রানাঘাটের গ্রন্থাগারের অভাব। — নিজস্ব চিত্র।
গ্রন্থাগার যে কোনও বিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র। সরকারি কিংবা সরকারি অনুমোদন প্রাপ্ত বিদ্যালয় গড়ে ওঠার আগে সেখানে গ্রন্থাগারের ব্যবস্থা থাকবে, এমন স্বীকারোক্তিও দেওয়া হয়। অথচ, নদিয়া জেলায় বেশির ভাগ উচ্চ বিদ্যালয়গুলিতে গ্রন্থাগারিক পদ শূন্য। ফলে, অধিকাংশ স্কুলে গ্রন্থাগার থাকলেও তা ধুঁকছে। ছাত্র-ছাত্রীরাও বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতর সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন সরকারি স্কুলগুলিতে গ্রন্থাগারিক নিয়োগ হয়নি। তাই সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। শহর থেকে গ্রাম বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অভিযোগ, গ্রন্থাগার সচল না থাকলে পড়ুয়াদের বইমুখী করা কিংবা পাঠদানেও সমস্যা হচ্ছে। রানাঘাটের আনুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজিব নিয়োগী বলেন, ‘‘২০১৯ সাল নাগাদ স্কুলে গ্রন্থাগারের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। সেই টাকায় আমরা বেশ কিছু বই, আলমারি কিনেছি। এই মুহূর্তে স্কুলে তিন জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। গ্রন্থাগারিকও নেই। তাই গ্রন্থাগার সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না।’’
রানাঘাট ২ ব্লকের অধীনে থাকা পূর্ণনগর পূর্ণচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় গ্রন্থাগারের জন্য আগে ঘরের সমস্যা ছিল। সেই সমস্যা মিটলেও গ্রন্থাগারিক না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ব্যবহার করতে পারছে না। একই সমস্যা রয়েছে রানাঘাট দেবনাথ ইনস্টিটিউশন ফর গার্লস স্কুলটিতেও।
রানাঘাট পালচৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে জেলার অন্যতম প্রাচীন বিদ্যালয়। বছর দুই আগে এই বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক অবসর নিয়েছেন। তার পর থেকেই গ্রন্থাগারে ঝুলেছে তালা। সেই তালা কবে খোলা হবে, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুস্মিত নারায়ণ কুণ্ডু বলেন, ‘‘গ্রন্থাগার হল বিদ্যালয়ের অপরিহার্য অঙ্গ। অথচ, দু’বছর ধরে গ্রন্থাগারিক নেই।’’
অভিভাবকদের অভিযোগ, ক্রমশ সরকারি বিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের মান কমছে। ছেলে-মেয়েরা স্কুলে খেলার মাঠ পায় না। গ্রন্থাগার বন্ধ। অথচ, রাজ্য সরকারের এই ব্যাপারে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। যে কারণে অনেক অভিভাবকেরাই এখন বেসরকারি স্কুলের দিকে ঝুঁকছেন।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বর্তমানে জেলায় ৬৩৪টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। দু-একটি বিদ্যালয় ছাড়া অধিকাংশ জায়গায় গ্রন্থাগারিক নেই। আবার, গ্রন্থাগার পরিচালনার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক দিয়েও গ্রন্থাকার স্বাভাবিক রাখা যাচ্ছে না।’’
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দিব্যেন্দু পাল বলেন, ‘‘জেলা জুড়ে বিদ্যালয়গুলিতে গ্রন্থাগারিক সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি ভেবে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy