Advertisement
E-Paper

ছাত্রছাত্রী বাড়ন্ত, অস্তিত্বের সঙ্কটে আড়াইশো বিদ্যালয়

রাজ্যের এই তালিকায় নদিয়ার আড়াইশো স্কুল রয়েছে। তার মধ্যে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ১৮৯। জুনিয়র হাইস্কুলের (অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) সংখ্যা ৬১।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩ ০৭:০১
প্রায় ফাঁকা থাকে স্কুল।

প্রায় ফাঁকা থাকে স্কুল। প্রতীকী চিত্র।

নানা কারণে ছাত্রসংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে, এমন স্কুলের একটি তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর। সেই তালিকা অনুসারে ৩০ জনের কম পড়ুয়া আছে এমন স্কুলের সংখ্যা ৮২০৭। এখনও পরিষ্কার নয়, এই সব স্কুলগুলির ভবিষ্যৎ ঠিক কী হতে চলেছে। তবে ছাত্র কম এমন বহু স্কুলের অস্তিত্ব ইতিপূর্বে বিলুপ্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও তারই পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

রাজ্যের এই তালিকায় নদিয়ার আড়াইশো স্কুল রয়েছে। তার মধ্যে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ১৮৯। জুনিয়র হাইস্কুলের (অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) সংখ্যা ৬১। তালিকা অনুসারে, নদিয়ার এই স্কুলগুলিতে শিক্ষক-সংখ্যা ৬৩২ এবং শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা ৪২। সুতোয় ঝুলছে সেই সব স্কুল, তাদের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের ভাগ্য।

এই মুহূর্তে নদিয়ার মুকুন্দপুর জুনিয়র হাইস্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ২০, শিক্ষক আছেন তিন জন। ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অমলেন্দু দাশ জানাচ্ছেন, ২০১০ সালে স্কুলটি চালু হয়েছিল। ২০১৩ সালে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন শুরু হলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৯০-তে পৌঁছেছিল। তিনি বলেন, “পড়ুয়ারা যে অঞ্চল থেকে আসত, সেই গ্রামে গিয়ে নবদ্বীপের বিভিন্ন হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের নিজেদের স্কুলে নিয়ে যেতে শুরু করলেন। ফলে আমাদের জুনিয়র হাইস্কুলের পড়ুয়া কমতে শুরু করল। এর পর কী হবে, জানি না।”

জেলা জুড়ে এমন উদাহরণ কয়েকশো। সেবাগ্রাম শ্রীকৃষ্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুমিতা সরকার জানাচ্ছেন, করোনার পর নতুন করে যখন স্কুল খুলেছিল, পড়ুয়ার অভাবে সেবাগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয় তুলে দেওয়া হয়।

এবিপিটিএ-র নদিয়া জেলা সম্পাদক অর্চনা বিশ্বাস বলেন, “আমাদের আশঙ্কা, তালিকাভুক্ত স্কুলগুলি তুলে দেওয়া হবে। এমন উদাহরণ প্রচুর আছে। গত বছরই জেলায় তিনটি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ছাত্রের অভাবে। সংযুক্তির কথা বললেও আদতে তা হয়নি।” তাঁর দাবি, “এটা তো পরিকল্পিত ব্যাপার। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে পড়াশোনা বেসরকারি হাতে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ধাপে ধাপে এ সব করা হচ্ছে।” তাঁদের অভিযোগ, সংগঠনের তরফে একাধিক বার নানা বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেউ সে সবে কান দেয়নি। উল্টে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে ওই সব স্কুলের ফেরার পথটাও সরকার বন্ধ করে দিয়েছে।

তবে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নদিয়া জেলা সভাপতি জয়ন্ত সাহার দাবি, “রাজ্য সরকার নানা ভাবে চেষ্টা করছে ওই সব স্কুলগুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে।” অভিভাবকদের একটা অংশ ইদানীং বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের দিকে ঝুঁকেছেন। তাঁদের সবার আগে বুঝতে হবে, বেশির ভাগ সরকারি স্কুলের পঠনপাঠন অনেক ভাল।” শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন স্বীকার করে তিনি দাবি করেন, “সেটা সরকার করতেও চায়। আমরা আশাবাদী, নতুন শিক্ষক নিয়োগ হবে এবং ফের ওই সব স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।”

Nadia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy