Advertisement
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Political Violence

রাজনৈতিক হিংসা, জড়াচ্ছে হাঁসখালির নাম

সীমান্তবর্তী এই এলাকা প্রথম থেকেই রাজনৈতিক ভাবে স্পর্শকাতর। শাসক দলের পাশাপাশি বিরোধীরা এখানে শক্তিশালী। কখনও সিপিএমের হাতে কংগ্রেস আবার কখনও কংগ্রেসের হাতে খুন হতে হয়েছে সিপিএম নেতাকে।

 দু’দিনের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করে হাঁসখালি থানার পুলিশ।

দু’দিনের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করে হাঁসখালি থানার পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৪৭
Share: Save:

বারবার রাজনৈতির খুনের ঘটনার সাক্ষী থাকছে হাঁসখালি। কখনও ব্লক সভাপতি তো কখনও বিধায়ক। খুনের সঙ্গে হাঁসখালির নাম জড়াচ্ছে।

অনেকেই বলেন, সীমান্তবর্তী এই এলাকা প্রথম থেকেই রাজনৈতিক ভাবে স্পর্শকাতর। শাসক দলের পাশাপাশি বিরোধীরা এখানে শক্তিশালী। ফলে কখনও সিপিএমের হাতে কংগ্রেস আবার কখনও কংগ্রেসের হাতে খুন হতে হয়েছে সিপিএম নেতাকে। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর পরিবেশ পাল্টে গিয়েছে। একের পর এক তৃণমূল নেতা খুন হয়েছেন। কখনও বিরোধীদের বিরুদ্ধে আবার কখনও আঙুল উঠেছে তৃণমূলের দিকেই। অর্থাৎ, প্রকট হয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠী-লড়াই।

২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল রাত আটটা নাগাদ এখানে নিজেরই দলীয় কার্যালয়ে খুন হয়েছিলেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা তথা ব্লক সভাপতি দুলাল বিশ্বাস। সে বারও অনুগামীদের সামনেই তাঁকে গুলি করে খুন করে নিরাপদে পালিয়ে গিয়েছিল আততায়ীরা। তদন্ত সে ভাবে এগোয়নি বলেই এলাকার মানুষের দাবি। বরং তাঁরা অধিকাংশই এখনও বিশ্বাস করেন যে, দলের অন্তর্ঘাতের কারণেই তাঁকে খুন হতে হয়েছিল।

খুনের রাতেই তাঁর ছেলে বাপ্পা বিশ্বাস ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। দু’দিনের মধ্যে তাঁদের ৫ জনকে গ্রেফতার করে হাঁসখালি থানার পুলিশ। তদন্তভার চলে যায় সিআইডির হাতে। দিন কয়েক আগে দুলাল বিশ্বাস খুনের ঘটনায় ভৈরবচন্দ্রপুরের বাসিন্দা সুকুমার বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে। ২০১৪ সালে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন হন সুকুমারের দাদা। অভিযোগ ওঠে, এফআইআর না তোলার কারণে তাঁকে ফাঁসিয়েছে দলেরই একটা প্রভাবশালী গোষ্ঠী। এই ঘটনায় এফআইআরে নাম থাকা ন’জনকে গ্রেফতার করা হলেও তদন্তে নেমে সিআইডি খুনের কোনও কিনারা করতে পারেনি।

দুলাল বিশ্বাস প্রথমে ছিলেন সিপিএমে। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। ২০০৪ সালে এক ভর সন্ধ্যায় খুন হয় দুলাল বিশ্বাসের ভাই স্বপন বিশ্বাস। সেই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে কংগ্রেসের তৎকালীন দাপুটে নেতা শশাঙ্ক বিশ্বাস, বিমল বিশ্বাস সহ কয়েক জনের দিকে। তারা গ্রেফতারও হয়। এর প্রায় বছর খানেক পরে ভায়না বাজারে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হয় তিন জন কংগ্রেস কর্মী। অভিযোগ ওঠে, ভাইয়ের খুনের বদলা নিতে দুলাল বিশ্বাস তাদের খুন করেছেন। গ্রেফতার হন তিনিও। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে শশাঙ্ক, দুলালেরা তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু ভিতরে ভিতরে পুরনো বিবাদ থেকেই যায়।

হাঁসখালিতেই ২০১৯ সালে সরস্বতী পুজোর আগের দিন বাড়ির পাশের মাঠে পুজো মণ্ডপে কয়েকশো লোকের মাঝখানে খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। এই ঘটনায় বিজেপির দিকে আঙুল তোলেন তৃণমূল নেতারা। রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার, মুকুল রায়দের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্ত ভার তুলে দেওয়া হয় সিআইডির হাতে। গ্রেফতারও করা হয় বেশ কয়েক জনকে।

কিন্ত প্রকৃত অপরাধী ধরা পড়েনি বলে মনে করেন এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই। এ বার হাঁসখালিতেই সাত সকালে ভরা বাজারের ভিতরে খুন হলেন তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সহ-সভাপতি আমোদ আলি বিশ্বাস। এ বারও সেই দলের লোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। প্রকাশ্যে এসেছে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

অন্য বিষয়গুলি:

Political Violence Hanshkhali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy