Advertisement
১৯ মে ২০২৪
WB panchayat Election 2023

তৃণমূল ছেড়ে যোগ সিপিএম, বিজেপিতে

প্রায় চারশো পরিবার তৃণমূল ছেড়ে তাদের দলে যোগ দিয়েছে বলে সিপিএম সূত্রে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনায় ভালুকায় তৃণমূল কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়ে গেল বলে মনে করছেন অনেকেই।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩ ০৮:২৫
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দলবদল চলছেই। তা কেন্দ্র করে প্রতি মুহূর্তে বদলাচ্ছে রাজনৈতিক হিসেবনাকেশ।

যেমন, ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জেলে থাকা এক তৃণমূল নেতার পরিজন ও অনুগামীরা সোমবার যোগ দিলেন সিপিএমে। প্রায় চারশো পরিবার তৃণমূল ছেড়ে তাদের দলে যোগ দিয়েছে বলে সিপিএম সূত্রে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনায় ভালুকায় তৃণমূল কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়ে গেল বলে মনে করছেন অনেকেই।

আবার গত শনিবার নবদ্বীপের মায়াপুর-বামুনপুকুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য প্রবীর ঘোষ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। গত পঞ্চায়েত ভোটে তিনি ইদ্রাকপুর অঞ্চলের ৭ নম্বর বুথ থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করে জিতেছিলেন। এই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগে ওই মায়াপুর-বামুনপুকুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের চরকাষ্ঠশালী অঞ্চল থেকে বেশ কিছু তৃণমুল কর্মী-সমর্থক সিপিএমে যোগদান করেন। তাঁদের অনেকেই তৃণমূলের দক্ষ সংগঠক বলে এলাকায় পরিচিত ছিলেন।

কোতোয়ালি থানার ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের আনন্দবাস রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। গ্রামে প্রায় ১ হাজার পরিবারের বাস। ছ’টি বুথ। এগুলির উপরেই ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবিষ্যৎ অনেকটা নির্ভর করে। ২০১১ সালের পর থেকেই গোটা গ্রাম ছিল বিরোধী শূন্য। কিন্তু দলের অন্দরেই এখানে গোষ্ঠী কোন্দলে অশান্তি লেগেই থাকত।

তৃণমূলের বিবাদমান দুই গোষ্ঠীর এক দিকে ছিলেন হবিজুর মণ্ডল আর অন্য দিকে জিন্নাত শেখ। সম্প্রতি এই দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। পুলিশ হবিজুরকে গ্রেফতার করে। কিন্তু জিন্নাতকে স্পর্শ করে না। সেই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে হবিজুরের পরিবারের সদস্য ও অনুগামীরা সিপিএমে যোগ দিলেন। সিপিএমের কৃষ্ণনগর এরিয়া কমিটির সদস্য প্রবীর মিত্র বলেন,“হবিজুরের পরিবারের সঙ্গে আরও ৪০০ পরিবারে তৃণমূল ছেড়ে আমাদের দলে যোগ দিল। ভয়ে যাঁরা প্রকাশ্যে যোগ দিতে পারলেন না তাঁরা ব্যালট বাক্সে জবাব দেবেন।”

হবিজুরের ছেলে সামিম মণ্ডলের কথায়,“তৃণমূল শুধু আমাদের সঙ্গে নয়, গোটা গ্রামের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। গোটা গ্রাম আজ তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।” তৃণমূলের কৃষ্ণনগর ১ ব্লক সভাপতি কার্তিক ঘোষ অবশ্য বলেন,“এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”

আবার নবদ্বীপে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করা প্রসঙ্গে প্রবীর ঘোষের বক্তব্য, ‘‘রাজনীতিতে এসেছিলাম মানুষের জন্য কাজ করব বলে। কিন্তু দেখলাম, তৃণমূলে সবাই চোর। কয়লা, মাটি চুরি ছাড়া আর কিছু হয় না। এ সব নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে দেখি, নেতারা অন্য রকম ভাষায় কথা বলছেন। ঘেন্নায় দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করলাম।’’ প্রবীরের দাবি, তাঁর সঙ্গে অন্তত ৫০টি পরিবার এখন থেকে বিজেপির সঙ্গে থাকবে। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূল নেতা তাপস ঘোষ কি ভাঙনে উদ্বিগ্ন? তাপস অবশ্য বলেন, ‘‘ও আবার দলত্যাগ করবে কী! ওকে কয়েক মাস আগেই দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তার পর বহু বার আমাদের কাছে এসেছিল দলে ঢোকার জন্য। কিন্তু সুবিধা করতে পারেনি।”

কেন তাড়ানো হয়েছিল প্রবীর ঘোষকে? তাপসের দাবি, ‘‘সুদের কারবার করতে গিয়ে অসম্ভব খারাপ ব্যবহার করত লোকের সঙ্গে।’’

দল তাড়িয়ে দিয়েছে কিনা সে প্রশ্নের জবাব অবশ্য এড়িয়ে গিয়েছেন প্রবীর। আর তাঁর যোগদান সম্পর্কে বিপির রাজ্য কমিটির সদস্য গৌতম পাল বলেছেন, ‘‘কাউকে ভোটে টিকিট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি দলে নেয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

WB panchayat Election 2023 TMC CPIM BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE