E-Paper

উচ্ছেদেও সরকারি জমি থেকে সরল না তৃণমূলের কার্যালয়

গত ৪ জনুয়ারি ওই ভবনের উদ্বোধনের আগেই স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের তরফে সেখানকার ব্যবসায়ীদের মৌখিক ভাবে সরে যেতে বলা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:১৯

শান্তিপুর ব্লক অফিস এবং ভূমি সংস্কার দফতরের লাগোয়া এলাকায় রাস্তার ধারে তৈরি হয়েছিল একাধিক বেআইনি ঝুপড়ি ও দোকান। সদ্যনির্মিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব হ্যান্ডলুম টেক্সটাইলের (আইআইএইচটি) মূল ভবনের প্রবেশপথের রাস্তার ধারের এই সমস্ত দখলদারি সরাতে বলা হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। ল’ক্লার্ক থেকে শুরু করে অন্য ব্যবসায়ীরা নিজেদের দোকান সরিয়ে নিয়ে গেলেও রয়ে গিয়েছে তৃণমূলের দফতর। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। সব দোকান সরে গেলেও তৃণমূলের দফতর কেন সেখানে থাকবে, সেই প্রশ্ন তুলছে বিজেপি।

দীর্ঘদিন ধরে ফুলিয়ায় শান্তিপুর ব্লক অফিস এবং ভূমি সংস্কার দফতরের পাশে রাস্তার দু’ধারে গড়ে উঠেছিল একাধিক ঝুপড়ি এবং দোকানঘর। রাস্তার পাশে সরকারি জমি দখল করেই সেগুলি তৈরি হয়েছিল। সেখানে একাধিক ল’ক্লার্কের দফতর যেমন ছিল, ছিল বিভিন্ন দোকানও। এর মধ্যেই রয়েছে তৃণমূলের একটি দফতর।প্রায় ৫০ মিটার দীর্ঘ এই রাস্তা ফুলিয়া এলাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সঙ্গে সংযোগকারী। এই ছোট রাস্তাটি গিয়ে ভূমি সংস্কার দফতর এবং আইআইএইচটি-র ভবনের প্রবেশপথে মিশেছে।

গত ৪ জনুয়ারি ওই ভবনের উদ্বোধনের আগেই স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের তরফে সেখানকার ব্যবসায়ীদের মৌখিক ভাবে সরে যেতে বলা হয়। সেই মতো ল’ক্লার্ক থেকে শুরু করে অন্য ব্যবসায়ীরা সকলেই সেখান থেকে সরে গিয়েছেন। আইআইএইচটি ফুলিয়া-র অধিকর্তা প্রকাশ চিদম্বরম বলেন, "আমরা নদিয়া জেলাশাসক এবং শান্তিপুরের বিডিও-র কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলাম, ওই রাস্তাটির পাশের দখলদারি সরানোর জন্য। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫০০ মিটারের মধ্যে এই ধরনের দোকানপাট থাকতে পারে না। ৯৫ শতাংশই সরে গিয়েছে।"

এর পরেও তৃণমূলের দফতর কেন সেখানে রয়ে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি, বিজেপির চঞ্চল চক্রবর্তীর দাবি, "তৃণমূলের দফতর বললে দফতর জিনিসটাকে অপমান করা হয়। আসলে তো এগুলো তৃণমূলের আড্ডাখানা। দলীয় পতাকা টাঙিয়ে ওরা বিভিন্ন জায়গায় এ ভাবে সরকারি জমি দখল করে রেখেছে। প্রশাসনের তরফে কিছু গরিব মানুষকে, যারা সেখানে ব্যবসা করে খাচ্ছিলেন তাদের সরানো হল। কিন্তু শাসক দলের দফতর হওয়ায় তা রেখে দেওয়া হল। এর জবাব ব্লক প্রশাসনকেই দিতে হবে।"

এ প্রসঙ্গে যুব তৃণমূলের শান্তিপুর ব্লক (বি) সভাপতি পরেশ বিশ্বাস বলেন, "আমাদের এখনও কেউ লিখিত ভাবে, এমনকী মৌখিক ভাবেও এখান থেকে সরে যেতে বলেনি। সেই কারণেই দফতর সরানো হয়নি।" আবার শান্তিপুরের বিডিও সন্দীপ ঘোষের বক্তব্য, "আইআইএইচটি-র তরফে আমাদের বলা হয়েছিল রাস্তাটির পাশের দখলদারি সরানোর জন্য। সেই মতো আমি ল’ক্লার্কদের বলেছিলাম ওই জায়গা থেকে সরে যেতে। ওঁরা নিজেরাই সরে গিয়েছেন। লিখিত নির্দেশ কাউকেই দেওয়া হয়নি।" ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের ভিতরে ওই ল’ক্লার্কদের বসার জায়গা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

কিন্তু সরকারি জমিতে তৃণমূলের দফতরই বা থাকবে কেন? কেনই বা সেটি সেখানে তৈরি করা হয়েছিল? তৃণমূলের রানাঘাট সংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। দফতরটি ওখানে কত দিন ধরে রয়েছে বা কাদের জমিতে হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। আমাদের দল জমি দখল অনুমোদন করে না।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Shantipur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy