Advertisement
০৩ মে ২০২৪

জোটের কার্যালয়ে হানা তৃণমূলের, জখম পাঁচ

সিপিএমের এক কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃনমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরের ওই ঘটনায় শরদিন্দু দেবনাথ নামে ওই কাউন্সিলর, তাঁর দাদা জ্যোর্তিময় দেবনাথ-সহ পাঁচ জন আহত হয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তাহেরপুর শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৬
Share: Save:

সিপিএমের এক কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃনমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরের ওই ঘটনায় শরদিন্দু দেবনাথ নামে ওই কাউন্সিলর, তাঁর দাদা জ্যোর্তিময় দেবনাথ-সহ পাঁচ জন আহত হয়েছেন। জখমদের মধ্যে একজন রানাঘাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা শেষে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এলাকার জোটের নির্বাচনী কার্যালয়েও হামলা চালায়। সিপিএমের অভিযোগ, পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, এটা বুঝতে পেরে তৃণমূল এ সব করছে। সিপিএমের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছে তৃনমূল।

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই এলাকায় দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। দু’দলের তরফে মারধরের অভিযোগ জানানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ শ’খানেক যুবক বীরনগর পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শরদিন্দুবাবুর পালিতপাড়া-পঞ্চাননতলায় বাড়িতে হানা দেয়। নির্বাচনে কেন এত খাটছিস। বলেছিলাম না, চুপচাপ ঘরে বসে থাকবি। এই বলে ওই যুবকেরা শরদিন্দুবাবুর উপর চড়াও হয়। তাঁকে কিল-ঘুসি মারা হয়। হেনস্থা করা হয় তাঁকে। টানাহ্যাচড়ার মধ্যে তাঁর জামা ছিঁড়ে যায়। ভাইকে মার খেতে ঝাপিয়ে পড়েন দাদা জোর্তিময় দেবনাথ। ওই যুবকদের আক্রোশ গিয়ে ওই জ্যোর্তিময়ের উপর। জ্যোর্তিময়বাবুর অভিযোগ, ওই যুবকেরা তাঁর মিনিট দশেক ধরে কিল-ঘুষি-চড় মারে। জামা ধরে টানাটানি করে। আশপাশের লোকজন ওই যুবকের থামাতে এলে, তাঁরাও মারের মুখে পড়েন। তাঁদেরকেও মারধর করা হয়। মারধরের পাশে ওই যুবকেরা কাউন্সিলরের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বলেও অভিযোগ। ইট-পাটকেল ছুড়ে শরদিন্দুবাবুর ঘরের কাচ, চেয়ার, ফ্যান ভেঙে দেয় ওই যুবকরা। বাড়ির রান্নাঘরের আনাজপাতি ফেলে দেওয়া হয়। মোটরবাইক ও সাইকেল ফেলে দেওয়া হয়। আক্রমণের তীব্রতা দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা এ দিকে সে দিকে পালিয়ে যান। কেবল কাউন্সিলরের বাড়িতে হানা দিয়েই ওই যুবকেরা ক্ষান্ত হয়নি। তারা এলাকায় জোটের নির্বাচনী কার্যালয়েও হানা দেয়। সেখানে দলীয় পতাকা-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র মেঝেতে ফেলে দেয়।

জেলার রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে এ বার জোট প্রার্থী শঙ্কর সিংহ ও তৃণমূলের পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে। তাই ভোটের আগে কোনও পক্ষই বিন্দুমাত্র জমি ছাড়তে নারাজ। জোটের শক্তিবৃদ্ধিতে আতঙ্কিত হয়ে শাসক দল ঝামেলায় জড়াচ্ছে। সিপিএমের বীরনগর লোকাল কমিটির সম্পাদক প্রদীপ শর্মা চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘দিন যত যাচ্ছে তৃনমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। জোটের শক্তি বৃদ্ধিতে ওরা ক্রমশ ভীত হয়ে পড়ছে। হার নিশ্চিত জেনে আমাদের উপর আক্রমণ করছে। আমরা ওই এলাকায় প্রতিবাদ সভা করেছি।’’

বীরনগর শহর তৃণমূলের সভাপতি পার্থকুমার চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের দলের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। উল্টে ওরাই আমাদের লোকজনকে মারধর করেছে। ওই ওয়ার্ডের আমাদের এক মহিলা নেতৃত্বকে ওরা গালিগালাজ করছিল। আমাদের কর্মীরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছে মাত্র।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC alliance election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE