তৃণমূলের সম্প্রীতি যাত্রা। রবিবার রানাঘাটে। ছবি: প্রণব দেবনাথ।
সম্প্রীতি যাত্রাকে সামনে রেখে কোথাও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বার্তা, আবার কোথাও দলবদলের পরে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি যাচাইয়ের পরীক্ষা। সব মিলিয়ে জেলা সভাপতি বদলের পরে নদিয়ার দক্ষিণপ্রান্তে যুব সংগঠনের কর্মসূচি থেকে বকলমে একাধিক বার্তা দিয়ে গেল শাসকদল।
সদ্য রানাঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক এবং প্রাক্তন পুরপ্রধান পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় দল তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। দলের মধ্যেই রানাঘাট শহর এবং গ্রামীণ এলাকায় তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাকর্মী নেই এমনটা নয়। কাজেই তাঁর সঙ্গে দলে আরও ভাঙন হয় কি না বা আরও কেউ রানাঘাট থেকে গেরুয়া পথে পা বাড়ান কি না সে দিকেও নজর ছিল শাসক দলের বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
দলত্যাগী নেতা পার্থসারথী আগেই দাবি করেছিলেন, আরও অনেকেই তাঁর সঙ্গী হবেন রানাঘাট থেকে। সেই দাবি উড়িয়ে দিলেও দলত্যাগের সম্ভাবনা নিয়ে শাসক দল যে খুব একটা নিশ্চিত হতে পারছিল এমনটা নয়। যুব তৃণমূলের চেষ্টায় রবিবার রানাঘাট শহরে পদযাত্রার আয়োজন আদতে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি দলের ঐক্যবদ্ধ চেহারা ফুটিয়ে তোলারও মঞ্চ ছিল। এ দিন বিকালে ৪টে নাগাদ রানাঘাট শহরের পশ্চিম পাড়ে কলেজের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে রানাঘাট রেল স্টেশন সংলগ্ন জিআরপি মোড়ের কাছে গিয়ে শেষ হয়েছে। সেখানে পথসভার আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন যুব তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শুভঙ্কর সিংহ, রানাঘাট শহর তৃণমূলের সভাপতি পবিত্র ব্রক্ষ-সহ অন্যরা।
তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্থসারথী ঘনিষ্ঠ অনেক কাউন্সিলার, নেতা যাঁদের নিয়ে জল্পনা ছিল তাঁদেরকেও দেখা গিয়েছে ওই সভায়। ফলে সব মিলিয়ে দলের ঐক্যবদ্ধ চেহারা ফুটিয়ে তুলতে মরিয়া তৃণমূল সেখানে দলের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদেরকেও হাজির করেছিল।
ভোটের আগে কার্যত এটাই কি বার্তা দলত্যাগী নেতা এবং বিজেপিকে?
যুব তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শুভঙ্কর সিংহ বলেন, “যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে গিয়েছেন, এ দিনের মিছিলের মাধ্যমে তাঁদের বার্তা দিতে চেয়েছি। দলবদলে তৃণমূলের কোনও ক্ষতি হয়নি, বরং তৃণমূল অটুট আছে। শহরের মানুষ, দলের কর্মী এবং প্রাক্তন কাউন্সিলারা, কেউ দল ছেড়ে চলে যাননি। এ দিনের মিছিল তা প্রমাণ করে দিয়েছে।”
সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া রানাঘাটের প্রাক্তন পুরপ্রধান পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি আর কী বলব। এখন ওদের বলার সময়। ওরা বলুক। সময় এলে শহরের মানুষ কথা বলবেন।”
রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হলেই বোঝা যাবে, শহরের মানুষ কাদের সঙ্গে রয়েছেন। আমি লোকসভা ভোটে যে ব্যবধানে জিতেছিলাম, এ বার তার চেয়ে কমপক্ষে দ্বিগুণ ভোটের ব্যবধানে আমাদের প্রার্থী জিতবে। ওদের পায়ের তলা থকে মাটি সরে যাচ্ছে বলেই ওরা এ সব বলছে।”
এ ছাড়াও এ দিন যুব তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার তরফে, চাকদহে সম্প্রীতি যাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। এ দিন সকালে কামালপুর বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে থেকে এই বাইক মিছিল শুরু হয়। বিভিন্ন এলাক ঘুরে রাজারমাঠে গিয়ে শেষ হয়েছে। তাতেও জেলা যুব সভাপতি শুভঙ্কর সিংহ যোগ দিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy