ফুলিয়ার বয়রায় কৃত্তিবাসের স্মৃতিতে।—নিজস্ব চিত্র
আদিকবির জন্মস্থান। আছে কবির অস্থিসমাধি। আবার তাঁর জন্মভিটের পাশের আছে সেই বটগাছ। কথিত আছে, এই বটগাছের ছায়ায় বসেই কবি বাংলা ভাষায় রামায়ণ রচনা করেছিলেন। ‘এ বঙ্গের অলঙ্কার’ কবি কৃত্তিবাসের সেই জন্মস্থানকে পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরার জন্য উদ্যোগী হল জেলা প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কবির জন্মস্থানকে বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই আদিকবির জন্মভিটেকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা ও সংরক্ষণের জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করে তা পাঠানো হয়েছে রাজ্যের পর্যটন দফতরের কাছে। সেই সঙ্গে কবির নামে তৈরি হবে একটি আধুনিক ও উন্নতমানের অডিটোরিয়াম। সেটি করতে প্রায় ৯ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
৩৪ নন্বর জাতীয় সড়কের পাশে কৃত্তিবাস গ্রাম। আগে নাম ছিল বয়রা। এই গ্রামেই ১৪৪০ বঙ্গাব্দে মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কবি। জন্মভিটেয় ঢুকতেই সেই বিশাল বটগাছ। সেই বটগাছের চারদিক মার্বেল পাথর দিয়ে সুন্দর করে ঘিরে বেদী করা হবে। গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়ার জন্য তৈরি করা হবে সিমেন্টের বসার জায়গা। সংস্কার করা হবে স্মৃতিস্তম্ভটিও। তার পাশেই আছে কৃত্তিবাস কূপ। এখানে যারা আসতেন তাদের পানীয় জলের জন্য ১৩৩০ বঙ্গাব্দে খনন করা হয়েছিল এই কূপ। সংস্কার করা হবে সেটাকেও। এ ছাড়াও কৃত্তিবাসের জন্মস্থান মার্বেল পাথর ও লোহার রেলিং দিয়ে ঘিরে ফেলা হবে। গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালা, অস্থি সমাধি-সহ গোটা জন্ম ভিটেকেই পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলা হবে। সেই সঙ্গে থাকবে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। ফুলের বাগান। এটা করার জন্য প্রায় ১৩ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে।
তবে কৃত্তিবাসের জন্মস্থান ছাড়াও এই জন্মভিটের অন্যতম আকর্ষণ হল হরিদাস ঠাকুর বা যবন হরিদাসের ভজনস্থল। মুলসিম পরিবারে মানুষ হয়েও কৃষ্ণনাম ভজনা করার জন্য তাকে কাজির আদেশে ‘বাইশ বাজারে’ বেত মারা হয়েছিল। তারপরও তাকে দমানো যায় নি। এখানে বসেই তিনি নামজপ করতেন। সাজিয়ে তোলা হবে সেই ভজনস্থলও।
অতিরিক্ত জেলাশাসক শেখর সেন বলেন, ‘‘কৃত্তবাস ওঝার জন্মভিটেকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য আমরা বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়ছে। প্রকল্প তৈরি করে পর্যটন দফতরে পাঠানোও হয়েছে। অনুমতি পেলেই কাজ শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy