Advertisement
১১ মে ২০২৪

যুবকের গলা কেটে খুন বহরমপুরে

মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে আমরা জেনেছি, বাস মালিক সংগঠনের অফিসে নগদ অর্থ মজুত আছে বলে দুষ্কৃতীদের কাছে খবর ছিল।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ১৩:৫৫
Share: Save:

এক যুবকের গলা কাটা লাশ মিলল বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া প্রাঙ্গণ মার্কেট কমপ্লেক্সের তিনতলায়। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম আশিস মাল (২৭)। বাড়ি খড়গ্রাম থানার পারুলিয়া গ্রামে। মার্কেট কমপ্লেক্সের একটি হোটেলে কাজ করতেন তিনি। বুধবার গভীর রাতে তাঁকে খুন করা হয় বলে পুলিশের অনুমান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই রাতে কমপ্লেক্সের তিনতলায় দক্ষিণের বারান্দায় ঘুমিয়েছিলেন আশিস। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃতদেহটি সেখানেই পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ এসে মৃতদেহ নিয়ে যায়। তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে, ওই রাতেই তিনতলায় বাস মালিক সংগঠনের অফিস ঘরের জানালার গ্রিল ও আলমারির তালা ভেঙে কয়েক লক্ষ টাকা লুঠ করা হয়েছে। দোতলায় বহরমপুর হকার্স পুনর্বাসন সমবায় সমিতির অফিস ঘরের তালা ও আলমারি ভেঙেও প্রায় কুড়ি হাজার টাকা লুঠ করা হয়েছে।

মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে আমরা জেনেছি, বাস মালিক সংগঠনের অফিসে নগদ অর্থ মজুত আছে বলে দুষ্কৃতীদের কাছে খবর ছিল। ডাকাতির উদ্দেশ্যেই তারা ওই মার্কেট কমপ্লেক্সের তিনতলার ঘরে হানা দিয়েছিল। সেই সময়ে ওই যুবক দুষ্কৃতীদের কাউকে চিনে ফেলায় বা বাধা দেওয়ায় এই খুন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে মার্কেট কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ীদের মধ্যে। এ দিন তিনতলায় দক্ষিণ দিকের বেশ কয়েকটি দোকান বন্ধ ছিল। বহরমপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল ফিতে দিয়ে ঘিরে রেখেছে, যাতে দুষ্কৃতীদের পায়ের ছাপ নষ্ট হয়ে না যায়। বাস মালিক সংগঠনের অফিসে গ্রিল কাটার যন্ত্র, লোহার রড, বড় ছুরি, রেঞ্জ-সহ বেশ কিছু জিনিস মিলেছে। সেগুলি ওই অবস্থায় রেখে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার জানান, ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর জন্য সিআইডিকে অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁরা রাতের মধ্যেই বহরমপুরে পৌঁছতে পারেন।

বাস মালিক সংগঠন ‘ফেডারেশন অফ বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক তপন অধিকারী জানান, গত ২৮ জুন অফিসের অ্যাকাউন্ট্যান্ট ভেল্লোরে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছেন। ফলে গত কয়েক দিন ধরে টাকাকড়ি তাঁর ঘরের আলমারিতে রাখা হচ্ছিল। তাঁর দাবি, ‘‘বুধবার প্রায় দু’লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা একটি প্যাকেটে ভরে আলমারিতে রেখে গিয়েছিলাম। তার মধ্যে আমার ব্যক্তিগত লক্ষাধিক টাকা ছিল। এ দিন ব্যাঙ্কে তা জমা দেওয়ার কথা।’’ তবে অ্যাকাউন্ট্যান্টের ঘরের তিনটি আলমারি না ভেঙে দুষ্কৃতীরা তাঁর ঘরের আলমারি ভেঙে টাকা বের করেছে। ‘‘ওরা কি ওই আলমারিতে টাকা থাকার কথা আগাম জানত?’’ প্রশ্ন তপনবাবুর। আশিসের ভাই কার্তিক মাল ওই মার্কেট কমপ্লেক্সের নিচের তলায় একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই রাতে আমি মিষ্টির দোকানেই ঘুমিয়েছিলাম। কিছুই টের পাইনি।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আমিই দাদাকে নিয়ে হোটেলে কাজ করানোর জন্য এসেছিলাম। বাড়িতে বাবা-মা, বৌদি, ভাইপো-ভাইঝিদের কাছে এখন কী জবাবদিহি করব!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Youth Murder Berhampur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE