মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন অধীর। —নিজস্ব চিত্র।
কর্মিসভার গেটের দু’পাশে দু’জনের বিশাল ছবি। কিন্তু সশরীরে একই ফ্রেমে পাওয়া গেল না দু’জনকে। বুধবার কৃষ্ণনগরের কারবালা মাঠের কর্মিসভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এলেও গরহাজির থাকলেন নদিয়ার জেলা সভাপতি শঙ্কর সিংহ। যা দেখে হতাশ হলেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা কংগ্রেসকর্মীরা।
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে রাজিয়া আহমেদের নাম ঘোষণার পরে প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন শঙ্করবাবু। এরপর ‘অধীর-ঘনিষ্ঠ’ প্রার্থী যতগুলি সভা করেছেন, তার একটিতেও দুই নেতাকে একসঙ্গে পাননি কর্মীরা। কালীগঞ্জে অধীর চৌধুরীর সভায় দেখা যায়নি শঙ্করবাবুকে। আবার মঙ্গলবার চাপড়ার কর্মিসভাতে শঙ্করবাবুকে থাকলেও দেখা যায়নি অধীরবাবুকে। তাই বুধবার কৃষ্ণনগরের এই কর্মিসভাতে শঙ্করবাবু উপস্থিত থাকবেন কি না তা নিয়ে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের মধ্যে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। শেষ পর্যন্ত শঙ্করবাবু না আসায় হতাশ কর্মীরা বলেন, ‘‘নেতারা যদি এমন করতে থাকেন, আমরাই বা তাহলে লড়াই দিই কী করে বলুন তো?’’ হতাশ গলায় প্রার্থী রাজিয়াও বলেন, ‘‘আমি নিজে শঙ্করদাকে সভার কথা বলেছিলাম। উনি বলেছিলেন আসবেন। কিন্তু কেন এলেন না বুঝতে পারছি না’।
তবে ভাষণে তো নয়ই, মঞ্চে দীর্ঘ সময় বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বলার সময়ও শঙ্করবাবুর প্রসঙ্গে কোনও কথা বলেননি অধীর। সভা শেষে এই নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘আমি জানি না শঙ্কর সিংহ কেন এলেন না। আর এই বিষয়ে আমার কী বলার থাকতে পারে।’’
তৃণমূলের অন্দরের খবর, কৃষ্ণনগরে যখন দলের কর্মিসভা চলছে তখন শান্তিপুরের ফুলিয়াতে এক নিহত তৃণমূল নেতার বাড়িতে যান শঙ্করবাবু। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ মৃত নেতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটিয়ে চলে আসেন শান্তিপুরে দলীয় কার্যালয়ে। এরপর যান হরিপুরের একটি মেলায়। সেখানে দলের শিবিরে বসে সময় কাটান বেশ কিছুক্ষণ।
কৃষ্ণনগরের কর্মিসভাতে এলেন না কেন? শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘কল্যাণী ও শান্তিপুরে আমার এই কর্মসূচি অনেক আগে থেকে ঠিক করা ছিল। তাই কৃষ্ণনগরের কর্মিসভাতে যেতে পারিনি। তাছাড়া একই কর্মসূচিতে সকলকে যেতে হবে, এমন কথা নেই। এর পিছনে বিতর্ক খোঁজা অর্থহীন।’’
শঙ্কর সম্পর্কে মুখ না খুললেও কর্মীদের ভিড়ে ঠাসা এদিনের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেছেন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন কমিশনকে ধমকাচ্ছেন। আজই এক জনসভায় তিনি নির্বাচনের পরে কমিশনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর বদলা নেওয়া আর দেখে নেওয়া ছাড়া কোনও কাজ নেই। বলছেন ওরা বাচ্চা ছেলে। ওদের কেন সরিয়ে দিল। বিরোধী দলে থাকার সময় দিদির মুখে শুনতাম পুলিশ সিপিএম এর দালাল। কেন পাঁচ জন এসপিকে সরাতে এমন করছেন উনি? আপনি যদি মা মাটি মানুষের নেত্রী হন তাহলে পুলিশের উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে কেন?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy