Advertisement
E-Paper

শিক্ষিকা নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ

পদের প্রভাব খাটিয়ে নিজের মেয়েকে একটি খ্রিস্টান মিশনারি পরিচালিত স্কুলে সহ-শিক্ষিকা পদে নিয়োগ করানোর অভিযোগ উঠল নদিয়ার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান অর্চনা ঘোষ সরকারের বিরুদ্ধে। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের ‘কুইন্স গার্লস স্কুলে’ দর্শনের সহ-শিক্ষিকা পদে নিযুক্ত অমৃতা সরকার অর্চনাদেবীর মেয়ে। যোগ্যতর প্রার্থীদের বাদ দিয়ে অমৃতাকে নিযোগ করা হয়েছে, এই অভিযোগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন এক বিফল প্রার্থী।

মনিরুল শেখ

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৫ ০৩:০৭

পদের প্রভাব খাটিয়ে নিজের মেয়েকে একটি খ্রিস্টান মিশনারি পরিচালিত স্কুলে সহ-শিক্ষিকা পদে নিয়োগ করানোর অভিযোগ উঠল নদিয়ার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান অর্চনা ঘোষ সরকারের বিরুদ্ধে। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের ‘কুইন্স গার্লস স্কুলে’ দর্শনের সহ-শিক্ষিকা পদে নিযুক্ত অমৃতা সরকার অর্চনাদেবীর মেয়ে। যোগ্যতর প্রার্থীদের বাদ দিয়ে অমৃতাকে নিযোগ করা হয়েছে, এই অভিযোগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন এক বিফল প্রার্থী। অর্চনাদেবী অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষও পক্ষপাতের অভিযোগ মানেনি।

চাপড়ার বাসিন্দা সোমী মণ্ডল নামে এক বিফল প্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ, জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) ও অমৃতা সরকারকে নির্দেশ দেয়, তাঁদের নিয়োগ-নীতি যে স্বচ্ছ সে ব্যাপারে প্রমাণ দাখিল করতে হবে এক মাসের মধ্যে। সোমীদেবীর আইনজীবী শামিম আহমেদ বলেন, “কোনও পক্ষই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কিছু জানায়নি। তাই প্যানেল বাতিলের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হবে।”

ইতিমধ্যে বঙ্গীয় খ্রিস্টান পরিষদের নদিয়া জেলা কমিটির তরফেও অর্চনা দেবীর বিরুদ্ধে একটি লিফলেট ছড়ানো হয়েছে শহরে। তাতে অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের সদস্যদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে নিজের মেয়ের চাকরির ব্যবস্থা করেন অর্চনাদেবী।

কী ঘটেছে নিয়োগ নিয়ে? স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই স্কুলে দর্শনের সহ-শিক্ষিকা পদে নিয়োগের জন্য গত বছরের ২৩ অগস্ট বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। সেখানে উল্লেখ ছিল, স্নাতক প্রার্থীরা আবেদন করতে পারলেও, এমএ ও বিএড ডিগ্রিপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। শেষ অবধি ন’জন আবেদন করেন, তাঁদের মধ্যে তিন জনের এমএ, বিএড রয়েছে, তিনজন এমএ। বাকি তিনজনের কেবল অনার্স ডিগ্রি রয়েছে। মাধ্যমিক থেকে শুরু করে বিএড-এর ফলাফলের উপর ৩০ নম্বর থাকার কথা। সোমীদেবীর অভিযোগ, পরীক্ষার ফলাফলের নিরিখে অমৃতা তাঁর চাইতে ১২ নম্বর পিছিয়ে ছিলেন। কিন্তু ইন্টারভিউ-তে ২০ নম্বরের মধ্যে অমৃতাদেবী পান ১৮, যেখানে সোমীদেবীকে দেওয়া হয় সাকুল্যে ৫। তাই চূড়ান্ত তালিকায় নাম ওঠে অমৃতাদেবীর।

এই ফলে বিস্মিত সোমীদেবী। ইন্টারভিউ-এ চাকরীপ্রার্থীদের ক্লাসে পড়াতে দেওয়া হয়। সোমীদেবীর অভিযোগ, “সরকারি কলেজ থেকে বিএড করেছি। কীভাবে পড়াতে হয়, তা আমাদের শেখানো হয়। কী করে আমাকে ইন্টারভিউতে কম নম্বর দেওয়া হল তা বুঝতে পারছি না।” তিনি জানান, একাধিক বার স্কুল কর্তৃপক্ষ ও নদিয়ার স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) কৌশিক রায়ের কাছে অভিযোগও করেছেন। কোথাও কোনও সাড়া না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছেন।

গোলযোগের আরও অভিযোগ উঠছে। অন্যান্য চাকরীপ্রার্থীদের দাবি, ইন্টারভিউ-এর ফলাফলই তাঁদের জানানো হয়নি। গত বছর বড়দিনের ছুটির মধ্যে ইন্টারভিউ-এর প্যানেল জমা পড়ে জেলা স্কুল-পরিদর্শকের দফতরে, ৫ জানুয়ারি সেই প্যানেল পাশ হয়। ইতিমধ্যে অমৃতাদেবী কাজে যোগ দেওয়ার কানাঘুষো শুনে স্কুলে যোগাযোগ করেন অন্য প্রার্থীরা। তড়িঘড়ি করে ছুটির মধ্যেই প্যানেল জমা পড়া, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের বাদ দিয়ে স্নাতক ডিগ্রিপ্রাপ্তকে নির্বাচন করা, এ সব নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।

সব অভিযোগ অস্বীকার করে অর্চনা ঘোষ সরকার বলেন, “আমার মেয়ে যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছে। এ ব্যাপারে আমি কোনও রকম প্রভাব খাটাইনি।” একই ভাবে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কুইন্স গার্লস স্কুলের বিশপ তথা পরিচালন সমিতির সভাপতি ব্রজেন মালাকার বলেন, “অনেক সময় ভাল রেজাল্ট করা চাকরীপ্রার্থীও ভাল পড়াতে পারেন না। এক্ষেত্রে সোমী মণ্ডল ভাল পড়াতে পারেননি, তাই তাঁকে নিয়োগ করা হয়নি। তবে আদালত এ ব্যাপারে যা রায় দেবে তা মেনে নিতে হবে।”

krishnanagar monirul shaikh Nadia court teacher
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy