Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বর্ষ বিদায় আহারে, নতুনকে বরণ হুল্লোড়ে

‘শত্রুর মুখে দিয়া ছাই, ছাতু উড়াইয়া বাড়ি যাই’ বলে কুলোর বাতাস দিয়ে চৈত্র সংক্রান্তির দিন বাংলা বছরকে বিদেয় করা সহজ। কিন্তু ইংরেজি বছরের ব্যাপারটাই আলাদা। খাঁটি বিলিতি কায়দায় শেষ ডিসেম্বরের মধ্যরাতে পুরানো বছরকে বিদায় জানাতে প্রস্তুত বহরমপুর থেকে বেথুয়াডহরি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৪১
Share: Save:

‘শত্রুর মুখে দিয়া ছাই, ছাতু উড়াইয়া বাড়ি যাই’ বলে কুলোর বাতাস দিয়ে চৈত্র সংক্রান্তির দিন বাংলা বছরকে বিদেয় করা সহজ। কিন্তু ইংরেজি বছরের ব্যাপারটাই আলাদা। খাঁটি বিলিতি কায়দায় শেষ ডিসেম্বরের মধ্যরাতে পুরানো বছরকে বিদায় জানাতে প্রস্তুত বহরমপুর থেকে বেথুয়াডহরি।

নববর্ষ, বিজয়া দশমী, জামাইষষ্ঠী বা ভাইফোঁটার মতো উৎসবের চিরাচরিত খাবারের বদলে আস্ত একটা বেকারি সাজিয়ে ফেলেছে কৃষ্ণনগরের একটি দোকান। কুকি, চকোলেট, কেক, পাউরুটি, মাফিনের বিচিত্র সম্ভার নিয়ে তৈরি তারা। দোকানের মালিক অরিন্দম গড়াই জানাচ্ছেন, নতুন বছরের শুরুতে একটা স্বাদবদলের ইচ্ছে থেকে এই পরিকল্পনা। তাঁদের নিজস্ব বেকারিতে তৈরি হয়েছে ডান্ডি কেক, প্লাম কেক, রিচ ফ্রুট কেক। মাফিনে তাঁরা রেখেছেন রকমারি পদ। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হট চকো লাভা কেক। ওভেন থেকে বের করা টাটকা কেকে কামড় বসালেই ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছে হট চকোলেট। চকোলেটের সম্ভারে আছে সুইট চকোলেট মেমোরি, চকোলেট গিফট হ্যাম্পার। তবে নবদ্বীপের নতুন একটি রেস্তোরাঁর রঞ্জিত দেবনাথ চিরচরিত ডিশ সাজাচ্ছেন বর্ষবরণের সন্ধ্যায়। তিনি জানান, নানা তন্দুর ও নানের উপরই জোর দিচ্ছেন তাঁরা। কড়া শীতের রাতে গরম বাটার তন্দুরি নান বা মশলা নানের সঙ্গে চিকেন হান্ডি বা চিকেন দো-পেঁয়াজি বা চিকেন মশালার যুগলবন্দির চাহিদা রয়েছে।

পয়লা জানুয়ারি নবদ্বীপের অন্যতম পুরনো একটি হোটেল ইলিশ থেকে চিংড়ি, কচি পাঁঠা থেকে রুই কাতলার নানা পদে সাজাচ্ছেন তাঁদের থালা। খাসির মাংস বা কষা মাংসের জন্য ভীষণ জনপ্রিয় এই হোটেলের মালিক তপন দত্ত জানাচ্ছেন, মাংস ছাড়াও ইলিশের ভাপা, চিংড়ির মালাইকারীর মতো চিরাচরিত দিশি খাবারেই ইংরেজি নববর্ষকে বরণ করা হবে। উৎসবের মেজাজ ধরে রাখতে রং-বেরঙের আলোয় সেজে উঠেছে বহরমপুরের বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁ। মেনু তালিকাতেও রয়েছে নতুনত্বের স্বাদ। পুরনো বছরকে বিদায় জানানোর সঙ্গে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ৩১ ডিসেম্বর বর্ষশেষের উৎসবে গা ভাসাতে ফি-বছর পুর-নাগরিকদের উপচে পড়া ভিড় থাকে নতুন সাজে সেজে ওঠা হোটেল-রেস্তোরাঁগুলিতে। সেখানে সন্ধ্যা থেকে রাত গভীর পর্যন্ত চলে হুল্লোড়। এ বছরও ভিড়ের অপেক্ষায় রয়েছে হোটেল ও রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ।

বহরমপুর মোহন মোড়ে এক রেস্তোরাঁর কর্ণধার সৌমেন সরকার জানান, পাঁপড়ের উপরে ডিমের ওমলেট করে তার উপরে কিমা করা মশালাদার মুরগির মাংস ফ্রাই করে রোলের মতো পরিবেশন করা হবে। থাকছে মশলাদার খাসির মাংসের নলিতে নিহারি গ্রেভিতে তৈরি মাটন মহারাজা। আফগানি তন্দুরি চিকেন, ক্লে-ওভেন রোস্টেড উইংস, ব্রকোলি ইরানি টিক্কা, পনির হটপ্যান যেমন রয়েছে, তেমনি থাকছে চিকেন আবলাতন। উষ্ণতা ছড়াতে থাকবে আইসক্রিম কেক। অন্য দিকে বহরমপুরের আর একটি রেস্তোরাঁ বর্ষশেষের দুপুরে মোচার কোপ্তা, আলু এঁচোড় চিংড়ি, দই পটল, দই বেগুন, দেশি চিকেন কষা, চিংড়ি মালাইকারির মত বাঙালিয়ানা খাবারে পাত সাজাচ্ছে। রেস্তোরাঁ মালিকদের অন্যতম অরিন্দম মণ্ডল জানাচ্ছেন, উৎসবের রাতের জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে মাটন আইসল্যান্ড কাবাব, মুগ চাটনি নাইডু, মোতি পোলাও, সিজলার, স্টেয়ার ফ্রাই চিকেন, মাটন সৌদি, চিকেন পাতিয়ালা, চিকেন পাহাড়ি মশালা, মাটন পাহাড়ি মশালা, মাটন-চিকেন চাঁদনি কাবাব, চিকেন কস্তুরি।

বহরমপুরের এক রেস্তোরাঁ মালিক শৈবাল রায় জানান, ফিউশন ফুডের রকমারি রান্না থাকছে। বর্ষবরণ রাতে ইন্দো-চাইনিজ ফিউশনে তৈরি সুইট তন্দুর লেগ, ইংলিশ-পাক ফিউশনে ল্যাম্ব কাবাব ইন ব্রাউন শস, ইন্দো কন্টিনেন্টাল ফিউশন সুইট রোল, ইন্দো-আফগান ফিউশন মাটন কিমা কাবাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Food New Year
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE