Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ক্ষত বুকে জেগে আছে শীর্ণ ভৈরব

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোটা বিষয়টি হচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনের মদতে। তারা কেউ ফিরেও তাকায় না নদের দিকে। ফলে ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে ভৈরবের চরিত্র। কোথাও কোথাও তৈরি হচ্ছে বড় গর্ত, কাটা পড়ছে পাড়ের মাটি।

এ ভাবেই লুট হচ্ছে নদীর বালি। ইসলামপুরে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

এ ভাবেই লুট হচ্ছে নদীর বালি। ইসলামপুরে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
ইসলামপুর শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:০০
Share: Save:

মাটিতে রক্ষা নেই, দোসর বালি। মাটিতে যেমন টাকা আছে, বালিতেও তাই। আর সেই কারণেই সন্ধ্যা নামতেই নদের পাড়ে হাজির হয়ে যাচ্ছে জেসিবি আর ট্রাক্টর। তার পরে এলাকা একটু সুনসান হয়ে গেলেই জেসিবি, ট্রাক্টর নেমে পড়ছে ভৈরবের বুকে। রাতের অন্ধকারে নদের বুক থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে মাটি এবং বালি। একটা সময় দিনের আলোয় এই কারবার চললেও এখন রানিনগর ১ ব্লকে ওই নদে রাতের অন্ধকারেই চলছে বালি পাচারের কাজ। বালি মাফিয়াদের সৌজন্যে সেই বালি রাতেই পৌঁছে যাচ্ছে এলাকার ইটভাটা থেকে নির্মাণ কিংবা রাস্তার কাজে। ভোরের আলো ফোটার আগে নদ ফাঁকা। শুধু ক্ষত বুকে জেগে থাকে শীর্ণ ভৈরব।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোটা বিষয়টি হচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনের মদতে। তারা কেউ ফিরেও তাকায় না নদের দিকে। ফলে ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে ভৈরবের চরিত্র। কোথাও কোথাও তৈরি হচ্ছে বড় গর্ত, কাটা পড়ছে পাড়ের মাটি। আর এর ফলেই ভাঙনের আশঙ্কায় দিন গুনছে ভৈরবের পাড়ের বাসিন্দারা। যদিও ডোমকলের মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক মহম্মদ ইকবাল বলছেন, ‘‘আমাদের কাছে রাতের অন্ধকারে এমন বালি তোলার কোনও খবর নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেব।’’

ভৈরব বা পদ্মা থেকে বালি লুটের ঘটনা নতুন নয়। তবে লাল বালির দাম চড়া হতেই ভৈরবের বালির কদর বেড়েছে অনেকটা। রানিনগর ব্লকের এক পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ভৈরব নদ এখন বালি মাফিয়াদের স্বর্গরাজ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক গাড়ি বালি তুলতে পারলেই ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা নগদ মিলছে। কেবল জেসিবি আর ট্রাক্টর ভাড়া করলেই কেল্লা ফতে। ভৈরবের পাড়ের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘রাতভর বাড়ির পাশ দিয়ে চলে ট্রাক্টর। গ্রামের রাস্তাও খারাপ হচ্ছে ওদের দাপটে। প্রতিবাদেও কোনও লাভ হয়নি। উল্টে আমাদেরই বিপদ বাড়তে লাগল।’’ কেবল ওই বাসিন্দাই নন, বালি ও মাটি মাফিয়াদের ভয়ে এখন রানিনগর এলাকার কেউই মুখ খুলতে চাইছেন না। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘ কোথাও বলে কোনও লাভ নেই। ওদের পিছনে আছে প্রশাসন, পুলিশ ও রাজনীতির কারবারিরা। নইলে এত সাহস ওরা পায় কী করে? আর দিনের পর দিন এ সব দেখেও কী করেই বা চুপ করে থাকে পুলিশ-প্রশাসন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Smuggling Sand Soil Bhairav River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE