Advertisement
E-Paper

শিল্পহারা কল্যাণীতে দুষ্কৃতী-দাওয়াই

শিল্প নেই ঠিকই তবে, হা-অন্ন শিল্প শহরে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অপরাধের রকমফের।বেড়েছে সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশের হারও।এই জোড়া সমস্যাকে সামাল দিতে, নদিয়ায় নতুন একটি পুলিশকর্তার পদ অনুমোদন করল রাজ্য সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কল্যাণী)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫৮

শিল্প নেই ঠিকই তবে, হা-অন্ন শিল্প শহরে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অপরাধের রকমফের।

বেড়েছে সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশের হারও।

এই জোড়া সমস্যাকে সামাল দিতে, নদিয়ায় নতুন একটি পুলিশকর্তার পদ অনুমোদন করল রাজ্য সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কল্যাণী)।

দেড় দশক আগে, বাম আমলেই শুরু হয়েছিল শিল্পে তালা পড়া।

পালাবদলের পরেও সেই ট্রাডিশনে বাঁধ পড়েনি। কল্যাণী শিল্পাঞ্চলে বন্ধ কারখানার তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হয়েছে।

মাস খানেক আগেই তালা পড়েছে সরকারি কারখানা, কল্যাণী স্পিনিং মিলে। আসেনি নতুন কোনও শিল্পও। কারাখানার বেকার কর্মীদের অনেকেই ছেড়ে গিয়েছেন শিল্প শহর। কেউ বা রুজির টানে বেছে নিয়েছেন রিকশা চালানো এমনকী দিন মজরের পেশা।

বিকল্প কোনও কর্মসংস্থানও তৈরি হয়নি গত ক’বছরে। শুধু কল্যাণীই বা কেন, শিল্পের খরা রানাঘাটেও। শ্রমিক ফিরে গিয়েছেন বলেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে কারখানাকে ঘিরে গড়ে ওঠা রেঁস্তোরা, হোটেল, শুঁড়িখানা এমনকী শিল্পাঞ্চলের ভিডিও হল-সেলুন-মণিহারি দোকানপাটও।

পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। মানুষ পেট চালাতে সহজ উপায়, চুরি-ছিনতাই, চোরাকারবারে নেমেছে।’’

ধানতলা, আরংঘাটা-সহ রানাঘাট মহকুমার সীমান্তবর্তী এলাকায় অনুপ্রবেশের সঙ্গে রয়েছে চোরাকারবারের ফলাও কারবার। যার প্রভাব পড়েছে এলাকার আর্থ সামাজিক ব্যবস্থার উপরে। কল্যাণী এবং রানাঘাটের কিছু এলাকা রীতিমতো সমাজ বিরোধীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে।

এই সব কারণেই কল্যাণী ও রানাঘাট এলাকায় আরও পুলিশি সক্রিয়তা ও নজরদারী বৃদ্ধির প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল অনেক দিন ধরেই। জেলা পুলিশের কর্তারা বলছেন, সেই কারণেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কল্যাণী) পদ তৈরি করতে হল বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

অনেক আগেই এই নতুন পদের অনুমোদন মিললেও, সম্প্রতি ওই পদে এক জন আইপিএস অফিসারকে নিয়োগ করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে এই নতুন পদে পোষ্টিং দেওয়া হয়েছে আইপিএস অফিসার অভিজিত কাদিয়ানকে। তিনি ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সহকারী পুলিশ সুপার ছিলেন।

কল্যাণী ও রানাঘাট মহকুমার মোট ন’টি থানা এলাকার দায়িত্বে থাকবেন তিনি। এর ফলে এই এলাকায় পুলিশি সক্রিয়তা ও নজরদারী অনেকটাই বাড়বে। ২০১৪ সালেই নদিয়ার উত্তরে, গ্রামীণ এলাকার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল।

বছর খানেক আগে মদনপুরে অস্ত্র কারখানার হদিস মিলেছিল। এর পরে কয়েক মাসের মধ্যেই কল্যাণীর সগুনাতেও প্রচুর মজুত অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে এই কারবার চললেও, পুলিশের কাছে এর কোনও খবরই ছিল না। একই সঙ্গে কল্যাণীতে মাটি মাফিয়াদের দাপাদাপি শাসক দলেরও মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্য দিকে, রানাঘাট ও গাংনাপুর, কুপার্স ক্যাম্প, ধানতলা এলাকায় খুনোখুনি নিত্য ঘটনা।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য পুলিশ এবং এলাকার জনপ্রতিনিধিরা মনে করছেন, এই এলাকাতে পুলিশের ‘নেটওয়ার্ক’ খুবই দুর্বল। ফলে এলাকায় অস্ত্র কারখানার খবর পুলিশ পায় না। সেই জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের মতো উচ্চ পদস্থ অফিসার বসিয়ে সেই নেটওয়ার্ক গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে জেলা পুলিশ।

কৃষ্ণনগর-কল্যাণীর দূরত্বও পুলিশের কাছে একটা প্রতিবন্ধকতা। বড় কোনও ঘটনা ঘটলে কৃষ্ণনগর থেকে পুলিশ সুপারের পৌঁছতে অনেকটাই সময় লেগে যায়। সেই জন্য কল্যাণী-রানাঘাটের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পাঠানো হচ্ছে।

superintendent of Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy