Advertisement
০৭ মে ২০২৪
soil mafia

গভীর রাতে যন্ত্রে চলছে মাটি কাটা, শীত পড়তে সক্রিয় মাটি মাফিয়ারা

শীতের শুরুতে বিভিন্ন ইটভাটায় ইটপাড়ার কাজ শুরু হতেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে মাটি মাফিয়ারা। অভিযোগ, তাদের দাপটে আবাদি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে।

আবাদি জমির মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। মাগুড়ায়। ছবি: মফিদুল ইসলাম

আবাদি জমির মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। মাগুড়ায়। ছবি: মফিদুল ইসলাম

নিজস্ব সংবাদদাতা
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:৩২
Share: Save:

মাটি-মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য ফের বেড়েছে হরিহরপাড়ার বিভিন্ন এলাকায়। অভিযোগ, মাটি মাফিয়াদের নজর পড়ায় মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে উর্বর জমি থেকেও। রাতারাতি পুকুরে পরিণত হচ্ছে সেই সব আবাদি জমি।

স্থানীয় সূত্রে খবর, শীতের শুরুতে বিভিন্ন ইটভাটায় ইটপাড়ার কাজ শুরু হতেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে মাটি মাফিয়ারা। অভিযোগ, তাদের দাপটে আবাদি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ সেই মাটি কিনছেন ভাটা মালিকদের কেউ কেউ। মাটি কাটার যন্ত্রে কোপ পড়ছে নদীর পাড়ের জমিতেও। বেশ কিছু দিন ধরেই হরিহরপাড়ার রুকুনপুর, মাগুড়া, স্বরূপপুর, তরতিপুর, বারুইপাড়া, খোসালপুর এলাকায় রমরমা বেড়েছে মাটি মাফিয়াদের, এমনই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। পুলিশ, প্রশাসনের লোকজনের নজর এড়িয়ে গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত চলছে মাটি কাটার কাজ। গ্রামীণ এলাকায় কোথাও আবার সে সবের তোয়াক্কা না করেই দিনের বেলাতেই চলছে মাটি কাটার কাজ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্বরূপপুর, রুকুনপুরে ট্র্যাক্টরের পর ট্র্যাক্টরে মাটি কেটে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে মাটি মাফিয়াদের। অভিযোগ উঠছে, সরকারি কোষাগার বা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে রাজস্ব ফাঁকি দিয়েই দেদার চলছে মাটি কাটার কাজ। কখনও আবার নিয়ম বহির্ভূত ভাবে উর্বর জমির চরিত্র বদল করে মাটি কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কৃষিজমি কমছে তো বটেই, মাটি কাটায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পাশের জমির মালিকরাও।

এ দিন দুপুরে মাগুড়ায় গিয়ে দেখা গেল, সর্ষে ও মুসুর খেত থেকে চলছে মাটি কাটার কাজ। একটি মাটি কাটার যন্ত্র প্রায় দশ-বারো ফুট গভীর করে চাষের জমি থেকে মাটি কাটছে। একাধিক ট্র‍্যাক্টরে সেই মাটি চলে যাচ্ছে বিক্রি হয়ে। পাশের খেতের সর্ষে, মুসুরও এর জেরে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। ওই এলাকার এক জমি মালিক বলেন, ‘‘ভাল দাম পেয়ে মাটি বিক্রি করে দিয়েছি।’’ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে তিনি রাজস্ব দেননি বলেও স্বীকার করে নেন। অভিযোগ, প্রায় সব মাটিই বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। ওই এলাকার এক ইটভাটা মালিক বলেন, ‘‘মাটি ছাড়া ইট তৈরি হবে কী করে? তাই নানা ভাবে বুঝিয়ে মাটি কাটতে হয়।’’ স্থানীয়দের একাংশের দাবি, অধিকাংশ মাটিই চলে যায় জেলার বিভিন্ন ইটভাটায়। ভাটা মালিকরা বছরে নির্দিষ্ট অঙ্কের রাজস্ব জমা দিলেও উর্বর আবাদি জমি থেকে মাটি কাটার জন্য কোনও রাজস্ব জমা দেন না বলে অভিযোগ। এক অর্থে তাই অবৈধ ভাবেই চলছে এই মাটি বেচাকেনার কারবার। ইটভাটা মালিকদের সংগঠনের হরিহরপাড়া ব্লকের সম্পাদক সেলিম রেজা বলেন, ‘‘আবাদি জমি, নদীর পাড়ের মাটি যাতে কাটা না হয়, সে জন্য সব ইটভাটা মালিকদের আমরা বলে থাকি। এক্ষেত্রে কী হয়েছে, তা জানি না। খোঁজ নিচ্ছি। নিয়ম মেনে মাটি কাটার জন্যে ভাটা মালিকদের ফের বলা হবে।’’ অন্যদিকে, হরিহরপাড়া ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অমিত দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারপর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

soil mafia Murshidabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE