প্রতীকী ছবি।
দলবদলে শাসক দলে যোগদানই দস্তুর এ রাজ্য। উল্টো পথে হাঁটল শমসেরগঞ্জ। শাসক ছেড়ে বিরোধী দলের পতাকা ধরলেন মঙ্গলবার একাধিক নেতা। পঞ্চায়েতের আগে শমসেরগঞ্জে এখন থেকেই ঘর গোছাতে শুরু করল কংগ্রেস।
মঙ্গলবার ভাসাইপাইকর পঞ্চায়েতের দুই পরিচিত নেতা সানাউল হক ও পঞ্চায়েত সদস্য সেনারুল হক তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে ফিরলেন। সানাউল বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। এ ছাড়াও এ দিন তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের একাধিক পদাধিকারী তৃণমূল ছেড়ে ফিরে এসেছেন কংগ্রেসে।
কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি জামিলুর রহমানের দাবি, “কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি শমসেরগঞ্জ। দলের মরা গাঙেও ৭টি ওয়ার্ডে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। লুঠ হয়েছে ৫টি ওয়ার্ড। সেক্ষেত্রে ১২টি ওয়ার্ডেই কংগ্রেসের অবস্থা বেশ ভাল। তৃণমূল ১১ টি আসনে জিতলেও সেই শক্তি তৃণমূলের নেই। শেষ বিধানসভা নির্বাচনে কিছু সমস্যা হয়েছিল। ভোটের প্রচারে নামতে দেরি হয়েছে। তবু ৭০ হাজার ভোট পেয়েছে কংগ্রেস। তাই সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই আমরা শমসেরগঞ্জে যাঁরা শিক্ষিত ও সমাজসেবী মানুষ, একদিন কংগ্রেসের সঙ্গে থাকলেও এখন তারা হয় চুপচাপ না হয় শাসক দলের সঙ্গে রয়েছেন তাঁদের ফের কংগ্রেসে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। তাঁদের সামনে রেখেই তৈরি হবে বুথ কমিটি। তাদের দেখেই ফের জন সমর্থন ফিরবে শমসেরগঞ্জে। সেই কারণেই এলাকার পরিচিত মুখকে দলে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছি।”
এ দিন কংগ্রেসে ফিরে সানাউল বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস ছেড়ে গেছিলাম ভুল ত্রুটির কারণে। রাজ্যে একটা জঙ্গলের রাজত্ব চলছে। সর্বত্র দুর্নীতি মাথা চারা দিয়েছে। ধর্ষণ এখন নিত্যদিনের ঘটনা এ রাজ্যে। সর্বত্র একটা আতঙ্কের পরিবেশ শমসেরগঞ্জে। আমাদের লক্ষ্য শমসেরগঞ্জকে সুস্থ ও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনা। শিক্ষিত ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষকে সামনে এনেই তা সম্ভব কংগ্রেসের পক্ষেই।”
দল ছেড়ে এদিন সেনারুল সরাসরি অভিযোগ করেন, “কোনও শিক্ষিত, ভদ্র মানুষ ওদের কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবে না। তৃণমূলের কোনও সিস্টেম নেই, স্বৈরাচারী চালচলন কোনও সচেতন মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া অসম্ভব। গুন্ডাবাজি, তোলাবাজি, সন্ত্রাসবাদী, লুঠেরা এই সব অসামাজিক লোক শমসেওগঞ্জে এদের সঙ্গে। তৃণমূল করলে সাত খুন মাফ। আমার ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধ, ফাঁসাও তাকে জাল নোটের কেসে। প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদ, তাকে ফাঁসাতে হবে মহিলাঘটিত কেসে। বিবেকবান মানুষ হিসেবে এটা আমি পারিনি। তাই কংগ্রেসে এলাম।”
জামিলুর বলছেন, “এখন কংগ্রেস শমসেরগঞ্জে জোর দেবে সামাজিক আন্দোলনে। গ্রামের শিক্ষিত ভাল মানুষটাকে বেছে এনে দলের সামনে দাঁড় করাবে। এ ছাড়াও যাঁরা পুরনো, দলে এক সময় যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনা জরুরি। এখন থেকে শমসেরগঞ্জে সেটাই শুরু করলাম। কাউকে কুবাক্য নয়, দুর্ব্যবহার নয়। এলাকার সমস্ত অনুষ্ঠানে জড়িয়ে থেকে মানুষকে কাছে টানা। শমসেরগঞ্জকে অরাজকতার পরিবেশ থেকে বের করে আনা।”
জঙ্গিপুরের তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমান অবশ্য বলছেন, “দলবদল ছিল, আছে, থাকবেও। কিন্তু তাতে শমসেরগঞ্জে তৃণমূল ক্ষতিগ্রস্ত হবে এটা মনে করার কোনও কারণ নেই। দলে খারাপ লোক নেই তা বলব না। তবে ভাল লোকের সংখ্যাটাই বেশি। তাই দলের এই বাড়বাড়ন্ত। পঞ্চায়েত ও লোকসভাতেও আশাতীত ফল করবে তৃণমূল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy