হাতে গোলাপ আর খামে ভরা একটা চিঠি, মুখে হাসি! ‘ড্রাইভারকাকু’দের হাতে চটাপট সেই ফুল আর খাম ধরিয়ে দিচ্ছে খুদের দল। তার পর একগাল হেসে মিষ্টি করে আবদার, ‘‘প্লিজ কাকু, গাড়ি চালানোর সময় একদম মোবাইল ফোন কানে তুলো না। দেখছো তো কেমন দুর্ঘটনা ঘটছে। খুব ভয় করছে আমাদের।’’
পুঁচকেদের এমন ‘গাঁধীগিরি’তে প্রথমে খানিকটা ভ্যাবাচ্যাকা চালকেরা। একটু ইতস্তত করে খামটা নিয়ে কেউ ফিক করে হেসে ফেলেছেন। কেউ আবার চিঠিটা একঝলক পড়ে নিয়ে কচিকাঁচাদের দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে পুড়ে ফেলেছেন পকেটে। কয়েক জন আবার খানিক আনমনে স্বগতোক্তি করেছেন, ‘‘মোবাইলটা সত্যিই এ বার বুঝেশুনে কানে দিতে হবে। বাড়িতে বউও বলছিল বটে!’’
খড়ে নদীর পাড়ে ছোট্ট গঞ্জ গড়াইমারী। তার বুক চিরে গিয়েছে বহরমপুর বক্সিপুর রাজ্য সড়ক। শুক্রবার সকালে সেখানেই বেসরকারী বাস এসে দাঁড়ালেই স্কুল পড়ুয়ারা গোলাপ ও খামে ভরা চিঠির গাঁধীগিরি চালিয়েছে। গোলাপের বিষয়টি চেনা গাড়ির চালকদের। এর আগে পথ নিরাপত্তা নিয়ে কর্মসূচিতে একাধিকবার গোলাপ দিয়ে তাঁদের ঠিকমতো গাড়ি চালানোর ব্যাপারে অনুরোধ জানিয়েছে পড়ুয়ারা। তবে চিঠির বিষয়টি ছিল তুলনায় নতুন। অনেক চালকই প্রথমে ভেবেছিলেন, বোধহয় কোনও পুজো বা চড়ুইভাতির চাঁদা চাইছে খুদেরা। তাই ভুরুও কুঁচকেছেন তাঁরা। কিন্তু খাম খুলে তাঁদের ভুল ভেঙেছে। শুক্রবার সকাল থেকে প্রায় ঘণ্টা তিনেক গড়াইমারী নেতাজী সঙ্ঘের পক্ষ থেকে এভাবেই সচেতনতা অভিযানে সামিল হয়েছে অনন্যা পণ্ডিত, সাগিরা বানু, সোহেল রানা, রাহুল মণ্ডলেরা।