Advertisement
E-Paper

প্রেমের চক্করে আক্রান্ত ছাত্রী

কলেজেরই চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্র লাগাতার উত্যক্ত করছিল প্রথম বর্ষের ছাত্রীটিকে। প্রতিবাদ করে কোনও লাভ হয়নি। শুরু হয় হুমকি। শেষ পর্যন্ত হস্টেল সুপারকে বিষয়টি জানান ওই ছাত্রী। আর হস্টেলে জানাজানির ফলই হল ভয়ানক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১৫

কলেজেরই চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্র লাগাতার উত্যক্ত করছিল প্রথম বর্ষের ছাত্রীটিকে। প্রতিবাদ করে কোনও লাভ হয়নি। শুরু হয় হুমকি। শেষ পর্যন্ত হস্টেল সুপারকে বিষয়টি জানান ওই ছাত্রী। আর হস্টেলে জানাজানির ফলই হল ভয়ানক।

অভিযোগ, চতুর্থ বর্ষের ছাত্রটির অতি ঘনিষ্ট এক বান্ধবী ও তার আট বন্ধু মিলে ওই তরুণীকে একটি ঘরে আটকে রেখে চরম শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালায়। ওই ছাত্রটির বিরুদ্ধে যাতে কোনও ভাবেই মুখ না খোলে মেয়েটি, চাপ দিতে থাকে তারা। প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত বুধবার কল্যাণী থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন ছাত্রীটা। তার পরে দু’দিন কেটে গেলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত তদন্ত শুরুই করেনি। অভিযোগ হয়েছে কলেজেও। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তারা তদন্ত শুরু করেছে। আতঙ্কিত ছাত্রীটি ধুবুলিয়ায় নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন।

তরুণী একটি বেসরকারি আইন কলেজের মেয়েদের হস্টেলে থাকেন। তাঁর অভিযোগ, ওই কলেজেরই চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মায়াপুরের বাসিন্দা মাফিজুল খান গত দু’মাস ধরে কলেজ যাতায়াতের পথে তাঁকে উত্যক্ত করছিল। প্রেমের প্রস্তাবও দেয়। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করায় মাফিজুল তাঁকে হুমকি দিতে শুরু করে। দিন কয়েক আগে তিনি হস্টেল সুপারকে জানান। অভিযোগের বিষয়টি হস্টেলে জানাজানি হয়ে যায়। ওই হস্টেলেই মাফিজুলের ঘনিষ্ট বান্ধবী থাকে।

প্রথম বর্ষের ছাত্রীটির অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ আট জন ছাত্রী এসে তাঁকে জের করে টেনে একটি ঘরে নিয়ে যায়। তার পর ঘর বন্ধ করে তাঁকে হুমকি দিতে থাকে, মাফিজুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যাবে না। বরং কলেজ কর্তৃপক্ষ জানতে চাইলে তাঁকে বলতে হবে, তিনিই মাফিজুলকে প্রমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মাফিজুল প্রত্যাখ্যান করায় তিনি সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। রাজি হননি তরুণী। তার পরেই শুরু হয় অত্যাচার। ফোন কেড়ে নিয়ে হোয়াটস অ্যাপে মাফিজুলের পাঠানো মেসেজ মুছে দেয় তারা। শেষে সুপার সুপ্রীতি সরকারকে ফোন করে বিষয়টি জানান প্রথম বর্ষের ছাত্রীটি। অভিযোগ পেয়ে এক মহিলাকে ওই ঘরে পাঠান তিনি। আট ছাত্রী ওই মহিলাকে জানিয়ে দেয়, তারা বিষয়টি বসে মিটিয়ে নিচ্ছে।

কিন্তু তার পরেই শুরু হয় মারধর। কোনও রকমে ওই ঘর থেকে বেরিয়ে নিজের ঘরে পালিয়ে যান প্রথম বর্ষের ছাত্রীটি। সেখান থেকে তাঁকে ধরে এনে ফের শুরু হয় অত্যাচার। তরুণী তাঁর বাড়িতে বিষয়টি জানান। তাঁর মা ওই আট জনকে ফোনে অনুরোধ করেন, তাঁর মেয়েকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। তাতেও কাজ হয়নি। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ কিশোরীর মা হস্টেলে এসে মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। তত ক্ষণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁকে জেএনএমে ভর্তি করা হয়। ওই ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, হস্টেল সুপার তাদের বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন।

অভিযুক্ত যুবক বা ওই ছাত্রীদের কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশ সুপার শিষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘আমি এই প্রথম শুনলাম। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ ওই আইন কলেজের অধ্যক্ষ তন্ময় সেন বলেন, ‘‘অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

হস্টেলের সুপার সুপ্রীতি সরকার অবশ্য অভিযুক্ত ছাত্রীদের পক্ষই নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘না না, সামান্য ঝগড়া হয়েছে। ওরা কিছু করেনি।’’ উল্টে তিনিই জানতে চান, ‘‘এত প্রশ্ন করা হচ্ছে কেন?’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমি তো ওদের হয়েই বলব। ওটাই আমার কাজ।’’

Physically Harrasement Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy