Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
TMC

পুলিশ নিষ্ক্রিয়, দাবি তৃণমূল সদস্যদেরই

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ফরাক্কা শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০৭
Share: Save:

পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকতে পারছেন না বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্যে শাসক দল তৃণমূলেরই সদস্যরা। তাঁদের দাবি, পুলিশের কাছে গিয়েও মিলছে না কোনওরকম সাহায্য। তাই পঞ্চায়েত সদস্য পদও ছেড়ে দিতে চান ফরাক্কার বেওয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সাত সদস্য। ওই পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্য রিন্টু শেখ বলছেন, ‘‘পুলিশ সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ফরাক্কায়। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিত অভিযোগের কপি দেওয়া হয় পুলিশকেও। এরপর অবশ্য কিছুটা ততপর হয় ফরাক্কা থানা।’’ পুলিশ জানিয়েছে, তারা পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে।

ফরাক্কা ব্লকের এই বেওয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ তৃণমূল সদস্যের মধ্যে ৫ জনই মহিলা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের সদস্য হয়েও তাঁরা পঞ্চায়েত অফিসে যেতে পারছেন না গত ১৫ দিন ধরে। অভিযোগ, তাঁদের প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফলে অফিসে যাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়েও পাচ্ছেন না বলে দাবি করেছেন তাঁরা। এই অবস্থায় তারা ৭ জনই সদস্য পদ থেকে গণ ইস্তফা দিতে চান।

ফরাক্কার ওই পঞ্চায়েতে বিজেপির ৪ জন ও কংগ্রেসের ৪ জন সদস্য মিলে ৮ জনের গড়া বোর্ডের প্রধান হয়েছেন বিজেপির কুণাল ঘোষ। বাকি ৭ সদস্য রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের। স্বভাবতই ৮-৭ ব্যবধানে ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূল বিরোধীরা বোর্ড গঠন করেন।

গত ২৩ অগস্ট সাধারণ সভার মধ্যে কংগ্রেস ও বিজেপির ৮ সদস্যের সঙ্গে তৃণমূল সদস্যদের বচসা, গালাগালি। তা থেকে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। রাজ্যের শাসক দলের দাবি, কোনও রকমে দৌড়ে পঞ্চায়েত অফিস থেকে তৃণমুল সদস্যরা পালিয়ে প্রাণ বাঁচান।

সেদিন সন্ধেতেই ফরাক্কা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এক মহিলা সদস্য। সেই থেকে পলাশি গ্রামে পঞ্চায়েত অফিসে আর ঢুকতেই পারছেন না তৃণমূল সদস্যরা।

থানায় প্রধান সহ বেশ কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূল সদস্য রিপা বিবি। তিনি বলেন, ‘‘সদস্যদেরই যদি পঞ্চায়েত অফিস ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হয় তা হলে আমরা কিসের ভরসায় আর সদস্য পদে থাকব। সব ঘটনা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি।’’

তৃণমূলের ফরাক্কার ব্লক সভাপতি এজারত আলিও তৃণমূলের সাত সদস্যের অভিযোগ পেয়ে পুলিশের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ফরাক্কায় কংগ্রেস ২৫ বছর ক্ষমতায়। তাই পুলিশকে তারাই নিয়ন্ত্রণ করে। তাই পঞ্চায়েতের বৈঠকে গিয়ে তৃণমূলের সদস্যদের মারধোর করার পরও পুলিশ নীরব।’’

বিজেপির বক্তব্য, পঞ্চায়েতের সভায় সামান্য গোলমাল হয়েছিল। কিন্তু তার পরে তৃণমূল সদস্যেরা যা করছেন, তা একেবারেই লোকহাসানো কাণ্ড হচ্ছে। বিজেপির দাবি, কাউকে হুমকি দেওয়া হয়নি। রাজ্যের শাসক দলের সদস্যদের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

বেওয়া ১ পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘সভার মধ্যে তর্কাতর্কি, বচসা হয়েই থাকে। এটা নিয়ে অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করছে তৃণমূল। অফিসে এলে তারা নিরাপত্তা পাবেন না এই আশঙ্কা অমূলক।’’

জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এই ঘটনায় পুলিশ একজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ নিষ্ক্রিয় ও পঞ্চায়েত সদস্যদের নিরাপত্তার অভাব আছে এমনটা ঠিক কথা নয়। তবু আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি সেখানে কী ঘটেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Conflicts Farakka
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE