Advertisement
E-Paper

তৃণমূলে শঙ্কা, মোতায়েন রক্ষী

তৃণমূলের দাবি, তারা বিজেপির হামলার ভয় করছেন। জেলায় তাঁদের দল ও সংগঠনকে দুর্বল করতে বিজেপি সত্যজিৎবাবুকে খুন করেছে। এ বার তারা অন্যদের উপরেও হামলা চালাবে। আর বিজেপি-র পাল্টা অভিযোগ, নদিয়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভীত তৃণমূল।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হওয়ার পর ভয়ে রয়েছেন জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতা ও কর্মী। সর্বক্ষণের নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে তাঁদের অনেকের জন্য।

তৃণমূলের দাবি, তারা বিজেপির হামলার ভয় করছেন। জেলায় তাঁদের দল ও সংগঠনকে দুর্বল করতে বিজেপি সত্যজিৎবাবুকে খুন করেছে। এ বার তারা অন্যদের উপরেও হামলা চালাবে। আর বিজেপি-র পাল্টা অভিযোগ, নদিয়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভীত তৃণমূল। নিজেদের লোকেদের কাছ থেকেই ফের আঘাত আসতে পারে বুঝে তৃণমূল নেতারা ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন। তবে এর মধ্যে যে প্রশ্ন অনিবার্য ভাবে উঠছে তা হল, তৃণমূলের কথামতো যদি তারা সত্যিই বিজেপি-র হামলার ভয় পান তা হলে কি ধরে নিতে হবে যে, নদিয়ায় বিজেপি-র যথেষ্ট ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়েছে? বিজেপি অনায়াসে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের উপরে আঘাত হানতে পারে? তাঁদের ঠেকানোর ক্ষমতা শাসক দলের নেই? এর জবাবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলছেন, ‘‘আমাদের দলের কেউ ভয় পেয়েছেন বলে আমার জানা নেই।’’ কিন্তু তৃণমূলের একাধিক নেতা কর্মীই ভয় পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। সেই কারণে তাঁদের সর্বক্ষণের নিরাপত্তাকর্মীও দেওয়া হয়েছে।

এ বার গৌরীশঙ্কর দত্তের বক্তব্য, ‘‘যাঁদের নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে তাঁরা কেউ সত্যজিৎ খুনের ঘটনার সাক্ষী, কেউ অভিযোগকারী। বিজেপির মূল চক্রান্তকারী যে ভাবে মরিয়ে তাতে এঁদের উপরে হামলার একটা আশঙ্কা থাকছে।” এই প্রসঙ্গে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকার বলেছেন, “বাইরে ওঁরা যাই বলুন না কেন ওঁরা নিজেরাই জানে কী ঘটেছে। সেই কারণেই ওঁরা আসলে বিজেপিকে নয় নিজেদের দলের লোকদের ভয় পাচ্ছেন এবং তাঁদের থেকে বাঁচতে নিরাপত্তারক্ষী সঙ্গে নিয়ে ঘুরছেন।”

গত শনিবার রাতে নিজের বাড়ির উল্টোদিকে ক্লাবের সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠান দেখার সময়ে খুন হন তৃণমূলের দাপুটে বিধায়ক তথা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাস। ঘটনায় দু’জন গ্রেফতার হয়েছেন সে রাতেই। মূল অভিযুক্ত সহ আরও দু’জন অধরা।

এর পরেই যুব তৃণমূল কংগ্রেসের হাঁসখালি ব্লক সভাপতি তথা দক্ষিণপাড়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অজয় বিশ্বাসকে সব সময়ের নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে। হামলার আশঙ্কা করছেন স্বীকার করেই তিনি বলেন, “এ বার আমি টার্গেট সেটা স্পষ্ট। কারণ, আমি আর সত্যজিৎ একসঙ্গে কাঁধে-কাঁধ লাগিয়ে সংগঠনটাকে শক্তিশালী করেছি। তৃণমূলকে দুর্বল করতে ওরা এ বার আমার উপরেও হামলা চালাতে পারে।” নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে সত্যজিৎ খুনের অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী মিলন সাহাকেও। তাঁকে বারবার ফোন করা পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তারক্ষী পেয়েছেন দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা হাঁসখালি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মুনমুন বিশ্বাসকে। মুনমুনদেবী বলছেন, “বোঝাই যাচ্ছে বিজেপি এখানে মরিয়া। আমাদের মাথার উপরে ছাতার মত ছিল সত্যদা। তাঁকে যে ভাবে খুন করা হল তাতে আমরা তো চুনোপুঁটি।” নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে সত্যজিৎ বিশ্বাসের ছোট ভাই সুমিত বিশ্বাসকেও। তাঁর কথায়, “আমি ছিলাম দাদার সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহচর। বিজেপি আমাকেও সরাতে চাইবে।” রানাঘাট উত্তর-পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক সমীর পোদ্দার বলছেন, “রানাঘাট কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি মতুয়ার বাস। বিজেপি যে ভাবে সত্যজিৎকে সরিয়ে দিল তাতে চিন্তা তো থেকেই যাচ্ছে।”

MLA Murder TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy