Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Satyen Chowdhury Murder

চেয়ারে বসে মোবাইল ঘাঁটছিলেন সত্যেন

সত্যেনের কাজ দেখাশোনা করেন শম্ভুরঞ্জন বোস। এ দিন ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও তিনি সেখানেই ছিলেন। সেখান থেকে বাইরের আসার কিছুক্ষণ পরে আততায়ীরা হামলা চালায়।

এই নির্মীয়মাণ আবাসনের নীচে খুন হন সত্যেন। 

এই নির্মীয়মাণ আবাসনের নীচে খুন হন সত্যেন।  নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪০
Share: Save:

বাড়ি থেকে বড় জোর একশো মিটার দূরে চালতিয়া বিলের পাশেই জি প্লাস চারতলা বহুতল আবাসন তৈরি হচ্ছে। সেখানে গ্রিল লাগানোর কাজ যেমন হচ্ছে, তেমনই ওই ফ্ল্যাটের বিভিন্ন তলায় পাথর বসানোর কাজ চলছে। প্রতিদিনের মতো রবিবারও ১০-১১টার মধ্যে ওই ফ্ল্যাটের গ্রাউন্ড ফ্লোরে চালতিয়া বিলের দিকে চেয়ারে বসে মোবাইল ঘাঁটছিলেন সত্যেন চৌধুরী। লোকজন এলে কথাও বলছিলেন। আর তাঁর চেয়ারের উল্টো দিকে গ্রিল মিস্ত্রি ভাকুড়ির সাদ্দাম শেখ সহ আরও কয়েক জন পাঁচিলের উপরে দাঁড়িয়ে গ্রিল লাগাচ্ছিলেন। সাদ্দাম বলেন, ‘‘গুলির শব্দ পেতেই সামনে দেখি কয়েক জন পিস্তল উঁচিয়ে রয়েছে। আর তা দেখেই ভয়ে পাঁচিল থেকে বাইরে ঝাঁপ দিই। ক’জন এসেছিল তা বলতে পারব না। আমি এখনও আতঙ্কে রয়েছি।’’ ঘটনার পরে রীতিমতো আতঙ্কের ছাপ চালতিয়া এলাকায়। বেলা ২টো নাগাদ খুন হন সত্যেন। তার পরে সেখানে অনেক লোকজন জমায়েত হয়েছিল।

সত্যেনের কাজ দেখাশোনা করেন শম্ভুরঞ্জন বোস। এ দিন ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও তিনি সেখানেই ছিলেন। সেখান থেকে বাইরের আসার কিছুক্ষণ পরে আততায়ীরা হামলা চালায়। শম্ভুরঞ্জন জানান, এদিন অন্য এক জনের সঙ্গে সত্যেনের পিকনিকে যাওয়ার কথা ছিল। তাই তাঁর জন্য সত্যেন অপেক্ষা করছিল। তিনি বলেন, ‘‘গুলির শব্দে পেয়ে ছুটে গিয়ে দেখি সব শেষ। ক’জন কীভাবে এসেছিল, কীভাবে পালিয়েছে আমি দেখতে পাইনি।’’ তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে জনা তিনেক দুষ্কৃতী মোটরবাইকে করে সেখানে এসেছিল। তার পরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তিনটি গুলি করে। নিঁখুত অপারেশন করে তারা মোটরবাইকে করে পালিয়েছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে।

সত্যেনের নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাটের পাশের বাড়িতে তখন রান্না করছিলেন রাজকুমারী সেন। তিনি বললেন, ‘‘ঘটনার কিছুক্ষণ আগে দেখে এলাম সেখানে দাদা চেয়ারে বসে মোবাইল ঘাঁটছিলেন। আনাজ কাটার সময় পর পর তিনটি গুলির আওয়াজ পেতেই সেখানে গিয়ে জানতে পারি দুষ্কৃতীরা গুলি করে পালিয়েছে। আমরা ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি।’’

ওই ফ্ল্যাটে মার্বেলের কাজ করেন রাব্বুল শেখ। তাঁর কথায়, ‘‘১টা ৫২ মিনিট নাগাদ সত্যেনদা আমাকে ফোন করে ডাকেন। এর মধ্যে এই ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে এসেছি।’’

সত্যেন চৌধুরী স্ত্রী ও একমাত্র কন্যাকে নিয়ে বহরমপুর শহর লাগোয়া চালতিয়া এলাকায় বসবাস করেন। তিনি তৃণমূল দলের কাজ করার পাশাপাশি জমি জায়গার ব্যবসা করেন, প্রোমোটিংয়ের কাজ করেন। তিনি একটি বাগানবাড়ির জমি জায়গা সংক্রান্ত বিবাদে জড়িয়েছিলেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সম্প্রতি ১২ দিনের ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন।

বেনারস, বৃন্দাবন, দিল্লি-সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে গত ৪ জানুয়ারি বহরমপুর ফিরেছেন। সত্যেনের অনেক অনুরাগী তাঁকে দেখতে মেডিক্যালের মর্গে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Berhampore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE