Advertisement
E-Paper

সংস্কৃতে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রে চমকিত আমন্ত্রিতরা

সুমন্ত প্রামাণিক সংস্কৃতে পিএইচডি করেছেন তিরুপতি থেকে। এখন বেঙ্গালুরুর একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজেক্ট ফেলো হিসেবে কাজ করেন।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৪২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পাত্র ‘আয়ুষ্মান সুমন্ত প্রামাণিক’, পাত্রী ‘আয়ুষ্মতী সুমি দাসা’। রবিবার মুর্শিদাবাদের পঞ্চবটী গ্রামে চলছে এই বিয়ের আয়োজন। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেছে বিয়ের কার্ডও।কিন্তু দেবনাগরী অক্ষরে ছাপা সে কার্ড খুলেই চমকিত খাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। উচ্চারণে দাঁত ভাঙার জোগাড় নিমন্ত্রিতদের।

প্রতিবেশী পবন দাস বলছেন, “বাংলায় বিয়ের নিমন্ত্রণ কার্ড দেখতেই অভ্যস্ত আমরা। সংস্কৃত ভাষার কার্ড পেয়ে কিছুই বুঝতে পারিনি।” একই অবস্থা নিতাই প্রামাণিকেরও। প্রতিবেশীরা তাঁর বিয়ের কার্ড পড়তে হোঁচট খাচ্ছেন দেখে ফের বাংলায় ছাপাতে হয়েছে সে বিয়ের কার্ড। অস্বস্তি কেটেছে পবনবাবু ও নিতাইবাবুদের মতো অন্য প্রতিবেশীদের।

সুমন্ত প্রামাণিক সংস্কৃতে পিএইচডি করেছেন তিরুপতি থেকে। এখন বেঙ্গালুরুর একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজেক্ট ফেলো হিসেবে কাজ করেন। সুমন্তের ভাই সুকান্ত সংস্কৃতে পিএইচডি করে মহারাষ্ট্রে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতের সহকারী অধ্যাপক। বাড়িতে এক সঙ্গে হলে সংস্কৃতেই কথা বলেন তাঁরা। তবে বাবা ভরত প্রামাণিক ও মা বেশি দূর পড়াশোনা করেননি। সংস্কৃতের ধারে কাছে নেই তাঁরা। তবে ছেলেদের কথাবার্তা কিছুটা হলেও বোঝেন এখন।বাবা ভরত বলছেন, “সংস্কৃত ভাষা সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না। কিন্তু ছেলেরা সংস্কৃতে কথাবার্তা বলে দেখে এখন বুঝতে পারি চশমাকে বলে উপনেত্রম, কলমকে লেখনি, ধূপকাঠিকে গন্ধবর্তিকা, মোবাইলকে দূরবাণী, নুনকে লবণম্‌, চিনিকে শর্করা, খুন্তিকে দর্বী। বুঝতে এখন আর অসুবিধে হয় না।”মা বলছেন, “ছেলের সংস্কৃত অন্ত প্রাণ। কলেজে পড়াশোনা করেছে তাই নয়, তারা সে ভাষায় কথা বলতে ও লিখতেও জানে। তাই ছেলের ইচ্ছে ছিল এক জন সংস্কৃত বলতে কইতে পারা মেয়েকেই বিয়ে করবে সে। তাই খুঁজে পেতে নিমতিতায় সুমির পরিবারের খোঁজ পাই। আর দেরি করিনি। বৌমাও সংস্কৃত নিয়ে এমএ পড়েছে তাই নয়, সংস্কৃত বলতে ও লিখতেও পারে। তাই সমস্যা হয়নি।”

তা বলে দেবনাগরী অক্ষরে বিয়ের নেমন্তন্ন?

সুমন্ত বলছেন, “সংস্কৃত আসলে কোনও অক্ষর নয়। দেবনাগরী অক্ষর। এই অক্ষরই চালু রয়েছে হিন্দি, মরাঠি, নেপালী ও সংস্কৃতে। কেবল উচ্চারণে পার্থক্য। ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সংস্কৃত। স্কুলে, কলেজে ইংরেজি পড়ানো হয় ইংরেজিতে, হিন্দি ভাষার ব্যবহার হয় হিন্দি ক্লাসে, তা হলে সংস্কৃত ভাষায় সংস্কৃত পড়াতে অসুবিধে কোথা ? তাই সংস্কৃতে কার্ড করা। শতাধিক ছাত্রছাত্রী রয়েছে আমার এ জেলায়। তাদেরকে উৎসাহ দিতেই এই উদ্যোগ।”রঘুনাথগঞ্জের সংস্কৃত শিক্ষক অপর্ণাপ্রসাদ চক্রবর্তী বলছেন, “আমার ছেলের পৈতেতে বাংলা অক্ষরে সংস্কৃত ভাষায় কার্ডটা ছাপিয়েছিলাম। সমস্যা হয়নি। তবে সমস্যা হতে পারে আশঙ্কায় বাড়ি বাড়ি কার্ড দেওয়ার সময় মুখেও বলে আসতে হয়েছিল কথা।’’

Wedding Ceremony Wedding Card Sanskrit texts
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy