সদ্য শেষ হওয়া মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টা খানেকের মধ্যে প্রশ্নের ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় প্রশ্নের মুখে পড়ে শিক্ষা দফতর। এ বার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে মুর্শিদাবাদ-সহ রাজ্যের মোট ৬টি জেলার বেশ কিছু চিহ্নিত এলাকায় ইন্টারনেটে তথ্য আদান প্রদান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।
পরীক্ষার দিনগুলিতে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ইন্টারনেটে তথ্য আদানপ্রদান বন্ধ থাকবে। রাজ্যের হোম ও হিল অ্যাফেয়ারের প্রধান সচিব অত্রি ভট্টাচার্য সোমবার মোবাইল সংস্থার আধিকারিকদের এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ৬টি জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। শুধু ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ নয়, স্পর্শকাতর পরীক্ষাকেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টর দেওয়া হচ্ছে।
চিঠিতে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা, জলঙ্গি এবং ফরাক্কার নয়নসুখ এলাকায় পরীক্ষা চলাকালীন ইন্টারনেটে তথ্য আদান প্রদান পরিষেবা বন্ধ থাকবে বলে রাজ্যের হোম ও হিল অ্যাফেয়ার থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে মালদহের কালিয়াচক ১, ২ ও ৩ ব্লকের চারটি পিনকোড এলাকা, নদিয়ার বগুলা ও করিমপুর একটি করে ও চাপড়ার তিনটি পিনকোড এলাকা, উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাট, গোবরডাঙা, মিনাখাঁ, হারোয়া এলাকার একটি করে পিনকোড এলাকা, পুর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার একটি পিনকোড এলাকা, উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি, ইসলামপুর, চাকুলিয়া ও গোয়ালপখর এলাকার একটি করে পিনকোড এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে।
পরীক্ষা কেন্দ্র: ১১৭
• স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্র: ৯ (ভিডিয়োগ্রাফি করা হবে। থাকবে মোবাইল ডিটেক্টর)
• ছাত্র: ২৩৮৪৪(৪৩.২২ শতাংশ)
• ছাত্রী: ৩১৩২০(৫৬.৭৮শতাংশ)
• পরীক্ষা চলবে: ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ মার্চ। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা ১৫ মিনিট।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এ মাসের ২৬, ২৮, মার্চ মাসের ২, ৫, ৭, ৯, ১১ ও ১৩ তারিখ পর্যন্ত সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওই এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে।
পরীক্ষার জন্য ইন্টারনেটে তথ্য আদানপ্রদান বন্ধ থাকবে তা অবশ্য সরাসরি নির্দেশিকায় বলা হয়নি। প্রধান সচিবের চিঠিতে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী রাজ্যের কিছু এলাকায়া আগামী কয়েক দিনের জন্য ইন্টারনেট ও ভয়েস ওভার ইন্টারনেট টেলিফোনির মাধ্যমে বেআইনি কাজ কর্মে ব্যবহার হতে পারে। সেই জন্য আগাম সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিতে এই পদক্ষেপ। তবে ভয়েস কল বা এসএমএসের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকছেনা। জেলা প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য বলছেন, পরীক্ষায় জন্য সাময়িক ভাবে এই পরিষেবা বন্ধ রাখা হচ্ছে।
মাধ্যমিকের মতো উচ্চ মাধ্যমিকেও এগিয়ে ছাত্রীরা। মঙ্গলবার রাজ্য জুড়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। তাতে ছাত্রদের তুলনায় ১৩.৫৬ শতাংশ বেশি ছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠছে ছাত্রের তুলনায় ছাত্রী বেশি কেন? শিক্ষা দফতরের কর্তারা জানান, গত কয়েক বছর থেকে মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে মাধ্যমিকে পাশের দিক থেকে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে। ফলে উচ্চমাধ্যমিকে সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
• বেলডাঙা (পিনকোড ৭৪২১৩৩), জলঙ্গি (পিনকোড ৭৪২৩০৫ ও ৭৪২৩০৬)
• ফরাক্কার নয়নসুখ (পিনকোড ৭৪২২০২) এলাকায় পরীক্ষার দিনগুলিতে ইন্টারনেট তথ্য আদানপ্রদান বন্ধ থাকবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কন্ট্রোলরুম— বহরমপুর: ০৩৪৮২-২৫১৮৮৩
কলকাতা: ০৩৩-২৩৩৭৪৯৮৪, ০৩৩-২৩৩৭৪৯৮৫
লালগোলার এক প্রধান শিক্ষক বলছেন, ‘‘কন্যাশ্রী থেকে শুরু করে সবুজসাথীর মতো প্রকল্প রয়েছে। ফলে মেয়েদের মধ্যে পড়াশোনার আগ্রহ বেড়েছে। আর্থিক অনটনের জেরে কম বয়সে পড়াশোনা ছেড়ে মুর্শিদাবাদের অনেক পড়ুয়া ভিনরাজ্যে কাজে পাড়ি দিচ্ছে। ফলে ছাত্ররা পিছিয়ে পড়ছে।’’
জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলেন, ‘‘সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলার ৯টি স্পর্শকাতর পরীক্ষাকেন্দ্রে ভিডিয়োগ্রাফি-সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরিবহণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে বাস মালিক সংগঠন ও উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার সঙ্গে বৈঠকও করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy