমিতিতে সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে বলে নদিয়া জেলা পরিষদ সূত্রের খবর। নওদার ওই সমবায় সমিতির ম্যানেজার সুশান্ত প্রামাণিকের বক্তব্য, “কাউকে কালো তালিকাভুক্ত করা হলে তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানোর কথা। নদিয়া জেলা পরিষদ সেটা তো করেইনি, উল্টে তাকেই ফের টেন্ডার দিচ্ছে। স্বজনপোষণ চলছে। আমরা এই নিয়ে হাই কোর্টে মামলা করেছি। অথচ তার রায় বেরোনোর আগেই নিয়ম ভেঙে একই ব্যক্তিকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নদিয়া জেলা পরিষদ।”

সুশান্তের দাবি, “সরকারি আইন অনুযায়ী ওপেন টেন্ডার ডেকে ঘাটের ইজারা দিতে হবে। এক মাত্র যদি পাটনি সম্প্রদায়ের লোকেদের কোনও সমবায় সমিতি থাকে, সে ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টেন্ডার না ডেকে ইজারা দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে জেলা পরিষদ যদি টেন্ডার না ডাকতে চায় তা হলে এক মাত্র আমরা ওই ঘাটের ইজারা নেওয়ার যোগ্য। না হলে টেন্ডার ডাকতে হবে।”

আর এক আবেদনকারী কাইজার আহমেদের দাবি, “আমি ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে ঘাটের ইজারা নিতে চেয়ে জেলা পরিষদে আবেদন করেছি। কিন্তু অনেক কম টাকায় রজব মণ্ডলকে ইজারা দিচ্ছে নদিয়া জেলা পরিষদ। আমরা চাই, ওপেন টেন্ডার হোক। প্রয়োজনে আমরাও আদালতে যাব।”

নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি, তৃণমূলের রিক্তা কুণ্ডু অবশ্য দাবি করেন, “সমস্তটাই আইন মেনে স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হচ্ছে।” কালো তালিকাভুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এফআইআর না করে তাঁকেই কেন ফের ইজারা দেওয়া হচ্ছে? রিক্তা কুণ্ডু বলেন, “টাকা দেয়নি বলেই কালো তালিকাভুক্ত হয়েছিল। পরে সে আমাদের জানায় যে বকেয়া শোধ করে দেবে। তা হলে আর কেন কালো তালিকায় রাখব? পুলিশেই বা কেন অভিযোগ করব?”

টেন্ডার ছাড়া কেন রজব মণ্ডলকেই ইজারা দেওয়া হচ্ছে? রিক্তার যুক্তি, “লোকটা ধারদেনা করে টাকা শোধ করেছে। মানবিক ভাবে বিচার করেই আমরা এ বছরের জন্য তাকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

বৃহস্পতিবার নদিয়ার জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি বল‌েন, “আমি এখনও কোনও অভিযোগপত্র হাতে পাইনি। অভিযোগ করা হয়ে থাকে, অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”

Murshidabad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy