অসহায় বৃদ্ধ। নিজস্ব চিত্র
৮০ বছরের এক বৃদ্ধকে মারধর করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল শান্তিপুরে। স্ত্রী, ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে রানাঘাটের মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই বৃদ্ধ।
শান্তিপুর থানার আরবান্দি ১ পঞ্চায়েতের দেনুই গ্রামের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধের নাম দুলাল বিশ্বাস। তাঁর এক ছেলে এবং তিন মেয়ে রয়েছে। মেয়েরা সকলেই বিবাহিতা। পেশায় কৃষক দুলালের জমিজমা রয়েছে। এর আগে নিজের জমিজমার অংশ তিনি ছেলে, নাতি-সহ পরিবারের অন্যদের মধ্যে ভাগ করে দেন। বাড়ি ও দশ শতক জমি বাদে। বৃদ্ধের অভিযোগ, এরপর থেকেই বাড়িতে তাঁর উপরে নির্যাতন শুরু হয়। স্ত্রী সবিতা বিশ্বাস, ছেলে উত্তম বিশ্বাস তাঁকে নানা ভাবে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন শুরু করে।
বৃদ্ধ জানান, সেই কারণে গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে তিনি বাড়িতে থাকেন না। কখনও কৃষ্ণনগরে, কখনও বাদকুল্লায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে তিনি থাকতে শুরু করেন। তবে বছর দেড়েক ধরে তিনি তাঁর মেজ মেয়ে শোভা সিকদারের বাড়িতে রয়েছেন। তাঁর বাড়ির একটি অংশে নিজেই ঘর তৈরি করে বাস করছেন। মহকুমা শাসকের কাছে করা লিখিত অভিযোগে বৃদ্ধ জানিয়েছেন, দিন কয়েক আগে তিনি বাড়িতে যান। সেই সময়ে তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে গলায় মাফলার পেঁচিয়ে তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। এর পরে তিনি ফের মেয়ের বাড়িতে ফিরে আসেন। তিনি বলেন, “আমার অনেক জমিজমা রয়েছে। সেগুলোর জন্যই আমার স্ত্রী ও ছেলে আমার উপর অত্যাচার করে। মেরে ফেলার চেষ্টাও করে।’’
মারধর করে বৃদ্ধকে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাঁর স্ত্রী ও ছেলে। বৃদ্ধের স্ত্রী সবিতা বলেন, “ওঁকে কেউ মারেনি। উনিই বাড়িতে এসে আমাকে মারধর করেন। উনি যা বলবেন সেটাই সকলকে শুনতে হবে এবং মানতে হবে। না হলেই রাগ।’’ তিনি জানান, এই কারণেই বৃদ্ধ বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। তাঁকে কেউ বার করে দেয়নি বলে দাবি বৃদ্ধার। বৃদ্ধের মেজ জামাই অমরেন্দ্র সিকদার বলেন, “দেড় বছর ধরে শ্বশুরমশাই আমাদের বাড়িতেই আছেন। হয়তো বাড়িতে অশান্তি আছে।”
এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বাড়িতে অশান্তি হয়তো আছে। কিন্তু মারধরের ঘটনা তাদের জানা নেই। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মমতা রাজোয়ার বলেন, “দুলালবাবুর সঙ্গে বাড়িতে অন্যদের বনিবনা হয় না। কিন্তু মারধর করে বার করে দেওয়ার কথা আমাদের কেউ জানায়নি। কী নিয়ে তাদের পারিবারিক ঝামেলা সেটাও জানা নেই।” রানাঘাটের মহকুমা শাসক মনীশ বর্মা বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। শান্তিপুর থানাকে বলা হয়েছে বিষয়টি দেখতে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy