Advertisement
E-Paper

শহরের গতি ফেরাতে বেড়ি পড়ছে টুকটুকে

একদিন যে টুকটুক নাগরিক জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে এসেছিল আজ তারই দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন শহরের মানুষ। চালকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠার পাশাপাশি টুকটুকের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, শহরের যান চলাচলের গতি অস্বাভাবিক কমে গিয়েছে। টুকটুকের সৌজন্যে যানজট এখন কৃষ্ণনগরের রোজনামচা।

নিজস্ব সংবাদাদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৫ ০১:১০
রাস্তা ছেয়েছে টুকটুকে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

রাস্তা ছেয়েছে টুকটুকে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

একদিন যে টুকটুক নাগরিক জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে এসেছিল আজ তারই দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন শহরের মানুষ। চালকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠার পাশাপাশি টুকটুকের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, শহরের যান চলাচলের গতি অস্বাভাবিক কমে গিয়েছে। টুকটুকের সৌজন্যে যানজট এখন কৃষ্ণনগরের রোজনামচা।

এমনিতেই এই শহরের রাস্তাঘাট একেবারেই অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি হয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় রাস্তা সঙ্কীর্ণ। শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার দু’পাশে দোকানের সামনে মোটরবাইক, সাইকেল কিংবা চার চাকা গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় সেই রাস্তার পরিসর আরও ছোট হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে এমনিতেই হাঁসফাস করছিল কৃষ্ণচন্দ্রের এই শহর। এ দিকে টুকটুকের সংখ্যা যে ভাবে বাড়তে শুরু করেছে তাতে শহরের নাভিশ্বাস ওঠার মতো অবস্থা। শহরের বুকে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে কয়েকশো টুকটুক চলতে থাকায় প্রায়ই ছোটখাট দুর্ঘটনাও ঘটছে। সমস্যার সমাধানে কৃষ্ণনগর পুরসভা উদ্যোগী হলেও পরিস্থিতির বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয়নি বলেই অভিযোগ শহরের বাসিন্দাদের।

বছর খানেক আগেও এই শহরে টুকটুকের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। কিন্তু শহরের বেকার যুবকেরা টুকটুক চালাতে শুরু করায় দ্রুত এর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। টুকটুক চালকদের দাবি, এই মুহূর্তে শহরের রাস্তায় প্রায় ১২০০ থেকে ১৩০০ টুকটুক চলছে। তার মধ্যে পুরসভার লাইসেন্সপ্রাপ্ত টুকটুকের সংখ্যা মাত্র ৭০০। এ ছাড়াও শহরের বিভিন্ন স্ট্যান্ড থেকে কয়েকশো টুকটুক চলছে। আর এই অতিরিক্ত টুকটুকের চাপে রীতিমতো অতিষ্ঠ শহরের মানুষ।

অথচ প্রথম যখন এই শহরে টুকটুক চলতে শুরু করে তখন যথেষ্ট খুশি হয়েছিলেন কৃষ্ণনাগরিকেরা। স্থানীয় বসিন্দা সুদীপ সরকার বলছেন, ‘‘খুশি তো হওয়ারই কথা। কারণ, টুকটুকে শহরের যে কোনও প্রান্তে যেতে গেলে রিকশার থেকে ভাড়া অনেক কম লাগে। কম সময়ে রিকশার থেকে অনেক আরামে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া যায়। তবে এই মুহূর্তে শহরের যা অবস্থা তাতে টুকটুকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে শহরের যানজটের সমস্যা আরও বাড়বে।’’

একসময় শহরের রিকশা চালকদের বিরুদ্ধে ভাড়া বেশি নেওয়া, যাত্রী নিতে অস্বীকার করার অভিযোগ উঠত। এখন সেই একই রকম অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে টুকটুক চালকদের একাংশের বিরুদ্ধেও। প্রশাসন সূত্রে খবর, শহরের বাইরে থেকে আসা টুকটুক চালকদের অনেকেই ট্রাফিক আইন মানেন না। আর সেই কারণেই যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনাও ঘটছে। এই সব সমস্যার কথা মাথায় রেখে কৃষ্ণনগর পুরসভাও বেশ কিছু পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে।

স্থানীয় পুরপ্রধান তৃণমূলের অসীম সাহা বলেন, ‘‘নানা ভাবে চেষ্টা টুকটুকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা সিদ্ধান্তও নিয়েছি, সাতশোর বেশি টুকটুক চালককে লাইসেন্স দেওয়া হবে না। লাইসেন্সবিহীন টুকটুক চালকদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। নিয়মিত অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করায় এখন দিনের বেলায় লাইসেন্সবিহীন টুকটুক তেমন ভাবে রাস্তায় বের হচ্ছে না। এ বার রাতেও অভিযান চালানো হবে।’’

সমস্যার কথা মেনে নিয়ে কৃষ্ণনগর টোটো গাড়ি ড্রাইভার ইউনিয়নের সম্পাদক তপন কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমরাও চাইছি যে, লাইসেন্সবিহীন টুকটুক চলাচলের উপরে নিয়ন্ত্রণ থাকুক। টুকটুক চালকদের প্রশিক্ষণের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোনও চালকের বিরুদ্ধে যদি বেশি ভাড়া নেওয়া বা যাত্রী নিতে অস্বীকার করার অভিযোগ ওঠে তা হলে সেই চালককে তিন দিন সাসপেন্ড করা হবে। প্রয়োজনে বহিষ্কারও করা হবে।’’

Tuk Tuk Krishnanagar Tapan Kundu auto driver
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy