গাড়িতে নীলবাতি লাগিয়ে বিতর্কের মুখে নদিয়ার শান্তিপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক পূজা মৈত্র। প্রশাসনের তরফে তা গর্হিত বলে জানানো হলেও, পূজার দাবি, “এতে দোষের কিছু নেই।” যদিও শনিবার জেলাশাসক এস অরুণপ্রসাদ বলেন, “এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, বেশ কয়েক বছর ধরে শান্তিপুরে ওই পদে রয়েছেন রানাঘাট শহরের বাসিন্দা পূজা। তাঁর লাল ও নীল রঙের দু’টি গাড়ি আছে, দু’টির মাথাতেই নীলবাতি লাগানো। সাধারণত নীল গাড়িটিতেই তিনি রোজ বাড়ি থেকে তাঁর কর্মস্থল ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতায়াত করেন। অভিযোগ, ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের সময়েও গাড়িতে লাগানো থাকে ওই নীলবাতি।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ সংগঠন ‘প্রগ্রেসিভ হেল্থ অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে সম্প্রতি মনোনীত পূজা বলেন, “সরকারি ভাবে কোনও গাড়ি পাইনি। ব্যক্তিগত দু’টি গাড়িতেই নীলবাতি লাগিয়েছি।” তাঁর দাবি, “আমি জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। তাই গাড়িতে নীলবাতি ব্যবহারে দোষের কিছু নেই।” যদিও আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের গাড়িতে নীলবাতি লাগানো যায় না।
নদিয়ার সহকারী মুখ্য জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক (রানাঘাট মহকুমা) পুষ্পেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, “মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বাদে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আর কোনও আধিকারিক নীলবাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না। আমিও না।” রানাঘাট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “নীলবাতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দিষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। তা লঙ্ঘন করা কাম্য নয়।”
এ ব্যাপারে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র সোমনাথ করের কটাক্ষ, “তৃণমূলের রাজত্বে সবই সম্ভব।” শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, “বিষয়টি জানি না। তাই মন্তব্য করব না।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)