Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রান্নার গ্যাসে গাড়ি ছুটছে সস্তায়

গাড়ির চালকেরাই বলছেন, রান্নার গ্যাসে গাড়ি চালানোর খরচ পেট্রোলে চালানোর খরচের প্রায় অর্ধেক। তাই স্থানীয় গ্যারাজ থেকে গ্যাসে গাড়ি চালানোর উপযোগী ব্যবস্থা করিয়ে নিচ্ছেন অনেকে। তার পর তাতে ভরা হচ্ছে রান্নার গ্যাস।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৫৬
Share: Save:

গেরস্থের ঘরে চুলো জ্বালাতে ভর্তুকিতে রান্নার গ্যাস দেয় সরকার। অথচ তা দিয়ে গাড়ি চালানো হচ্ছে। ব্যবহার করা হচ্ছে হোটেল-রেস্তোরাঁতেও।

গাড়ির চালকেরাই বলছেন, রান্নার গ্যাসে গাড়ি চালানোর খরচ পেট্রোলে চালানোর খরচের প্রায় অর্ধেক। তাই স্থানীয় গ্যারাজ থেকে গ্যাসে গাড়ি চালানোর উপযোগী ব্যবস্থা করিয়ে নিচ্ছেন অনেকে। তার পর তাতে ভরা হচ্ছে রান্নার গ্যাস।

নদিয়ার এক গাড়ি চালক জানান, ১৪ কেজি রান্নার গ্যাসে ছোট গাড়ি প্রায় ৩০০ কিলোমিটার চলে। যা কিনতে খরচ পড়ে বড়জোড় সাড়ে সাতশো টাকা। কিন্তু পেট্রোলে ৩০০ কিলোমিটার যেতে অন্তত ১৫০০ টাকার পেট্রোল লাগে। তাই অনেক ছোট গাড়ির চালক ওই রাস্তা নিচ্ছেন।

চাইলেও কিন্তু বৈধ গ্যাসে গাড়ি চালানোর কোনও উপায় বস্তুত নেই। কল্যাণীতে গাড়িতে গ্যাস ভরার পাম্প থাকলেও মুর্শিদাবাদে তেমন কোনও পাম্প নেই। চালকেরা অবৈধ ভাবেই রান্নার গ্যাস ব্যবহার করে গাড়ি চালাচ্ছেন। প্রশ্ন হল, গাড়ির ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ দেওয়ার সময় পরিবহণ দফতরের কর্তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয় না কেন?

পরিবহণ দফতরের বক্তব্য, ব্যক্তিগত গাড়ি ১৫ বছর অন্তর ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ নিতে আসে। বাণিজ্যিক গাড়িকে এক বছর অন্তর নিতে হয়। ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ নিতে আসার সময়ে গাড়ি থেকে গ্যাস সংযোগের বন্দোবস্ত খুলে ফেলা হয়।

কী ভাবে মিলছে রান্নার গ্যাস? ডোমকলের এক গাড়ি চালক জানান, গ্রামাঞ্চলে এলপিজি গ্রাহকদের কাছ থেকে তাঁরা রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার সংগ্রহ করি। ব্যাঙ্কে ভর্তুকির টাকা ঢুকলেই গ্রাহকেরা খুশি। কোথাও কোথাও ৫০-১০০ টাকা বেশি দিতে হয়, এই পর্যন্ত।

শুধু গাড়ি তো নয়, গৃহস্থের রান্নার গ্যাসকে বাণিজ্যিক কাজেও লাগানো হচ্ছে। চায়ের দোকান থেকে হোটেল-রেস্তোরাঁ, বহু জায়গাতেই চলছে এই কাণ্ড। বহরমপুরে রান্নার গ্যাসের বড় ডিস্ট্রিবিউটর মুর্শিদাবাদ হোলসেল কনজিউমারস কো-অপারেটিভ সোসাইটির গ্রাহক প্রায় ৩৫ হাজার। সংস্থার চেয়ারম্যান সুকুমার অধিকারী বলেন, “গাড়ি এবং অন্য আরও কিছু জায়গায় গৃহস্থের রান্নার গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে বলে আমরা শুনেছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিক পুলিশ-প্রশাসন, এটাই আমাদের আর্জি।” নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়ার দাবি, “পুলিশ নিয়মিত তল্লাশি চালায়। রান্নার গ্যাসে গাড়ি চাচালে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।” মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারও দাবি, “রুটিন তল্লাশি করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সেই তল্লাশি আরও বাড়ানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE