Advertisement
E-Paper

TMC: পরপর নেতা খুন, চিন্তায় শাসক দল

যদিও প্রত্যেক ঘটনায় অভিযোগ, শাসক দলের নেতাদের খুন করছে শাসক দলের কর্মীরাই।

কৌশিক সাহা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:২৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

তৃণমূল নেতাকে খুনের এক দিন পরেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। শুক্রবার রাতে কান্দির আন্দুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্যা তৃণমূলের যমুনা সাহার স্বামী নেপাল সাহাকে (৪৭) ধারাল অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুন করার ঘটনা ঘটেছে। মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, “ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোন যোগ নেই বলেই মনে হয়েছে। অভিযুক্তরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলেও মনে হচ্ছে।”

তৃণমূল নেতা নেপাল সাহার খুনের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। গত চার মাস ধরে কান্দি মহকুমা এলাকায় একের পর এক তৃণমূল নেতা খুন হয়েছেন। কেউ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, কেউ আবার পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী। বিধানসভা ভোটের পরে পরেই বড়ঞা ব্লকের কুরুন্নরুন গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য মোস্তফা শেখকে (৪৬) দিনের বেলায় ফাঁকা রাস্তায় গুলি ও বোমা মেরে খুন করার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের অনেককেই গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ। সালার থানার কাগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্যা তৃণমূলের রূপালী শেখের স্বামী মির হাবিবুর রহমানকে (৫২) পাশের গ্রাম বহড়া গ্রামে জনবহুল এলাকায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় কয়েকজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ। একই ভাবে এদিন কান্দি থানার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী নেপাল সাহা খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ‘ব্যক্তিগত’ অথবা ‘পুরনো বিবাদ’ এর জেরে খুনের ঘটনা ঘটেছে। যদিও প্রত্যেক ঘটনায় অভিযোগ, শাসক দলের নেতাদের খুন করছে শাসক দলের কর্মীরাই। দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় বলেন, “দলের লোককে দলের লোকেরা খুন করছে, কিন্তু তাতে কোনও ভাবেই দলীয় কোন্দলের তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুক, তাতে দলের কেউ জড়িত থাকলে দল তাদের কোন ভাবেই সমর্থন করবে না।”

শুক্রবার রাতে পেশায় রেশন ডিলার নেপাল সাহা দুর্গাপুর গ্রামের রেশনের দোকান বন্ধ করে সন্তোষপুর গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। সেই সময় দুষ্কৃতীরা নেপালবাবুর রাস্তা আটকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে পেটে, ঘাড়ে ও গলায় কোপ মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই তৃণমূল নেতার। দুষ্কৃতীরা গুলি চালালেও তৃণমূল নেতার শরীরে গুলি লাগার কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলেও দাবি পুলিশের।

নেপালের স্ত্রী যমুনা সাহা বলেন, “আমার স্বামী এলাকায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখে চলতেন, তাতে দলের সংগঠন মজবুত হয়েছিল। কিন্তু সে জন্য কয়েক জনের কুনজরে পড়তে হয়েছিল। ওরাই আমার স্বামীকে খুন করে এলাকায় সন্ত্রাস কায়েম করতে চাইছে। পুলিশকে সবটা জানিয়েছি।” অভিযুক্তেরা ওই অঞ্চলের পুরোন তৃণমূল। ওদের নেতৃত্বেই ওই অঞ্চলে তৃণমূল সংগঠন হয়েছিল। সেই সময় নেপাল ছিলেন কংগ্রেসে। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ার পর ওই অঞ্চলে তথা দুর্গাপুর, সন্তোষপুর গ্রামের তৃণমূল নেতা হয়ে উঠেন নেপাল। ধীরে ধীরে দলের মধ্যেই কোণঠাসা হয়ে পরেই অনেকের সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতা তৈরি হয় বলেও রাজনৈতিক কারবারিদের মত।

যদিও কান্দির বিধায়ক তৃণমূলের অপূর্ব সরকার বলেন, “নেপাল দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তৃণমূলের সক্রিয় নেতা বলা যেতে পারে। নেপাল কে যে বা যারা খুন করেছে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করুক এটাই আমরা চাই। ওই ঘটনার সঙ্গে দলীয় দ্বন্দ্ব নেই, তাছাড়া দলের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই।” পুলিশ এদিন ঘটনা স্থলে তদন্ত করে। পুলিশের দাবি প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে।

TMC Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy