জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে নাজেহাল জিয়াগঞ্জবাসী। বৃহস্পতিবারই ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লি হঠাৎপাড়া কলোনির একটি খাস জমিকে নিজেদের বলে দাবি করে জমি মাফিয়ারা। ওই মাফিয়ারা তৃণমূলের ‘পার্টি অফিসে’ বসে রাজ চালায়। ওই দিন এলাকার মানুষ কার্যালয়ে তালা ঝোলায়। রাতে আবার ওই কার্যালয়ে ঢোকে মাফিয়ারা।
বৃহস্পতিবারের ঘটনা আসলে হিমশৈল্যের চূড়া। জিয়াগঞ্জ পুর এলাকায় মাফিয়া রাজের বাড়বাড়ন্তে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লালবাগ) অংশুমান সাহার সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘বিষয়গুলি দেখছি।’’
গত বিধানসভা ভোটের আগে এলাকার দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েক জন দাগী আসামি তৃণমূল দলে যোগ দেয়। তারা মূলত পুরসভার ৩, ৫ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। কিন্তু শাসকদলে যোগ দেওয়ার পরেই ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে পার্টি অফিস খুলে গোটা জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা এলাকা জুড়ে জমি ও বাড়ি কেনাবেচার প্রধান কার্যালয় হিসেবে গড়ে তুলেছে তারা। তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতার কথায়, ‘‘ওই দুষ্কৃতীরা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। জমি কেনাবেচার লাভের মোটা অঙ্কের টাকা এক শ্রেণির নেতার পকেটে ঢুকছে বলেই তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না।’’
এলাকাবাসীর কথায়, জমি-মাফিয়ারা এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। তারা পুরসভা জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। এমনকী ওই জমি-মাফিয়াদের বাদ দিয়ে জমি কেনাবেচা করা থেকে বাড়িও বিক্রি করতে পারছেন না কেউ। জমি বা বাড়ি বিক্রি করতে হলে তাদেরকেই করতে হবে। তারা কম দামে কিনে চড়া দামে তা বিক্রি করে মোটা অঙ্কের মুনাফা করছে। ওই জমি-মাফিয়াদের নজরে রয়েছে—৫ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীপৎ সিংহ কলেজের কাছে ভট্টপাড়া স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএ) মাঠ, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লির হঠাৎপাড়া মাঠ এবং ভেলাডাঙা ঘোষপাড়ার স্পোর্টিং মাঠ। জিয়াগঞ্জের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শীতল হরিজনের ঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে তারা। কারণ, তিনি তোলা দিতে পারেননি। জিয়াগঞ্জ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস সরকার জানান, প্রতারিতদের কোর্টে যাওয়া উচিত।