বিপজ্জনক। নিজস্ব চিত্র
পাতলা লোহার চাদর উজিয়ে ছয় চাকার লরি, চার চাকার ছোট গাড়ি, কাঠ ভর্তি মোটরভ্যান ও মোটরবাইক নিয়েই নৌকায় উঠতে হচ্ছে যাত্রীদের। যদিও ঘাটের কর্মীদের দাবি, বিশেষ পদ্ধতিতে দু’টি নৌকা বেঁধে উপরে বাঁশের মাচা ফেলে পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কালীগঞ্জের তেজনগর ঘাট থেকে ভাগীরথী পেরোলেই ও পারে মুর্শিদাবাদের রামনগর, যেখান থেকে সহজেই চলে যাওয়া যায় বহরমপুর বা কান্দি। সেই কারণে ব্যবসায়ীরা এই ঘাটটি পছন্দ করেন। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে অজস্র প্রশ্ন রয়েছে। প্রথমত মানুষ পারাপারের নৌকায় গাড়ি বা মোটরবাইক তোলার কথা নয়। বৃন্দাবন মণ্ডল নামে এক যাত্রীর আক্ষেপ, “নৌকায় গাড়ি তোলা নিয়ে আপত্তি করলেই বলে, ‘অন্য নৌকায় এসো’।” এক সময়ে নৌকায় উঠলে প্রত্যেককে পরানো হত লাইফ জ্যাকেট। এখন সারা নৌকা খুঁজে একটিও জ্যাকেট নজরে আসবে না।
যদিও রামনগর ঘাটের ইজারাদার ভুলু ঘোষের দাবি, “নৌকায় লাইফ জ্যাকেটের সঙ্গে টিউবও রাখি।” সেই সব জ্যাকেট কোথায়? ভুলুর ব্যাখ্যা, “প্রশাসন থেকে যত জ্যাকেট দেওয়া হয়েছিল তার বহু নষ্ট হয়েছে। কিছু ঘরে রাখা হয়েছে দুর্যোগের সময়ের জন্য।” একই নৌকায় গাড়ি ও যাত্রী পার প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “এটা হওয়ার কথা নয়। গাড়ি পারাপারের জন্য ভেসেল রয়েছে। কেন হল, দেখছি।”
কালীগঞ্জের আর এক বড় ঘাট বল্লভপাড়া ঘাট। ভাগীরথী পেরোলে ও পারে বর্ধমানের কাটোয়া। দিনে কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত। ভেসেলের ব্যবস্থা আছে, তৈরি হয়েছে নতুন জেটি। তবে সেই জেটি আর ভেসেল এখন পড়েই রয়েছে। যাত্রী থেকে মোটরবাইক পারাপারে ভরসা সেই নৌকার উপর বাঁধা বাঁশের মাচা। পঞ্চায়েতের তৈরি ঢালাই রাস্তা থেকে নেমে কাদা পেরিয়ে নৌকায় চাপতে হয়। আলোরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। নৌকার এক কোণে কয়েকটা ছেঁড়া লাইফ জ্যাকেট পড়ে। কাটোয়া ঘাটের ইজারাদার অশোক সরকারের দাবি, “লাইফ জ্যাকেট পরতে বললেও যাত্রীরা নানা কারণ দেখিয়ে এড়িয়ে যান।” স্থানীয় বাসিন্দা আলমিনা বিবি আবার বলেন, “লাইফ জ্যাকেট পরব না কেন? আগেও তো পরেছি। কিন্তু জ্যাকেট পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, সময়ে সময়ে পাল্টে দিতে হবে, তবেই না!”
জেটি ও ভেসেল ব্যবহার না হওয়া প্রসঙ্গে ইজারাদারের বক্তব্য, “বল্লভপাড়ার দিকে নতুন জেটির সমস্যার কারণে ভেসেল ব্যবহার করা যাচ্ছে না।” কাটোয়ার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় আবার বলেন, “দু’টি ভেসেলই খারাপ। কয়েক দিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে, তার পরেই চালানো হবে।” তিনি জানান, ঘাটের ইজারা আর না দিয়ে পুরসভাই চালাবে বলে পরিকল্পনা রয়েছে। তা হলে আর অভিযোগ উঠবে না বলে তাঁর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy