Advertisement
E-Paper

সরকারি নিয়ম তোয়াক্কা না করেই গ্রামে দত্তক চলে নিজ-নিয়মে!

ঞ্চায়েত থেকে সমাজকল্যাণ দফতর ও গ্রামাঞ্চলে কাজ করা একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরাই জানান, দত্তকের সরকারি নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না-করে প্রত্যন্ত গাঁ-গঞ্জে মুখের কথায় বা দুই পরিবারের মধ্যে সমঝোতায় এক জনের সন্তানকে অন্যের কাছে প্রতিপালনের জন্য দেওয়ার ঘটনা হামেশাই ঘটছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৮ ০১:৪৫

দিন কয়েক আগের কথা। ধুলিয়ান থেকে রঘুনাথগঞ্জে এক আত্মীয়ার বাড়ি এসেছিলেন এক আসন্নপ্রসবা। তাঁর চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে। স্বামী তেমন কোনও কাজ করেন না। বাড়িতে চরম অভাব। যে আত্মীয়া আশ্রয় দিয়েছিলেন তিনি নিঃসন্তান। তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছিল, সন্তান জন্মানোর পর শিশুকে ওই সম্পন্ন আত্মীয়ার কাছেই দিয়ে দেবেন মহিলা।

রাজনগর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসবের পর কোনও ভাবে সদ্যোজাতকে ‘দত্তক’ দেওয়ার কথা চাউর হয়ে যায়। শোরগোল পড়ে যায়। কারণ, আইনত এই ভাবে এখন শিশু দত্তক দেওয়া যায় না। শেষপর্যন্ত পুলিশ ডাকতে হয়। ওই পরিবারকে বুঝিয়ে নিরস্ত করা হয়। পঞ্চায়েত থেকে সমাজকল্যাণ দফতর ও গ্রামাঞ্চলে কাজ করা একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরাই জানান, দত্তকের সরকারি নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না-করে প্রত্যন্ত গাঁ-গঞ্জে মুখের কথায় বা দুই পরিবারের মধ্যে সমঝোতায় এক জনের সন্তানকে অন্যের কাছে প্রতিপালনের জন্য দেওয়ার ঘটনা হামেশাই ঘটছে। তার উপর কারও নজরদারি নেই। এমনকি, দত্তকের যে কোনও সরকারি নিয়ম রয়েছে সেই কথাই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ জানেন না। অভিযোগ, সেই সচেতনতা বিস্তারের চেষ্টাও সরকারের তরফে নেই। সেন্ট্রাল অ্যাডপশন রিসোর্স অথরিটি’ বা সংক্ষেপে ‘কারা’র অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য জয়দেব মজুমদারের কথায়, ‘‘সরকারি নিয়মের কথা গ্রামাঞ্চলে ভাল ভাবে প্রচার করা হলেও যে মানুষ সেটা মানবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, নতুন নিয়মটি পুরোটাই ‘অনলাইন’ ব্যবস্থা। গ্রামাঞ্চলে মানুষ সে ব্যবস্থায় তেমন সড়গড় নয় এখনও।’’

সমাজকল্যাণ দফতরের একাধিক কর্তাও মানছেন, গ্রামের মানুষজনের ক্ষেত্রে এই সচেতনতার প্রচারও সরকারি ভাবে নেই। ফলে মৌখিক চুক্তিতে দত্তক নেওয়ার চালু রেওয়াজে ভাটা পড়েনি এখনও চলছে।

ধুলিয়ানের মহিলা ধরা পড়ে গেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে কেউ ধরা পড়েন না। নদিয়া জেলার এক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বেশ কয়েক বছর আগে কাজ করতেন এক চিকিৎসায়। তিনি গল্প করছিলেন, ওই হাসপাতালে একটি পরিত্যক্ত শিশুকে ভর্তি করা হয়েছিল। গ্রামের এক প্রভাবশালী নিঃসন্তান দম্পতি সশস্ত্র বাহিনী সঙ্গে নিয়ে এসে সেই শিশুকে হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। কেউ কিছু করতে পারেননি। তিনি গোটা ঘটনাটাই স্বাস্থ্যভবনে জানিয়েছিলেন। তার পর সব ধামাচাপা পড়ে।

তবে নদিয়ার ঘূর্ণীতে ঘটেছিল অন্য ঘটনা। মায়ের অনুপস্থিতিতে সম্পন্ন এক পরিবারে সদ্যোজাতকে দত্তক দেওয়া সত্ত্বেওে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

(চলবে)

Adoption Illegal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy