সাত সকালে স্কুলে এসে ঠিক মতো দাঁড়াতেও পারছিলেন না তিনি। তারপর পুলিশ, গ্রামের লোকজনের বিক্ষোভে তিনি ঘাবড়ে গেলেও নেশা কিন্তু কাটেনি। পুলিশ ভ্যানে ওঠার সময়ও পা টলছিল সাগরদিঘির গোপ ভূমিহর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামানের। স্কুলভর্তি পড়ুয়া ও সহশিক্ষকদের সামনে ওই শিক্ষকের এমন কাণ্ডে ফুঁসছিল গোটা গ্রাম।
তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের রাগও কমে যায়। বিকেলে গ্রামের বেশ কিছু লোকজন যান মনিগ্রাম ক্যাম্পে। সেখানেই আটক ছিলেন প্রধান শিক্ষক। ততক্ষণে তাঁর নেশাও ছুটে গিয়েছে। গ্রামের লোকজনকে দেখতেই তিনি বলেন, ‘‘এমন ভুল আর হবে না। আমাকে এ বারের মতো ক্ষমা করে দিন।’’
তা শুনে আর কোনও ‘বাড়াবাড়ি’ করতে চাননি গ্রামের লোকজন। তাঁরা জানাচ্ছেন, সকালে যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তাতে পুলিশকে না জানালে ব্যাপারটা সামাল দেওয়া যেত না। কিন্তু, এরপরে তাঁরা আর পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ করতে চাননি। কেন?
গ্রামবাসীদের একাংশের কথায়, ‘‘এমনিতেই এই স্কুলে মাত্র দু’জন শিক্ষক আছেন। তাঁরাই চারটে ক্লাস সামলান। এ বার থানা-পুলিশ করলে এই শিক্ষককে হয়তো প্রথমে গ্রেফতার করা হবে। তারপর সাসপেন্ডও হতে পারে। এতে ক্ষতি হবে ছেলেমেয়েদেরই। তাছাড়া ওই শিক্ষকও ক্ষমা চেয়েছেন। ফলে আমরাও একটা সুযোগ দিচ্ছি।’’
এ দিন গ্রামবাসীদের সঙ্গে ছিলেন ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়েরই গ্রাম শিক্ষা কমিটির সম্পাদক তরুণ মণ্ডল। তিনিই বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান শিক্ষকের টলোমলো অবস্থার কথা সাগরদিঘি থানায় জানিয়েছিলেন। এ দিন তরুণবাবু জানান, ওই শিক্ষক মদ্যপ অবস্থায় স্কুলে এসে মোটেও ঠিক কাজ করেননি। তাঁকে দেখেই স্কুলে এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অভিভাবক ও গ্রামের লোকজন। তার পরেই পুলিশ তাঁকে আটক করে নিয়ে যায় মনিগ্রাম পুলিশ ক্যাম্পে। তরুণবাবুর কথায়, ‘‘এ বারের মতো গ্রামের লোকজন ওই শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন। তবে প্রধান শিক্ষককেও বলা হয়েছে, এখন যেন কয়েক দিন তিনি স্কুলে না আসেন।”