Advertisement
E-Paper

মাঠের মায়া ছাড়লে তবেই ভর্তি স্কুলে

শুধু তাই নয়, খাতায় কলমে চতুর্থ শ্রেণিতে উতরে গেলেও প্রায় নিরক্ষর পড়ুয়াদের জন্য ওই স্কুলে এ দিনই শুরু হল বিশেষ প্রশিক্ষণও।  কোচিংও শুরু করতে বাধ্য হল স্কুল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৬
অক্ষর-চেনা। নিজস্ব চিত্র

অক্ষর-চেনা। নিজস্ব চিত্র

হাইস্কুলে পা দিয়েই তাদের মুচলেকা লিখতে হচ্ছে— সাবালক না হলে বিয়ে নয় আর হ্যাঁ, শৌচকর্ম কখনওই মাঠে-ঘাটে নয়!

জঙ্গিপুরের জোতকমল হাইস্কুলে ভর্তি হতে আসা সব ছাত্র-ছাত্রীর পরিবারের লোকজনকেই এমনই মুচলেকা দিয়ে শনিবার নিতে হল ভর্তির ফর্ম।

শুধু তাই নয়, খাতায় কলমে চতুর্থ শ্রেণিতে উতরে গেলেও প্রায় নিরক্ষর পড়ুয়াদের জন্য ওই স্কুলে এ দিনই শুরু হল বিশেষ প্রশিক্ষণও। কোচিংও শুরু করতে বাধ্য হল স্কুল।

পিছিয়ে পড়া এলাকা। অষ্টম শ্রেণি ছুঁয়েই বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে এলাকায়। শৌচরকর্মের প্রশ্নেও সেই মাঠের অভ্য়াস যেন কাটছে না! তর্ক করার এই নয়া রাস্তা ছাড়া উপায় কি, জানাচ্ছেন স্কুল কর্তপক্ষ।

নয়াপাড়ার লালচাঁদ সেখ নিজের নাম লেখা তো দূরের কথা, নিজের স্কুলের নামটাও ঠিকমত বলতে পারছে না। নতুন জয়রামপুরের ইব্রাহিম সেখ তার নাম যে ‘ই’ দিয়ে শুরু তা জানলেও পরের বর্ণ লিখতে গিয়ে মায়ের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছে। প্রশিক্ষণটা শুরু হল এদের নিয়েই।

প্রাথমিক স্কুল থেকে চতুর্থ শ্রেনি পাশ করে হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য প্রায় ৪০০ আবেদন পত্র থেকে এ রকমই ৪৪ জন পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীর ভর্তি আটকে দিল জোতকমল হাইস্কুল। তাদের জন্য শুরু হওয়া এই বিশেষ কোচিং চলবে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিবশঙ্কর সাহা বলছেন, ‘‘এলাকায় সচেতনতার বড্ড অভাব রয়েছে বলেই বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীর বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন বাবা মা। বিয়ের পর যখন জানতে পারি, তখন আর করারও কিছু থাকে না। সেই কারণেই এই ধরণের মুচলেকা নেওয়া।’’

তাঁর অভিজ্ঞতাটা গত বছরের, বলছেন, ‘‘গত বছর সকলকেই ভর্তি করে নিলেও পরের অভিজ্ঞতা ভাল নয়। প্রায় সাড়ে চারশো ছাত্রের মধ্যে অন্তত ৭০ জন তাদের নাম পর্যন্ত লিখতে পারছিল না। সহপাঠীদের সঙ্গে ক্লাসের পঠন পাঠনে তাল মেলাতে না পারায় ক্রমশই পিছিয়ে পড়েছে তারা।’’

৭৫ বছরের প্রাচীণ ৩৩ নম্বর জোতকমল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৯৩ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য ১০ জন শিক্ষক। অর্থাৎ ২৯ জন ছাত্র প্রতি ১ জন শিক্ষক। তা সত্বে ১০ জন ছাত্র পিছিয়ে। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক রণজিৎ মালো বলছেন, “ওই পড়ুয়ারা স্কুলে ঠিক মতো আসত না। স্কুল থেকে ফিরে পড়াশুনোর পরিবেশও তেমন মেলে না। সব মিলিয়ে এখন এই অবস্থা।’’

toilet free admission school রঘুনাথগঞ্জ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy