Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধুকে খুনের অভিযোগ

গত শুক্রবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল বছর আঠারোর রাজিবুল শাহ। ইসলামপুর থানার নাজিরপুর গ্রামের ওই যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে রবিবার থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। আত্মীয়দের বাড়িতেও হন্যে হয়ে খোঁজখবর নেওয়া চলছিল। তার ছ’দিনের মাথায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে এক পরিত্যাক্ত সেফটি ট্যাঙ্ক থেকে থেকে উদ্ধার হল তার পচাগলা দেহ।

সুজাউদ্দিন
ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৫ ০২:১১
Share: Save:

গত শুক্রবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল বছর আঠারোর রাজিবুল শাহ। ইসলামপুর থানার নাজিরপুর গ্রামের ওই যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে রবিবার থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। আত্মীয়দের বাড়িতেও হন্যে হয়ে খোঁজখবর নেওয়া চলছিল। তার ছ’দিনের মাথায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে এক পরিত্যাক্ত সেফটি ট্যাঙ্ক থেকে থেকে উদ্ধার হল তার পচাগলা দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, টাকা অথবা প্রণয়ঘটিত কোনও কারণে বন্ধুদের হাতে খুন হয়েছে রাজিবুল।

মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘রবিবার ওই যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে ইসলামপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। বৃহস্পতিবার সেফটি ট্যাঙ্ক থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছে। ময়না তদন্তের আগে মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়।’’ দেহ উদ্ধারের পর থেকেই রাজিবুলের তিন বন্ধুর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তার পরিবার ও স্থানীয়েরা। পুলিশ তদন্তে নেমে ওই তিন বন্ধু মিনারুল শাহ, সোহরব শাহ ও বরুণ দাসের বাড়িতে হানা দেয়। তবে তাঁদের খোঁজ মেলেনি।

দশম শ্রেণি অবধি পড়ে কাকার তেল মিলে কাজ করছিল রাজিবুল। কাজের সূত্রে বন্ধুত্ব হয় গ্রামের মিনারুল শাহর সঙ্গে। পরে প্রতিবেশী সোহরব ও বরুণও জুটে যায় তাঁদের সঙ্গে। পরিবারের লোক এবং এলাকার মানুষের দাবি, চার জনে প্রায়ই এক সঙ্গে আড্ডা দিত। ছুটির দিনে ঘুরতেও যেত। রাজিবুলের মা লতিফা বিবির দাবি, ‘‘মেয়ের বিয়ের জন্য ছেলের অ্যাকাউন্টে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা ছিল। টাকা হাতানোর জন্য বন্ধুরা ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে ছেলেকে।’’

রাজিবুলের দিদি দিলরুবা খাতুন ইসলামপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মাস ছ’য়েক আগে ভাইয়ের বন্ধু মিনারুল কলেজ থেকে ফেরার পথে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তা ফিরিয়ে দেওয়ায় ও আমাদের পরিবারের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দিয়েছিল।’’ গ্রামবাসীর বক্তব্য, রাজিবুল শান্ত স্বভাবের ছেলে। নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁরা ভেবেছিলেন, অভিমান করে কোথাও হয়ত গিয়েছে! এমন ছেলে খুন হয়ে যাওয়ায় বিষ্মিত এলাকাবাসী।

অভিযুক্ত মিনারুলের বাবার অবশ্য দাবি, ‘‘ছেলে খুনের ঘটনায় যুক্ত নয়। সন্দেহ করে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।” অন্য দুই বন্ধু সোহরব ও বরুণের পরিবারেরও একই দাবি। বরুণের স্ত্রী মামন দাসের দাবি, ‘‘স্বামী ওই ধরণের ঘটনায় কখনই জড়িয়ে থাকতে পারে না।” রাজিবুলের বাবা আকবর আলি শাহ বলেন, ‘‘ছেলে, মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে সংসার। মেয়ের বিয়ে দেব বলে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা জোগাড় করেছিলাম। টাকাটা ছেলের অ্যাকাউন্টেই ছিল।” তাঁর দাবি, “ব্যাঙ্কের পাশবই থেকে দেখেছি শুক্রবার দু’দফায় ২০ হাজার টাকা উঠেছে। মনে হয়, টাকার অঙ্ক দেখেই বন্ধুরা ওকে খুন করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE