কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের গৌরবময় ১৭৫ বছরে যুক্ত হল আরও একটি পালক। ২০২১ সালে জেলার সেরা স্কুলের শিরোপা পেল নদিয়ার অন্যতম প্রাচীন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
জেলার ভাল স্কুলের তালিকার উপর দিকে থাকা কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৪৬ সালে। প্রখ্যাত ব্যারিস্টার মনমোহন ঘোষের প্রাসাদোপম বসতবাড়িতে শুরু হওয়া স্কুলটি দীর্ঘ সময় ধরে ক্রমশ জেলার শিক্ষা মানচিত্রে নিজের অবস্থান উজ্জ্বলতর করেছে। তারই স্বীকৃতি মিলল এই পুরস্কার প্রাপ্তির মধ্যে দিয়ে। জানা গিয়েছে, এই বছরে রাজ্যের মোট ১৩টি স্কুলকে এই সম্মানের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে নদিয়া থেকে রয়েছে কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল।
অতিমারির কালে যখন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলিত ধরনধারণ আমূল বদলে গিয়েছে, শ’য়ে শ’য়ে পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ে গমগম করা স্কুলের চিরাচরিত ছবি অদৃশ্য হয়েছে গত প্রায় দু বছর ধরে, তখন কীসের নিরিখে সেরা স্কুলের তকমা দেওয়া হচ্ছে?
জবাবে কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “অস্বাভাবিক সময়েও স্বাভাবিক সময়ের মতো পঠনপাঠন থেকে শুরু করে স্কুলের যাবতীয় কাজ যথাযথ ভাবে করতে পারার স্বীকৃতি হিসেবে এই সম্মানকে দেখছি আমরা। স্কুলের প্রাক্ প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ-মাধ্যমিকের পড়ুয়া, মাস্টারমশাই এবং শিক্ষাকর্মীদের আন্তরিক চেষ্টা এবং কঠোর পরিশ্রমে সম্ভব হয়েছে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা লাভ।’’
তিনি জানাচ্ছেন, ধারাবাহিক ভাবে পড়াশোনা এবং অন্যান্য কাজে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কারণে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার স্কুলটিকে সম্মানিত করা হল।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, প্রধানত স্কুল বন্ধ থাকলেও যে ভাবে কলেজিয়েটের প্রাক্ প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি দিন নিয়ম করে অনলাইনে ক্লাস, পরীক্ষা, সেমিনার, ওয়েবিনারের মাধ্যমে পাঠক্রম চালু রাখা হয়েছিল, সেটা এ বারের শ্রেষ্ঠত্ব বিচারে বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। নদিয়া জেলার এই স্কুলের পড়াশোনার মান চিরকালই ভাল। অসংখ্য কৃতিছাত্র ছড়িয়ে আছেন দেশ এবং বিদেশে। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম স্থান অধিকারের গৌরব অর্জন করেছেন এই পড়ুয়ারা। সেই সঙ্গে পরিকাঠামো থেকে পরিবেশ, সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রশ্নে কলেজিয়েট চিরকালই এগিয়ে বলে তাঁর দাবি।
মনোরঞ্জন জানান, ২০২০ মার্চে লকডাউন ঘোষণা হয়। মে মাসের মাথায় শুরু হয়ে যায় ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে অনলাইন ক্লাস। বছরের শেষ দিকে শুরু হয়ে যায় বাকি সব ক্লাস। পাশাপাশি, চলতে থাকে অতিমারি কালে সামাজিক কাজ। স্কুল এবং প্রাক্তন ছাত্রদের উদ্যোগে লম্বা সময় ধরে চলা কমিউনিটি কিচেন করোনা কালে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। স্কুলের ল্যাবে স্যানিটাইজ়ার তৈরি করে বিতরণ করা হয়েছে। আবার, পাশাপাশি গড়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় সাহায্য পুষ্ট বহুমূল্য ল্যাবরেটরি। যেখানে রোবোটিক্স থেকে অ্যানিমেশন সবই শিখতে পারবে পড়ুয়ারা। অন্য দিকে, জেলায় দু’জন শিক্ষক শিক্ষারত্ন পুরস্কার পাচ্ছেন এই বছর। এক জন চাকদহ রামলাল অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষক রিপন পাল। অন্য জন জানকিনগর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেন। নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy