Advertisement
১৭ মে ২০২৪

জলঙ্গিতে কোন্দলে খুন, দাবি দলেরই

নিহতের মা ফিরদৌস বিবি খোলাখুলি বলছেন, ‘‘আমার ছেলে তৃণমূল করে কিন্তু দলেরই অন্য একটি গোষ্ঠী ওকে সহ্য করতে পারছিল না। তারাই ওকে মারল।’’

অবরুদ্ধ পথ। রবিবার ফরাক্কায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। নিজস্ব চিত্র

অবরুদ্ধ পথ। রবিবার ফরাক্কায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলঙ্গি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:১৫
Share: Save:

ব্রিগেডের সমাবেশে দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করতে দুয়ারে দুয়ারে প্রচার করছিলেন তিনি। বোমা ছুটে এসেছিল তখনই। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পথে মারা যান আমিদুল শেখ (২১)। তবে, জলঙ্গির ঘোষপাড়া গ্রামে ওই ঘটনার পরে অভিযোগের আঙুল উঠেছে দলেরই একাংশের দিকে। নিহতের মা ফিরদৌস বিবি খোলাখুলি বলছেন, ‘‘আমার ছেলে তৃণমূল করে কিন্তু দলেরই অন্য একটি গোষ্ঠী ওকে সহ্য করতে পারছিল না। তারাই ওকে মারল।’’ আমিদুলের সঙ্গী, ফিরদৌস এর জন্য দায়ী করেছেন ডোমকলের পুরপ্রধান সৌমিক হোসেনকে। ফিরদৌস বলেন, ‘‘আমার ছেলে ছিল জলঙ্গি ব্লক সভাপতি তহিরুদ্দিনের লোক। ওদের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী সৌমিক হোসেন। ওর মদত না থাকলে এ ভাবে খুন হয়!’’

সৌমিক যা শুনে বলছেন, ‘‘ওটা জলঙ্গি এলাকার ঘটনা। এমন কোনও খুনের ঘটনা আমার জানাই নেই। যে যাই বলুক, কোনও মন্তব্য করব না।’’

জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলছেন, ‘‘যিনি বোমার আঘাতে মারা গিয়েছেন তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় আমরা জানি না। ওই ঘটনায় এখনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে মামলা রুজু করে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও এসডিপিও-র নেতৃত্বে ওই এলাকায় পুলিশি অভিযান ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।’’ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা যে দলের হোক না কেন, কেউ ছাড় পাবে না। পুলিশকে বলেছি, দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে।’’

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে জলঙ্গিতে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে মুখ পুড়েছিল জেলা নেতাদের। দলীয় নেতারা তা মেনেও নিচ্ছেন। তবে, সৌমিক কিছু বলতে না চাইলেও, তাঁর বিরুদ্ধে দিন পনেরো আগেও তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী জলঙ্গিতে প্রকাশ্যে মিছিল করেছিল। সেই মিছিল থেকে আওয়াজ তোলা হয়েছিল, ‘জলঙ্গি থেকে সৌমিক হোসেন হাত গোটাও!’ সৌমিক বলেন, ‘‘কে সেই মিছিল করেছিল? কার মদতে মিছিল বের হয়েছিল? তা দেখবে দল।’’

সোমবার সকালে, তৃণমূলের ব্রিগ্রেড সমাবেশের বিষয়ে প্রচার চালাচ্ছিল আমিদুল। এ দিন ওই গ্রামে তা নিয়ে প্রস্তুতি সভা ও মিছিলও হওয়ার কথা ছিল। সেই সভা ও মিছিলের বিষয়ে দলীয় সমর্থকদের বাডি-বাড়ি ঘুরছিলেন তিনি। সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে কয়েকজন দুষ্কৃতী বোমা ছোঁড়ে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। রক্তাক্ত আমিদুলকে সাদিখাঁড়দিয়াড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার পথেই মারা যান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Bomb Blast TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE