সহ প্রতিবেদন- সামসুদ্দিন বিশ্বাস
কেউ বাড়ি থেকে নিয়ে আসে খেজুর পাতার চাটাই, আসন কিংবা চট। কারওর আবার তাও নেই। হাওয়াই চটির উপর বসেই ক্লাস করতে হয়।
নদিয়া-মুর্শিদাবাদের সিংহভাগ প্রাথমিক স্কুলের চেনা ছবি এটা। সে শীত হোক বা বর্ষা— মেঝেতেই বসে ক্লাস করতে হয় কচিকাঁচাদের। ব্যক্তিগত উদ্যোগে জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে কোনও কোনও স্কুলের বেঞ্চ জুটছে। তবে সামগ্রিক এই ছবি এ বার বদলাতে চাইছে জেলা প্রশাসন।
নদিয়া জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সব প্রাথমিক স্কুলেই এ বার বেঞ্চ দেওয়া হবে। তার জন্য প্রায় ন’কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে।
নদিয়া জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের হিসাব অনুযায়ী ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৮৮৪ জন পড়ুয়ার জন্য প্রায় ৩৭ হাজার ৩শো টি বেঞ্চ প্রয়োজন। জন প্রতিনিধি থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন তহবিল থেকে এই টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ায় মোট প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ৩৬৩৯। তার মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ স্কুলের বেঞ্চ রয়েছে। কিছু স্কুলে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে বেঞ্চ থাকলেও নিচু ক্লাসের পড়ুয়াদের সেই মেঝেতেই বসে লেখাপড়া করতে হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ জনপ্রতিনিধিদের চিঠি পাঠিয়ে বেঞ্চ কিনে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি কিছু কিছু স্কুলে বেঞ্চ কিনে দিলেও তা ছিল বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এবার জেলা প্রশাসন সব পড়ুয়াদের জন্য বেঞ্চের ব্যবস্থা করছে।
বাহাদুরপুর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা স্কুলের তরফে শতরঞ্চি কিনে পড়ুয়াদের বসার ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু সেটা ষথেষ্ট নয়। শীতে বাচ্চাগুলোর খুবই কষ্ট হয়।’’ জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায় বলেন, “পড়ুয়াদের কষ্টের কথা মাথায় রেখে আমরা প্রায় এক বছর ধরে বেঞ্চের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। বিচ্ছিন্নভাবে সাহায্যও পেয়েছি। তবে জেলা প্রশাসন যেভাবে সব পড়ুয়ার জন্য বেঞ্চের ব্যবস্থা করছে তা দৃষ্টান্ত।’’
এর আগেই অবশ্য কৃষ্ণনগর (উত্তর) কেন্দ্রের বিধায়ক অবনীমোহন জোয়ারদার তার এলাকায় সমস্ত প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের জন্য বেঞ্চ কিনে দিয়েছেন। চাকদহের বিধায়ক রত্না ঘোষ, হরিণঘাটার নীলিমা নাগ থেকে শুরু করে রানাঘাটের সাংসদ তাপস মণ্ডলের মতো কিছু জনপ্রতিনিধিও কিছু স্কুলকে বেঞ্চের টাকা দিয়েছেন।
জেলা শাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, “বিধায়ক, সাংসদের তহবিল ছাড়াও বিএডিপি, এমএসডিপি-সহ অন্যান্য একাধিক তহবিল থেকে নেব। জেলা পরিষদও টাকা দেবে।’’
একই অবস্থা মুর্শিদাবাদ জেলাতেও। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান দেবাশিস বৈশ্য জানান, জেলার সিংহভাগ প্রাথমিক স্কুলেই কোনও বেঞ্চ নেই। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি রাজ্য সরকার চিঠি পাঠিয়ে কোন স্কুলে কী কী দরকার তা জানতে চেয়েছে। আমরা তার তালিকা তৈরি করে শিগগিরই পাঠাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy