আবার ‘কাঠগড়ায়’ সিভিক ভলান্টিয়ার। ফুলচুরির অপবাদে দিয়ে এক প্রৌঢ়াকে কান ধরিয়ে ওঠবস করানোর অভিযোগ উঠল এক সিভিকের বিরুদ্ধে। প্রৌঢ়ার কর্মস্থলে গিয়ে হেনস্থা করা হয় এবং সেই অপমানে তিনি আত্মঘাতী হন বলে অভিযোগ। শনিবার এই ঘটনায় শোরগোল নদিয়ার শান্তিপুর থানা এলাকায়। ঘটনার তদন্তে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতার নাম সরস্বতী দে। গত শুক্রবার ভোরে শান্তিপুরের নৃসিংহপুর এলাকার বাসিন্দা মিলন করাতি নামে এক প্রতিবেশীর বাড়ির বাগান থেকে ফুল তুলছিলেন সরস্বতী। মিলন পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। সরস্বতী একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী। পরিবারের দাবি, শুক্রবার ভোরে সিভিকের বাগানে ফুল তোলার সময়ে ওই বাড়ির লোকজন সরস্বতীকে গালমন্দ করেন। কিন্তু এখানেই থামেনি বিষয়টি। প্রৌঢ়াকে কান ধরিয়ে ওঠবস করান সিভিক ভলান্টিয়ার। মনখারাপ করে বাড়ি ফেরেন প্রৌঢ়া। তবে কিছু ক্ষণ পরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কাজেও চলে যান সরস্বতী। কিন্তু সেখানে গিয়ে সিভিকের পরিবারের লোকজন তাঁকে আবার একপ্রস্ত অপমান করেন বলে অভিযোগ। তার পরেই গলায় দড়ি দিয়ে সরস্বতী আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি পরিবারের।
শনিবার সকালে বাড়ির পাশে গোয়ালঘর থেকে প্রৌঢ়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পরিবার। সরস্বতীকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শান্তিপুর হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পর মৃতার পরিবারের তরফে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ চার জনের নামে শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাদের দাবি, সামান্য ফুল তোলার জন্য যে ভাবে চুরির অপবাদ দিয়ে প্রৌঢ়াকে অপমান করা হয়েছে, সেটা তিনি সহ্য করতে পারেননি। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। যদিও মিলনের পরিবারের তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। রানাঘাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সবিতা গোতওয়াল বলেন, ‘‘মানসিক হেনস্থা সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। মৃতার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে।’’
আরও পড়ুন:
গত মে মাসে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার এক স্কুলপড়ুয়ার আত্মহত্যা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্যে। সে বারও আঙুল ওঠে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কেশাপাট পঞ্চায়েতের গোঁসাইবেড় গ্রামের বাসিন্দা শুভঙ্করের দোকানে গিয়েছিল বছর এগারোর কৃষ্ণেন্দু দাস। দোকানের সামনে পড়ে থাকা একটি চিপ্সের প্যাকেট সে নিয়ে নিয়েছে, এই অভিযোগে ছেলেটিকে কান ধরিয়ে ওঠবস করানো হয়। পুলিশের ভয় দেখানো হয়। ছেলেকে শাসন করার জন্য মা তাকে মারধর করেন। তার পরেই কীটনাশক খেয়ে ছেলেটি আত্মঘাতী হয় বলে দাবি। ওই মর্মে একটি সুইসাইড নোটও মিলেছিল। তার পর একই ধরনের ঘটনা ঘটল নদিয়ায়।